বাংলাদেশ হবে বিশ্ব যোগাযোগের কেন্দ্রবিন্দু: প্রধানমন্ত্রী

0

 ঢাকা অফিস:  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভৌগোলিক অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে সারাবিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগের একটা কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত করতে চায় তার সরকার। সেক্ষেত্রে, কক্সবাজার হবে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ সি-বিচ ও পর্যটনকেন্দ্র এবং অত্যন্ত আধুনিক শহর।রোববার সকালে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিকমানে উন্নীত করার লক্ষ্যে রানওয়ে সমুদ্রে সম্প্রসারণ কাজের উদ্বোধনের সময় এ কথা বলেন তিনি। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কক্সবাজার বিমানবন্দরের সঙ্গে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন।শেখ হাসিনা বলেন, এই বিমানবন্দর সম্প্রসারণ হলে, পাশ্চাত্য থেকে প্রাচ্যে বা প্রাচ্য থেকে পাশ্চাত্যে যত প্লেন যাবে তাদের রিফুয়েলিংয়ের জন্য সব থেকে সুবিধাজনক জায়গা হবে এই কক্সবাজার। কারণ, একেক সময় পৃথিবীর একেকটি জায়গা উঠে আসে। একসময় হংকং তারপর সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক এখন দুবাই। কিন্তু আমি বলতে পারি যে ভবিষ্যতে কক্সবাজারই হবে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। কেননা, খুব স্বল্প সময়ে এখানে বিমান এসে নামতে এবং রিফুয়েলিং করে চলে যেতে পারবে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই রানওয়ে সম্প্রসারণের মাধ্যমে আমি মনে করি, আমরা যে ওয়াদা জনগণের কাছে দিয়েছিলাম সেটা আরো একটা ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।তিনি বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে এই যে জলভাগের ওপর আমরা একটা রানওয়ে নির্মাণ করছি সেটাও দৃষ্টিনন্দন হবে। অনেকে এটাই দেখতে যাবে।জলভাগের ওপর এই রানওয়ে নির্মাণের সাহস নিয়ে কাজ শুরু করতে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। সিভিল অ্যাভিয়েশন অথোরিটি অব বাংলাদেশ (সিএএবি)’র চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন। অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অ্যাভিয়েশন অগ্রগতি সম্পর্কিত কর্মকাণ্ড নিয়ে অনুষ্ঠানে একটি ভিডিও চিত্র পরিবেশিত হয়।১ হাজার ৫৬৮ দশমিক ৮৬ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি ২০২৪ সালের মে মাসে সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও এর আগেই এটি সম্পন্ন করা হবে। নিজস্ব অর্থায়নে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর সরকার প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়।বাংলাদেশ থেকে যেসব আন্তর্জাতিক রুটে বিমান যাচ্ছে তার পাশাপাশি আরো কয়েকটি আন্তর্জাতিক রুট চালুর প্রচেষ্টা চলছে জানিয়ে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিউইয়র্ক, টরেন্টো, সিডনির মতো দূরত্বে চলার মতো আমাদের ড্রিম-লাইনার ও অন্যান্য বিমান আছে। বিশেষ করে আমাদের দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গেও যোগাযোগ বাড়াতে হবে। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হলে আমাদের ব্যবসা বাণিজ্যের সম্প্রসারণ হবে।তিনি বলেন, আমরা শুধু পশ্চিমাদের দিকে মুখ করে থাকবো না। পাশাপাশি, আমরা অন্যান্য যেসব বন্ধুপ্রতিম দেশ আছে, সেখানে আমাদের বিমান যেন ভবিষ্যতে যায় সেই চেষ্টা করবো। সরকার দেশের প্রত্যেকটা বিমানবন্দরের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি, আমাদের আরো বেশি কাজ করা দরকার।প্রধানমন্ত্রী বলেন, সৈয়দপুর বিমানবন্দরকেও তার সরকার উন্নত করতে চাচ্ছে। যাতে এটাকে আঞ্চলিক বিমানবন্দর হিসেবে ভুটান, নেপাল বা ভারতের কয়েকটা রাজ্য ব্যবহার করতে পারে। সেভাবেই এটাকে একটা আঞ্চলিক বিমানবন্দর হিসেবে আমরা উন্নত করতে চাচ্ছি। আর সিলেটে এরই মধ্যেই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করা হয়েছে। মেঘালয়, আসাম বা ভারতের অনেক রাজ্য থেকেও তারা আমাদের এই বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারবে। চট্টগ্রাম বিমানবন্দরও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। সেখানেও ত্রিপুরা থেকে শুরু করে ভারতের অনেক প্রদেশ এটা ব্যবহার করতে পারবে। এভাবেই একটা আন্তর্জাতিক সহযোগিতা তৈরি করার জন্যে বিমানবন্দরগুলোকে উন্নত করার চিন্তা সরকারের রয়েছে।বিমানের কর্মকর্তাদের কর্তব্যনিষ্ঠর সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সততা ও দক্ষতার সঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পরিচালনা করবেন। সিভিল অ্যাভিয়েশন নিরাপত্তা থেকে শুরু করে সবকিছু যেন আন্তর্জাতিকমানের হয় সেটা আপনারা দেখবেন।অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারে বিদেশিদের জন্য একটি পৃথক স্পেশাল জোন গড়ে তোলার পাশাপাশি দেশের উন্নয়নে সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা উল্লেখ করেন। পাশাপাশি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথাও পুনরায় সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।

Share.