বিনোদন ডেস্ক: দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিশেষ টেলিভিশন কাহিনীচিত্র ‘বিজয়া’ নির্মাণ করায় নির্মাতা আবু হায়াত মাহমুদ, গল্পকার শোয়েব চৌধুরী ও প্রধান চরিত্র নুসরাত ইমরোজ তিশাকে মন্দিরে নিয়ে বলি দেয়ার হুমকি দিয়েছে বেশ কয়েকজন ফেসবুক ব্যবহারকারী। ক্রাউন এন্টারটেইনমেন্টের প্রযোজনায় ‘বিজয়া’তে তিশার বিপরীতে অভিনয় করেছন ইরফান সাজ্জাদ। নাটকের শুটিংয়ের কয়েকটি স্থিরচিত্র সম্প্রতি ফেসবুকে প্রকাশ পায়। এর পরই এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের হত্যার হুমকি দেয়া হয়। শুধু তাই নয়, এই নাটকের মাধ্যমে সনাতনী সম্প্রদায়কে কটাক্ষ এবং ধর্মান্তরকরণ ও সাম্প্রদায়িকতা উস্কে দেয়ার অভিযোগে নুসরাত ইমরোজ তিশা ও তার একটি নাটকের সহ-অভিনেতা, পরিচালক এবং প্রযোজকের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশও পাঠানো হয়েছে। সোমবার লিটন কৃষ্ণ দাস নামে এক ব্যক্তির পক্ষে নোটিশ পাঠিয়েছেন তার আইনজীবী সুমন কুমার রায়। লিগ্যাল নোটিশ প্রাপ্তির সাত দিনের (১২ অক্টোবর থেকে শুরু) মধ্যে সনাতন সম্প্রদায়ের ভাবাবেগ ও সনাতন ধর্মানুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিতর্কিত ‘বিজয়া’ নাটকটি প্রত্যাহার করতে নোটিশে উল্লেখিত অভিযুক্তদের প্রতি বিনীত অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে দেশে প্রচলিত যেকোনো দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালতের আশ্রয় নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। এ বিষয়ে ‘বিজয়া’র নির্মাতা আবু হায়াত মাহমুদ বলেন, ‘এমন নোটিশ হাস্যকর। কারণ এখন পর্যন্ত নাটকের কোনো কিছুই আমরা প্রকাশ করিনি। তারা কীভাবে নাটকের গল্প বুঝলেন? আগে তারা নাটকটি দেখুক, তারপর মন্তব্য করুক। দর্শকের জন্য নাটক নির্মাণ করি। ধর্মে আঘাত লাগে এ রকম কাজ করার প্রশ্নই উঠে না। তাছাড়া নুসরাত ইমরোজ তিশা বাংলাদেশের জনপ্রিয় একজন অভিনেত্রী। তিনি সনাতনী সম্প্রদায়কে কটাক্ষ এবং ধর্মান্তরকরণ ও সাম্প্রদায়িকতা উস্কে দেয়ার মতো কোনো কাজ করেননি।’ গল্পকার শোয়েব চৌধুরী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত নাটকের পোস্টার ও টিজার কিছু্ই প্রচার হয়নি। তারা ট্রায়াল ভার্সন কোথায় পেলেন? তবে কি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কেউ শীর্ষ প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ক্রাউনের পেছনে লেগেছে। আমার তো মনে হচ্ছে কেউ প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের ষড়যন্ত্র করছে। এমন যদি কেউ ভেবে থাকেন তাহলে ভুল ভেবেছেন। শুটিংয়ের পর থেকেই বেশ কয়েকজন আমাকে অভিনয়শিল্পী ও নাটকের টিমকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এরইমধ্যে আমরা বেশ কয়েকজনের তথ্য সংগ্রহ করেছি। আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘শারদীয় দুর্গাপূজার বিশেষ নাটক ‘বিজয়া’র বিরুদ্ধে অকারণেই ক্ষোভ দেখাচ্ছে কিছু লোক। পুরো গল্পটা না জেনেই তারা অশালীন মন্তব্য করছে। আগে নাটকটি দেখুক, তারপর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুক। সবাইকে বলছি, আগে নাটকটি দেখুন। তারপর আপনারাই অনুতপ্ত হবেন! আরেকটা কথা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমাকে বা এই নাটকের কাউকে হুমকি দিয়ে ফৌজদারী অপরাধ থেকে বিরত থাকুন।’ তিশা বলেন, ‘নোটিশের ব্যাপারে অবগত নই। একটা কথা বলতে চাই, ধর্মে আঘাত লাগে এ রকম কাজ কখনো করিনি, ভবিষ্যতেও করব না। নাটকটি প্রচার হলে আগে দেখুন, তারপর মন্তব্য করুন। কোনো কিছু না জেনে মন্তব্য করা কি ঠিক?’ অন্যদিকে প্রযোজনা সংস্থা ক্রাউন এন্টারটেইনমেন্টের ডেপুটি সিইও তাজুল ইসলাম জানান, ‘বিজয়া’ নিয়ে অশ্লীল মন্তব্যকারী এবং হত্যার হুমকিদানকারীর বিরুদ্ধে ক্রাউন কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে। এরইমধ্যে বেশ কিছু অপরাধীর পরিচয় চিহ্নিত করা হয়েছে। আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
‘বিজয়া’কে কেন্দ্র করে তিশাদের হত্যার হুমকি
0
Share.