ঢাকা অফিস: বর্তমান সরকারকে স্বৈরাচার আখ্যা দিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর হাফিজ। তিনি বলেন, ‘বাঙালি ব্রিটিশদের বিদায় করেছে, পাকিস্তানিদের বিদায় করেছে। আজকে চতুর্দিকে যে নিরবতা, শান্ত পরিস্থিতি; এ রকম থাকবে না। বাঙালি কোনও স্বৈরাচারকে সহ্য করেনি। স্বৈরাচারকে বিদায় করার সময় সমাগত। দেশের জনগণকে আমরা বলবো, আপনারা রাজনৈতিক দলের দিকে তাকিয়ে থাকবেন না। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা এবং আইনের শাসন কায়েম করা প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য।’ শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ‘জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম’ আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। মেজর হাফিজ বলেন, ‘এখন সারাদেশে দুই নম্বরের জয়ধ্বনি চলছে। বিএনপি এখন কয় নম্বর দল হবে সেটা নিজেদের নির্ধারণ করতে হবে। আমাদের প্রিয় নেত্রী দুই বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে বন্দি। আমরা চুপচাপ বসে আছি। কই, রাজপথে তো কোনও প্রতিবাদী বার্তা দেখতে পাইনি।’ তিনি বলেন, ‘আজ বাংলাদেশ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। কিছুদিন আগে খোদ ঢাকা শহরে ভোট ডাকাতি হয়ে গেলো। এখানে এত লোক, কেউ ভোট দিতে পারেননি। সাধারণ জনগণ ভোটকেন্দ্রে যাননি। অর্থনীতি বিপর্যস্ত। ব্যাংকগুলো লুটপাট হয়ে গেছে। সর্বশেষ লুটপাটের ভাগ নিয়েছে খোদ সরকার। অদূর ভবিষ্যতে সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংক দেউলিয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছে। কেন স্বাধীন দেশে এই অবস্থা হলো? এই ভাষার মাসে দাঁড়িয়ে আজ আমরা কি শুধু অশ্রু বিসর্জন করবো? গণতন্ত্র নেই বলে শুধু দুঃখ প্রকাশ করবো? নাগরিক হিসেবে আমাদের কি কিছুই করার নেই?’ এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘আজ উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা কচুরিপানা খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। কচুরিপানায় নাকি প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন আছে। এদিকে, আমরা প্রতিবেশী রাষ্ট্রের আধিপত্যের মুখে পড়েছি।’ বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেন সাধারণ মানুষ। রাজনৈতিক দলগুলো যখন প্রধানমন্ত্রীত্বের স্বপ্নে বিভোর, সাধারণ মানুষ তখন সৈনিকদের নেতৃত্বে রাজপথে নেমেছিল। গ্রাম-গঞ্জে ছড়িয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধের শুভসূচনা করেছিল এবং দেশকে স্বাধীন করেছিল। আবার সময় এসেছে, আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ করার। এই মুক্তিযুদ্ধে জাতীয়তাবাদী শক্তি ও সাধারণ মানুষ অংশ নেবে। বিএনপি এবং অন্য সব বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যদের আহ্বান জানাবো—যদি খালেদা জিয়ার মুক্তি চান, গণতন্ত্রের মুক্তি চান, আপনারা নিজ উদ্যোগে রাজপথে নেমে আসুন।’ আওয়ামী লীগ সরকারকে দুর্বল সরকার মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তারা ইতোমধ্যে বলে দিয়েছে- ব্যাংকসমূহ দেওলিয়া হবে, কচুরিপানা খেতে হবে, দেশের জনগণের আর ভোট দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তারা কৌশলে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে। এই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুজন সম্ভাবনাময় তরুণকে আমরা মাঠে নামিয়েছিলাম। তারা প্রাণপণ চেষ্টা করেছে। কিন্তু এই ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রশাসনের দাপটে জনগণ ভোটকেন্দ্রে আসতে পারেনি।’ মানববন্ধনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের সভাপতি কালাম ফয়েজী, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাঙালি কোনও স্বৈরাচারকে সহ্য করেনি, স্বৈরাচারকে বিদায় করার সময় সমাগত: মেজর হাফিজ
0
Share.