ঢাকা অফিস: বাংলাদেশকে চা ও দারুচিনি দিয়ে বিনিময়ে আলু নিতে চায় শ্রীলংকা। শুক্রবার ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) ৩৬তম এশিয়া-প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলনের সমাপনি দিনের সেশন শুরুর আগে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে বৈঠকে এ আগ্রহ প্রকাশ করেন শ্রীলংকার কৃষিমন্ত্রী। একই দিনে ফিলিপাইনের কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গেও বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া লাওসের কৃষি প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশের কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। বৈঠকে বাংলাদেশে উন্নতমানের রপ্তানিযোগ্য আনারসের জাত এমডি-২, জি-নাইন কলা, ডেলমন চা এবং মাকাপুনো নারকেল উৎপাদনে সহযোগিতার করা আশ্বাস দেন ফিলিপাইনের কৃষিমন্ত্রী। এ বিষয়ে শিগগিরই দুদেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হবে। কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক জানান, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ফিলিপাইন থেকে এমডি-২ জাতের তিন লাখ আনারসের চারা এনে চাষ শুরু হয়েছে। আরও চার লাখ চারা আনার প্রক্রিয়া চলছে। আগের চেয়ে আরও কম দামে ও সহজ শর্তে এ জাতের আনারসের চারা বাংলাদেশকে দেয়ার কথা জানান ফিলিপাইনের কৃষিমন্ত্রী। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের কৃষি উন্নয়নে যেভাবে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছেন তার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন ফিলিপাইনের কৃষিমন্ত্রী উইলিয়াম ডি. ডার। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের কৃষির উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পলিটিক্যাল উইল অ্যান্ড কমিটমেন্ট খুবই প্রশংসনীয়। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের কৃষি, অর্থনীতি ও মানবসম্পদ এখন শক্ত অবস্থানে রয়েছে।’ এ সময় আবদুর রাজ্জাক বাংলাদেশ থেকে আমের জাত ও ব্রি উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল ব্রিধান-৮৯ নেয়ার জন্য ফিলিপাইনকে আহ্বান জানান এবং দেশটির গোল্ডেন রাইস চাষের অভিজ্ঞতা জানতে চান। ফিলিপাইনের মন্ত্রী জানান, তারা সেদেশে ইতোমধ্যে গোল্ডেন রাইস চাষের অনুমোদন দিয়েছেন। বীজ উৎপাদনের কাজ চলছে। এ বিষয়ে তাদের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের সাথে শেয়ার করবেন ও সহযোগিতা দেবেন বলে জানান। পরে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন শ্রীলংকার কৃষিমন্ত্রী মিথালাওয়ে মাহিনদানার আলুথগামেজ । এসময় বাংলাদেশ থেকে আলু আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেন লংকান কৃষিমন্ত্রী। বাংলাদেশের কৃষিমন্ত্রী শ্রীলংকার নারকেল গবেষণা কেন্দ্রের সঙ্গে পারস্পরিক সহায়তা বাড়ানোর তাগিদ দেন। বাংলাদেশের সাথে কৃষিখাতে সহযোগিতার জন্য শ্রীলংকার দুটি সমঝোতা স্মারক বাস্তবায়নে অ্যাকশন প্ল্যান গ্রহণে সস্মত হন দুই মন্ত্রী। শ্রীলংকার কৃষিমন্ত্রী বাংলাদেশে চা ও দারুচিনি রপ্তানি করে বার্টার পদ্ধতিতে বাংলাদেশের আলু নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে জানান কৃষিমন্ত্রী। পৃথক সময়ে লাওসের কৃষি উপমন্ত্রী থংপাথ ভংমানি সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ড. আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে। এসময় আপৎকালীন চাল সংকট মোকাবিলায় লাওস থেকে আমদানি করার আগ্রহের কথা জানালে সহযোগিতার আশ্বাস দেন থংপাথ ভংমানি। কৃষিখাতে পারস্পরিক সহায়তা বাড়াতে শিগগিরই সমঝোতা স্মারক সই করার বিষয়েও সম্মত হয় দুই দেশ। থংপাথ ভংমানি এসময় বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নের প্রশংসা করেন। ফিলিপাইন, শ্রীলংকা ও লাওসের কৃষিমন্ত্রীদের সাথে বাংলাদেশের কৃষিমন্ত্রীর পৃথক বৈঠকে কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিন তালুকদার উপস্থিত ছিলেন।
