সোমবার, ডিসেম্বর ২৩

বিজয় দিবসে প্যারেড ময়দানে কুচকাওয়াজ, সমরাস্ত্র-অ্যারোবেটিক ডিসপ্লে

0

ঢাকা অফিস: স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয়ের ৪৮ বছর পূর্তিতে জাতীয় প্যারেড ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়েছে সশস্ত্র বাহিনীর মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ। তখন সালাম গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পদাতিক কুচকাওয়াজের পাশাপাশি এতে অংশগ্রহণকারী সুসজ্জিত যান্ত্রিক বহর এবং বিমানবাহিনীর মনোজ্ঞ অ্যারোবেটিক ডিসপ্লে ছিল অন্যতম আকর্ষণ। আজ সোমবার বাংলাদেশ সময় সকালে শেরেবাংলা নগরে জাতীয় প্যারেড ময়দানে বর্ণাঢ্য এই কুচকাওয়াজে মুক্তিযোদ্ধা কন্টিনজেন্ট, সশস্ত্র বাহিনী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন শাখা ও সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অগ্রগতির তথ্য জানানো হয় অতিথিদের। বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১০টায় রাষ্ট্রপতি প্যারেড স্কয়ারে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং তিন বাহিনীর প্রধানরা তাকে স্বাগত জানান। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশনের আয়োজনে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী, বিএনসিসি, বিজিবি, পুলিশ, র‌্যাব, আনসার ও ভিডিপি, কোস্ট গার্ড এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা সুসজ্জিতভাবে এই কুচকাওয়াজে অংশ নেন। নীল রঙের স্যুট ও সাদা শার্ট পরিহিত রাষ্ট্রপতি খোলা জিপে চড়ে কুচাকাওয়াজ পরিদর্শন করেন এবং পরে অভিবাদন মঞ্চে দাঁড়িয়ে সালাম গ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক এবং তিন বাহিনীর প্রধানরা অভিবাদন মঞ্চে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সচিব, সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা, বিদেশি রাষ্ট্রদূত ও বিভিন্ন মিশনের প্রধান এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এবারের কুচকাওয়াজের অধিনায়ক ছিলেন নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল আকবর হোসেন। অভিবাদন মঞ্চের সামনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশাল প্রতিকৃতি রাখা হয়। তার দুই পাশে ছিল রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির দুই পাশে জাতীয় চার নেতা এবং মুক্তিযুদ্ধের সাত বীরশ্রেষ্ঠর ছবি রাখা হয়। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েক হাজার মানুষ দুই ঘণ্টাব্যাপী মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ উপভোগ করেন। বাংলাদেশ টেলিভিশন প্যারেড ময়দান থেকে এ অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করে। কুচকাওয়াজে আর্মি, নেভাল এভিয়েশন ও র‌্যাব ফ্লাই পাস্ট করে রাষ্ট্রপতিকে সালাম জানায়। বাংলাদেশ সেনা বাহিনী, নৌ ও বিমান বানিহীতে নতুন সংযোজিত বিভিন্ন যুদ্ধাস্ত্র ও সরঞ্জাম প্রদর্শিত হয়। পদাতিক বাহিনীর কুচকাওয়াজের পর অত্যাধুনিক রণসাজে সজ্জিত দল রাষ্ট্রপতিকে অভিবাদন জানায়। এছাড়া ওয়ার ডগ ও সম্মিলিত অশ্বারোহী কন্টিনজেন্ট রাষ্ট্রপতিকে অভিবাদন জানায়। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সুসজ্জিত গাড়ি বহর কুচকাওয়াজে উন্নয়নের প্রদর্শন করেন। এছাড়া বিমানবাহিনীর কে-৮ ডব্লিইউ, এফ-৭ বিজিওয়ান, ইয়াক ১৩০ ও মিগ-২৯বি যুদ্ধ বিমানের অ্যারোবেটিক ডিসপ্লে দর্শকদের মুগ্ধ করে। বিমান বাহিনীর অংশগ্রহণে রাষ্ট্রপতিকে ‘ফ্লাইং স্যালুট’ দেয় যুদ্ধ বিমান মিগ-২৯। যুদ্ধ বিমানগুলো বর্ণিল ধোঁয়া উড়িয়ে রাষ্ট্রপতিকে অভিবাদন জানায়। ফ্লাইপাস্টের নেতৃত্ব দেন এয়ার ভাইস মার্শাল মো. সাঈদ হোসেন। সব শেষে লেফটেন্যান্ট কর্নেল বেনজীর আহমেদের নেতৃত্বে ৬০০ সদস্যের সম্মিলিত বাদক দল রাষ্ট্রপতিকে অভিবাদন জানায়। এবারের কুচকাওয়াজে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি ব্যান্ড কন্টিনজেন্ট অংশ নেয়। এর নেতৃত্ব দেন সুবাদার লক্ষ্মীধর মহাপাত্র। আয়োজনের অন্যতম আকর্ষণ ছিল জাতীয় পতাকা, রাষ্ট্রপতির পতাকা ও বিভিন্ন বাহিনীর পতাকাসহ প্যারাশুট জাম্প। কুজকাওয়াজ শেষে বর্ণিল ‘ডে ফায়ারওয়ার্কস’ প্রদর্শিত হয়। কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ শেষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী প্যারেডে অংশ নেওয়া কন্টিনজেন্ট কমান্ডারদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

Share.