ডেস্ক রিপোর্ট: গত বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ‘হেইট ক্রাইম’ বা ‘বিদ্বেষমূলক’ অপরাধের মাত্রা রেকর্ড ছাড়িয়েছে, বলছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা-এফবিআই। যা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে গত কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এফবিআইয়ের প্রকাশিত নতুন প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। বিদ্বেষমূলক হামলার শিকার হয়ে ২০১৯ সালে ৫১ মার্কিনি নিহত হন। যা ২০১৮ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দ্বিগুণ। প্রতিবেদনে জানা গেছে, গেল আগস্টে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের এল পাসোর বিপণী প্রতিষ্ঠান ওয়ালমার্টে ২২ মেক্সিকান নাগরিককে গুলি করে হত্যা করা হয়। এফবিআই এটিকে বিদ্বেষমূলক হামলা হিসেবেই চিহ্নিত করেছে। বিশেষ করে ২০১৪ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্বেষমূলক অপরাধের মাত্রা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গোষ্ঠী সতর্ক করে বলছে, ক্রমবর্ধমান ধর্মান্ধতা এবং বর্ণবাদী বক্তৃতা আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে থাকায় এ ধরনের ঘটনা বাড়ছে।এফবিআই-এর ‘বার্ষিক হেইট ক্রাইম স্ট্যাটিকস অ্যাক্ট’- এইচসিএসএ’র রিপোর্টে বলা হয়েছে, গেল বছরেই ৭ হাজার ৩১৪টি নানা ধরনের বিদ্বেষমূলক অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। এই চিত্র ২০১৮ সালে ছিল ৭ হাজার ১২০টি। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি হয় ২০০৮ সালে। বিদ্বেষমূলক অপরাধগুলিকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে- বর্ণ, জাতি, গোষ্ঠী, ধর্ম ও যৌন হয়রানির মতো অপরাধ। প্রতিবেদনের তথ্যে আরো দেখা গেছে, ৭ শতাংশের কাছাকাছি ধর্মভিত্তিক বিদ্বেষমূলক অপরাধ। এছাড়া ইহুদি বা ইহুদি প্রতিষ্ঠানগুলিকে লক্ষ্য করে অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে ১৪ শতাংশ। সেই সঙ্গে লাতিনবিরোধী কর্মকাণ্ড বাড়ছে আমেরিকায়। যুক্তরাষ্ট্রে সবেচেয়ে বেশি নিগৃহীত হয়ে থাকেন কৃষ্ণাঙ্গরা। তারাই অন্যান্য বর্ণ বা গোত্রের সদস্যদের থেকে সবচেয়ে বেশি হামলার শিকার হন। তবে আফ্রিকান আমেরিকানদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক অপরাধ সামান্য কমেছে। ২০১৮ সালে এর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৯৪৩। ২০১৯ সালে তা ১ হাজার ৯৩০-এ নেমে এসেছে। এশিয়ানরাও এ ধরনের জাতিগত বা ধর্মবিষয়ক বিদ্বেষমূলক হামলার শিকার হয়ে থাকেন। এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর, ‘হেইট ক্রাইম’ বা ‘বিদ্বেষমূলক’ ঘটনা নিয়ে আরো বিচার বিশ্লেষণ করে তথ্য সংরক্ষণের জন্য আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন মানবাধিকার সংস্থাগুলি। বিশেষ করে ২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদে বসার পরই এ ধরনের অপরাধের মাত্রা বেড়ে গেছে। ট্রাম্প বিভিন্ন সময় ‘শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদ’ এ ধরনের উস্কানিমূলক মন্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রে সহিংসতা দেখা যায়।
‘বিদ্বেষমূলক’ অপরাধের চূড়ান্তে যুক্তরাষ্ট্র
0
Share.