বুধবার, ডিসেম্বর ২৫

বিএনপি এখন খেই হারিয়ে ফেলেছে: তথ্যমন্ত্রী

0

ঢাকা অফিস: তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ আছে বিএনপি বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করেছে। এমনকি তারা নয়া পল্টনের অফিসের ঠিকানা দিয়ে লবিস্ট ফার্মের সাথে চুক্তি করেছে। প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয়কে হত্যা করার উদ্দেশ্যে বিএনপির যুক্তরাষ্ট্র শাখার উদ্যোগে এফবিআই এজেন্ট নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সেই এফবিআই এজেন্টকে পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। তাকে বিচারের মুখোমুখি দাঁড়াতে হয়েছে। তাদের এসমস্ত অপকর্মের ব্যাপারে আমাদের কাছে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ আছে এবং সরকারী যে সমস্ত অফিস থেকে বিভিন্ন দপ্তরের সাহায্যে অর্থগুলো বিদেশে গেল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সেগুলো তদন্ত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শুক্রবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাথে এক মতবিনিময় সভা শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। তিনি আরও বলেন, বিএনপি বিদেশে বিভিন্ন লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করার বিষয়ে শাহরিয়ার আলম পার্লামেন্টে বক্তব্য রাখার পর থেকেই তাদের গাত্র-দাহ শুরু হয়েছে। প্রথমে কয়েকদিন তারা নিশ্চুপ ছিল। নিশ্চুপ থাকারই কথা। কারণ কেউ যখন অপরাধ করে এবং সে অপরাধ যখন প্রকাশ পায় তখন কি বলবে তার খেই হারিয়ে ফেলে। বিএনপিও এখন খেই হারিয়ে ফেলেছে। বৃহস্পতিবার বিএনপি যে সংবাদ সম্মেলন করেছে তার উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশ থেকে অবৈধভাবে অর্থ পাচার করে এবং বিদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অর্থ পাঠিয়ে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করা এবং বাংলাদেশকে বহির্বিশ্বের সামনে ভুলভাবে তুলে ধরা, সার্বিকভাবে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মানুষদের হেয় প্রতিপন্ন করা এবং রাষ্ট্রকে হেয় প্রতিপন্ন করার যে অভিযোগ সেগুলো ধামাচাপা দেয়া। মন্ত্রী আরও বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করার জন্য বিএনপি এবং জামায়াত লবিস্ট নিয়োগ করেছিলো, বিএনপি কি তা অস্বীকার করতে পারবে? বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আসলাম চৌধুরী ইজরায়েলি এজেন্টের সাথে যে বৈঠক করেছিল সেটিও পত্রপত্রিকায় ছাপা হয়েছে। বিএনপির এসব অপকর্মের কথা যখন বেরিয়ে এসেছে তখন তারা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার জন্য আবোল-তাবোল বকা শুরু করেছে। এর বেশি কিছু নয়। বিএনপি ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, তারা লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করে এবং অবৈধভাবে এসব লবিস্ট ফার্মে অর্থায়ন করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। প্রকৃতপক্ষে বিএনপির বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কোন আস্থা নেই। আস্থা নেই বলেই ষড়যন্ত্রের পথটাই বেছে নিয়েছে। আর সেই ষড়যন্ত্রের মধ্যে অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে বিদেশে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করা। যারা রাজনৈতিক কারণে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তারা দেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখে কিনা সেটি আমার প্রশ্ন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে ১২টি মানবাধিকার সংগঠন বিবৃতি দিয়েছে সেগুলো দুই তিনটি ছাড়া বাকিগুলো নামসর্বস্ব। এই বিবৃতিটি দেয়া হয়েছে আড়াই মাস আগে। এতদিন পরে এই বিষয়টি মিডিয়ায় নিয়ে আসার পেছনে উদ্দেশ্য আছে। এটি যদি তখন প্রকাশ পেত তাহলে সেটি বিবেচনায় নেয়া হত। কিন্তু আড়াই মাস পরে প্রকাশ করার পেছনে নিশ্চয়ই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে। নামসর্বস্ব সংগঠনগুলোর বাইরে যে সংগঠনগুলো রয়েছে তার মধ্য থেকে এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে ও তাদের রক্ষা করার জন্য বিবৃতি দিত। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর জন্য নানাভাবে চেষ্টা করেছে। কিন্তু ইজরায়েল যখন নিছক ঢিল ছোঁড়ার অপরাধে নিরীহ ফিলিস্তিনী নারী ও শিশুদের গুলি করে হত্যা করে তখন এই সকল মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে খুঁজে পাওয়া যায় না। যুক্তরাষ্ট্রে যখন চরম মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয় এবং এই সমস্ত সংগঠন যেসব দেশে বসে কাজ করছে সেসব দেশে যখন মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয় তখন এরা চুপ থাকে। আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন- টিআইবি বলেছে নির্বাচন কমিশন নিয়ে যে আইন করা হচ্ছে তা জনপ্রত্যাশা পূরণ করবে না। আমার প্রশ্ন হচ্ছে নির্বাচন কমিশন গঠন এবং সেটি গঠনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতির সংলাপ এবং রাষ্ট্রপতির সংলাপের প্রেক্ষিতে বেশীরভাগ রাজনৈতিক দল যে আইন করার কথা বলেছে তার প্রেক্ষিতে সরকার একটি আইন করার উদ্যোগ নিয়েছে, পুরো বিষয়টিই রাজনৈতিক। এটির সাথে দুর্নীতির কোনো সম্পর্ক নেই। টিআইবি কাজ করে দুর্নীতি নিয়ে। একটি রাজনৈতিক ইস্যুতে বিবৃতি দিয়ে তারা প্রমাণ করেছে যে তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজ করে। টিআইবি’র এ বিবৃতির সাথে বিএনপি’র বিবৃতির মিল আছে। এতে প্রমাণিত হয় যে টিআইবিও রাজনৈতিক ক্রীড়নক হিসেবে কাজ করে।

Share.