ঢাকা অফিস: করোনা প্রকোপের মধ্যে বিশেষ ধরনের অনলাইন মডিউলের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে ২৯টি অভিযোগ করেছেন বিনিয়োগকারীরা। এর মধ্যে পাঁচটি অভিযোগ এসেছে এপ্রিল মাস বা সরকারঘোষিত সাধারণ ছুটির মধ্যে। বাকি ২৪টি অভিযোগ জমা পড়ে মার্চ মাসে।সাধারণ ছুটির মধ্যে জমা পড়া পাঁচ অভিযোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চালু করা বিশেষ ধরনের অনলাইন মডিউলে সাত মাসে ২৩৭টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে ২১৯টি বা ৯২ শতাংশ অভিযোগের নিষ্পত্তি করা হয়েছে। বিএসইসির সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। এরপর ২৬ মার্চ থেকে সরকার সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। সরকারের এই ছুটির মধ্যে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট সকল অফিস বন্ধ রয়েছে। ফলে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট প্রায় সব কাজ বন্ধ। অবশ্য এই বন্ধের মধ্যে অনলাইনের মাধ্যমে সম্প্রতি একটি কমিশন সভা করেছে বিএসইসি। ওই কমিশন সভায় ট্রেক বিধিমালা স্থগিত করাসহ বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু অফিস বন্ধ থাকায় বিনিয়োগকারীদের কোনো অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়নি। ফলে সাধারণ ছুটির মধ্যে জমা পড়া সবকটি অভিযোগ অনিষ্পত্তি অবস্থায় রয়েছে।যেকোনো বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ দাখিলের জন্য ‘কাস্টমার কমপ্লেইন্ট অ্যাড্রেস মডিউল’ (সিসিএএম) নামে তৈরি করা বিশেষ ধরনের এ সফটওয়্যার গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন করে বিএসইসি। অনলাইনের এই পদ্ধতিতে অভিযোগ দাখিল করতে বিনিয়োগকারীর ১৬ সংখ্যার বিও, নাম, ঠিকানা, ই-মেইল ও মোবাইল নম্বর দিতে হবে। অভিযোগ দাখিলের পরপরই অনলাইনে প্রাপ্তি স্বীকারপত্র পাবেন অভিযোগকারী। অভিযোগের জন্য অনলাইন মডিউল চালুর ছয় দিনের মাথায় ৬ অক্টোবর এক অনুষ্ঠানে বিএসইসির কমিশনার হেলাল উদ্দিন নিজামী বলেন, ‘বিনিয়োগকারীর অভিযোগ নিষ্পত্তির মডিউল ফলদায়ক ও কার্যকর। এই মডিউলটি চালুর দুই দিনের মধ্যেই একটি সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। সেটি সাধারণ প্রক্রিয়ায় করতে গেলে হয়তো একমাস লাগতো। কারণ এতে অনেক প্রসিডিউর অনুসরণ করতে হতো।’ বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, অনলাইনে বিনিয়োগকারীর অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ ধরনের এ সফটওয়্যার চালুর পর গত সাত মাসে যে কয়টি অভিযোগ জমা পড়েছে তার মধ্যে ১৮টি অনিষ্পত্তি অবস্থায় রয়েছে। অনিষ্পত্তি অবস্থায় থাকা অভিযোগগুলোর মধ্যে চারটি ফেব্রুয়ারি মাসের এবং ৯টি মার্চ মাস জমা পড়ে। বাকি পাঁচটি অভিযোগ সরকারঘোষিত সাধারণ ছুটির মধ্যে বা এপ্রিল মাসে জমা পড়ে। জানা গেছে, মার্চ মাসে বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কাছে ‘কাস্টমার কমপ্লেইন্ট অ্যাড্রেস মডিউল’ এর মাধ্যমে ২৪টি অভিযোগ করেন। তার আগে বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ১৯টি অভিযোগ আসে। আর ফেব্রুয়ারিতে অভিযোগ জমা পড়ে ২৩টি। বিএসইসির অনলাইন মডিউলটি চালু হওয়ার পরে গত বছরের অক্টোবরে সব থেকে বেশি অভিযোগ জমা পড়ে। মাসটিতে বিনিয়োগকারীরা বিএসইসির কাছে ৮২টি অভিযোগ করেন। পরের মাস নভেম্বর মাসে ৫৬টি এবং ডিসেম্বরে ২৭টি অভিযোগ করেন বিনিয়োগকারীরা। অনলাইন মডিউল চালু হওয়ার আগে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে লিখিতভাবে অভিযোগ করতে হতো বিনিয়োগকারীদেরকে। আর অভিযোগের সেই কাগজ এক দফতর থেকে আরেক দফতরে যেতেই অনেক সময় লেগে যেত। তবে এখন আর সেই ভোগান্তি নেই। মডিউলটি চালুর হওয়ার পরে একটি অনলাইনের অভিযোগ গড়ে ১৫ দিনেরও কম সময়ের মধ্যে সমাধান হয়ে যাচ্ছে বলে দাবি বিএসইসির সংশ্লিষ্টদের।
বিনিয়োগকারীদের ২৯ অভিযোগ
0
Share.