বাবরি মসজিদের বিকল্প জায়গায় আগে নির্মিত হবে হাসপাতাল

0

ডেস্ক রিপোর্ট: ভারতের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের বিকল্প হিসেবে মুসলিমদের যে পাঁচ একর জমি দেয়া হয়েছে, সেখানে আগে একটি হাসপাতাল তৈরি করা হবে। ইন্দো ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে উত্তরপ্রদেশ সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে বিকল্প যে জায়গা দেয়া হয়েছে, সেটি নির্মাণের সব দায়িত্ব বর্তেছে এই ট্রাস্টের ওপরে। নতুন জায়গাটি বাবরি মসজিদ-রাম মন্দির থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে, ধন্নিপুর গ্রামের একটি সরকারি কৃষি ফার্মে। সেখানে এখনও কৃষিকাজ চলছে, একটি দরগাও রয়েছে। নতুন পরিসরে মসজিদ যেমন থাকবে, তেমনই তৈরি হবে হাসপাতাল, যৌথ রান্নাঘর এবং ভারতীয়-ইসলামিক গবেষণা কেন্দ্র। ওই ট্রাস্টের সচিব আতহার হুসেন বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, নতুন এই পরিসরটিকে বাবরি মসজিদ বলা হবে না। এর নাম হবে ইন্দো ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট কমপ্লেক্স। তিনি বলেন, সেখানে একটি মসজিদ থাকবে ঠিকই, কিন্তু হাসপাতাল, যৌথ রান্নাঘর, একটি ইন্দো-ইসলামিক গবেষণাকেন্দ্র এবং একটি সংগ্রহশালাও থাকবে। ভারতীয় সংস্কৃতি এবং ইসলামিক সংস্কৃতির মিলন, ভারতীয় সমাজের ওপরে তার প্রভাব- এসব নিয়েই গবেষণা হবে। মাত্র দুদিন আগেই তারা এই প্রকল্পের স্থপতি হিসেবে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার স্থাপত্য বিভাগের ডিন অধ্যাপক এস এম আখতারকে বেছে নিয়েছেন। আখতার বলেছেন যে, নতুন এই পরিসরটি একেবারেই পুরনো বাবরি মসজিদের মতো দেখতে হবে না। আধুনিক ভবন তৈরি হবে সেখানে। তিনি বলেন, স্থাপত্যবিদ্যায় কোনও কিছুই হুবহু নকল হয় না, সবসময়েই নতুন কিছু সৃষ্টি হয়। যা কিছু পুরনো, তা পুরাতত্ত্বের বিষয় আর আমরা যখন কিছু বানাই, সেটা হয় নতুন সৃষ্টি। আখতার আরও বলেন, তিন গম্বুজওয়ালা যে বাবরি মসজিদের ছবি মানুষের মনে গেঁথে আছে, সেটার মতো কখনই হবে না নতুন জায়গাটি। পুরনো বাবরি মসজিদের নকল যেমন হবে না, তেমনই মানবিকতা, ভারতীয় সংস্কৃতি এবং ইসলামের মূল চিন্তা- তিনটি বিষয়ই একত্রিত হবে নতুন পরিসরের নকশায়। ইন্দো ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের সচিব আতহার বলছিলেন, তারা চাইছেন করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে অযোধ্যা ফৈজাবাদের মানুষকে উন্নত চিকিৎসা সেবা দিতে প্রথমে হাসপাতাল ভবনটি তৈরি করতে। তার কথায়, সবকটি ভবন তৈরির কাজ একই সঙ্গে চলবে, কিন্তু প্রথমেই হাসপাতালটি চালু করার ইচ্ছা আছে। মহামারির সময়ে হাসপাতালে শয্যার অভাবে কীভাবে মানুষ মারা যাচ্ছেন, সবাই দেখছে। অন্তত একটা জেলার মানুষকে তো বিশ্বমানের চিকিৎসা সেবা দেয়া যাবে হাসপাতালটি চালু হয়ে গেলে! ট্রাস্টের সচিব আতহার এবং স্থপতি আখতার দুজনেই বলেছেন যে, নতুন পরিসরটিকে তারা একটি ল্যান্ডমার্ক হিসেবে তৈরি করতে চান, যা ভবিষ্যতের আইকন হয়ে উঠবে। এই পরিসর তৈরির সময়ে দুজনের কেউই যেমন পেছনের দিকে তাকাতে চাইছেন না, তেমনই পুরনো বাবরি মসজিদের জায়গায় যে বিশাল রামমন্দির গড়ে উঠতে চলেছে, তার সঙ্গেও এর তুলনা করতে চাইছেন না।

Share.