বিজ্ঞাপন না পেয়ে ফেসবুক শেয়ারে ধস

0

ডেস্ক রিপোর্ট: জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর উত্তাপ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের রাজপথে। বর্ণবাদ বিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। যার প্রভাব পড়েছে ক্রীড়াঙ্গন থেকে অর্থনীতি সমস্ত ক্ষেত্রেই। রূপ বদলে সেই আন্দোলন এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। স্পট হেট ফর প্রফিট (#StopHateForProfit) হ্যাশ ট্যাগে তোলপাড় চলছে ইন্টারনেট দুনিয়ায়। একের পর এক বহুজাতিক সংস্থা ব্র্যান্ডের নাম, বিজ্ঞাপনের বিষয়বস্তু নিয়ে বিপাকে পড়ে সিদ্ধান্ত বদলাচ্ছে। এবার কোকাকোলা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই পর্যন্ত ৯০টি বড় কোম্পানি বিজ্ঞাপন দেয়া বন্ধ করেছে। বয়কটের ফলে শুক্রবার পর্যন্ত ৮.৩% শেয়ার কমে এসেছে ফেসবুকের। জানিয়েছে ব্লুমবার্গ।কোকাকোলা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বিজ্ঞাপনে বর্ণবিদ্বেষের কোনও জায়গা নেই। তা থাকতেও পারে না। এই সময়ের মধ্যে তারা বিশ্লেষণ করবে, তাদের কোনও বিজ্ঞাপনী বিষয়বস্তু বর্ণবাদে ইন্ধন দিচ্ছে কিনা। কোকাকোলার চেয়ারম্যান জেমস কুইয়েন্সি সিএনবিসিকে বলেছেন, কোকাকোলা স্বচ্ছ থাকতে চায়। যে কোনও ধরনের বিদ্বেষের বিরুদ্ধে কোকাকোলা। আমাদের বিজ্ঞাপন পর্যালোচনা করার জন্যই আমরা ৩০ দিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা বন্ধ রাখব। বিশ্বজুড়ে যে সংস্থাগুলির বিজ্ঞাপনের দাপট দেখা যায় তার মধ্যে অন্যতম কোকাকোলা। সেদিক থেকে কোকের এই সিদ্ধান্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকদের অনেকে। এরইমধ্যেই ইউনিলিভার সিদ্ধান্ত নিয়েছে লিপটন টি এবং বেন অ্যান্ড জেরি আইসক্রিমেরে বিজ্ঞাপন ফেসবুক থেকে প্রত্যাহার করে নেবে। শুক্রবার ফেসবুক কর্তৃপক্ষও সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বড় অংশের বিজ্ঞাপন বন্ধ করা হবে। অর্থাৎ বড় অংশের বিজ্ঞাপনে বর্ণবাদের ছোঁয়া রয়েছে তা কার্যত মেনে নেয়া হয়েছে। অন্যদিকে ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি তার নামের থেকে ‘ফেয়ার’ শব্দটি বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।  ইউনিলিভারের সিদ্ধান্তের পর এক ধাক্কায় ৫৬ বিলিয়ন ডলার কমে আসে ফেসবুকের বাজারমূল্য। প্রভাব পড়েছে মার্ক জাকারবার্গের মোট সম্পত্তির পরিমাণেও। বিশ্বের সেরা দশ ধনীদের তালিকায় চার নম্বরে চলে এসেছেন তিনি। লুই ভুঁটোর স্বত্বাধিকারী বার্নার্ড আরনল্ট জাকারর্বাগকে পেরিয়ে ধনীদের তালিকায় তিনে উঠে এসেছেন। গেল ২৫ মে যুক্তরাষ্ট্রে শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তার হাতে মৃত্যু হয় ফ্লয়েড নামক এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির। রাস্তায় নেমে আসেন হাজারো মানুষ।প্রতিক্রিয়া হিসাবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, ‘লুটপাট শুরু হলেই গুলি করাও শুরু হবে।’ এমন মন্তব্যের পর টুইটার এই পোস্টটিকে মুছে দেয়। পাশাপাশি তারা জানিয়ে দেয়, এমন শব্দের ব্যবহার উস্কানিমূলক, প্রতিহিংসা ছড়িয়ে দিতে পারে। যা সেবা দান বিধি লঙ্ঘন করেছে।  কিন্তু জাকারবার্গের এমন পোস্ট রাখার পক্ষে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি সরকার বলপ্রয়োগ করার পরিকল্পনা করছে কিনা, তা জনগণের জানা উচিত।’  এতে ফেসবুকের ব্যবহারকারীর পাশাপাশি একাধিক প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত অনেকেই এই নিয়ে তীব্র দ্বিমত প্রকাশ করেন। ফেসবুকের প্রধান মার্ক জাকারবার্গ বলেন, অনেকেই আমার কথায় কষ্ট পেয়েছেন। তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি। আমি বিশ্বাস করি আমাদের প্ল্যাটফর্ম সমাজে ইতিবাচকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

Share.