ডেস্ক রিপোর্ট: ভারতের বারানসির ঐতিহ্যবাহী জ্ঞানবাপি মসজিদে বৃহৎ জামাত বন্ধের আদেশ দিয়েছিল নিম্ন আদালত। তবে সে আদেশ বাতিল করেছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। আনন্দবাজার জানায়, বারানসির জ্ঞানবাপি মসজিদে মুসলমানদের প্রবেশ ও নামাজ পড়ায় কোনো রকমের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না বলে গতকাল মঙ্গলবার এক আদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এ ছাড়া ওই মসজিদে অজুর জন্য নির্ধারিত পুকুরে ‘শিবলিঙ্গ’ পাওয়ার যে দাবি করা হয়েছে, তার সত্যতা বিচারের জন্য শুধু ওই স্থানের সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু সে জন্য মুসলমানদের মসজিদে প্রবেশ ও নামাজে বাধা দেওয়া যাবে না। সম্প্রতি উত্তর প্রদেশের একটি নিম্ন আদালতের নিকট জ্ঞানবাপি মসজিদের একটি অংশে পূজা করার অনুমতি চান পাঁচ হিন্দু নারী। তাদের দাবি, সেখানে একসময় একটি হিন্দু মন্দির ছিল। পরে মসজিদ প্রাঙ্গণে জরিপ করার নির্দেশ দেন আদালত। জরিপ দল মসজিদের পুকুরে ‘শিবলিঙ্গ’ এবং হিন্দু ধর্মের আরো কিছু চিহ্ন খুঁজে পাওয়ার দাবি করেন। আবেদনকারীদের দাবি, মসজিদের ওজুখানা ও সংলগ্ন এলাকা আসলে শৃঙ্গার গৌরীস্থল। সেখানকার জলাধারের ভেতরে রয়েছে শিবলিঙ্গ। যদিও মসজিদ কমিটি ওই কাঠামোকে ‘পুরোনো ফোয়ারা’ বলে জানিয়েছে। আদালত মসজিদে নিযুক্ত পর্যবেক্ষক দলের সমীক্ষা এবং ভিডিও সংক্রান্ত প্রতিবেদন পেশের পর সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারক রবিকুমার দিবাকর জ্ঞানবাপীর ভেতরের ওজুখানা ও তহখানা বন্ধ করার নির্দেশ দেন। এতে বলা হয়, বারানসির জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনারের পাশাপাশি সিআরপিএফের একজন কমান্ড্যান্ট স্তরের কর্মকর্তাকে মসজিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। কাউকেই প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। কিন্তু ওই রায় ১৯৯১ সালের ‘প্লেসেস অব ওরশিপ অ্যাক্ট’-এর পরিপন্থী হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় মসজিদ কর্তৃপক্ষ। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি পি এস নরসিংহের বেঞ্চে মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে বিচারপতি চন্দ্রচূড় জানতে চান ‘ঠিক কোথায় শিবলিঙ্গ পাওয়া গেছে’? জবাবে উত্তর প্রদেশ সরকারের পক্ষের আইনজীবী তুষার মেহতা বলেন, ‘‘আমরা প্রতিবেদনটি (জরিপ দলের) দেখিনি।’’ এ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আদালতে উপস্থাপনের জন্য বুধবার পর্যন্ত সময় চান ওই আইনজীবী। পরে আদালত আগামী বৃহস্পতিবার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে।