ঢাকা অফিস: বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর (বিএএফ) সদস্যদের যে কোনো লক্ষ্য অর্জনে কঠোর পরিশ্রম, শৃঙ্খলা ও দেশপ্রেমের মাধ্যমে পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘পরিশ্রম, শৃঙ্খলা ও দেশপ্রেম ছাড়া লক্ষ্য অর্জন অসম্ভব। আমি আশা করি আপনারা এই বিষয়ে সচেতন হবেন।’ প্রধানমন্ত্রী আজ বুধবার সকালে বিমানবাহিনীর বিমান বহরে ‘গ্রোব-১২০ টিপি’ প্রশিক্ষণ বিমান সংযোজন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যশোরে বিমান বাহিনী ঘাঁটি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন। বিমানবাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একজন পেশাজীবীর প্রধান পরিচয় তার পেশাগত দক্ষতা। মনে রাখবেন, পেশাগত দক্ষতা ও সততার কোনো বিকল্প নেই। আমি আশা করি, আপনারা এ ব্যাপারে সজাগ থাকবেন এবং নিজেদেরকে সেভাবেই গড়ে তুলবেন।’ শান্তির প্রতি নিজের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে ও ‘দেশের পররাষ্ট্রনীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়,’ উল্লেখ করেন সরকার প্রধান। কখনো কারো দ্বারা আক্রান্ত হলে দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকের দিনে আপনাদের গর্ব ও আনন্দের সঙ্গে দেশের আপামর জনগণও গর্বিত এবং আনন্দিত। জনগণের কষ্টার্জিত অর্থের বিনিময়ে সংগৃহীত এ মূল্যবান গ্রোব-১২০ টিপি প্রশিক্ষণ বিমানের উড্ডয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণে আপনাদের হতে হবে অত্যন্ত যত্নবান। অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে ব্যবহার করবেন যাতে কোনো রকম ক্ষতি না হয়। ক্ষতি হলে সেটা দেশের জন্য বড় ক্ষতি হবে। এটা মনে রাখতে হবে কারণ, এক একটা বৈমানিকের জীবন আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ দিন বিমান বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হয় ১২টি গ্রোব-১২০ টিপি প্রশিক্ষণ বিমান। প্রধানমন্ত্রী নতুন অন্তর্ভুক্ত বিমানের মনোজ্ঞ ফ্লাইপাস্ট প্রত্যক্ষ করেন। তাকে কুচকাওয়াজের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সালাম জানানো হয়। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে নতুন অন্তর্ভুক্ত বিমানের ওপর একটি ভিডিও চিত্র পরিবেশিত হয়। বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। ‘আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে আরও শক্তিশালী ও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছ’ বলে উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। বলেন, ’৭৫ এর দীর্ঘ ২১ বছর পর ’৯৬ সালে সরকার গঠন করেই তিনি দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তুলতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়নের উদ্যোগ এবং বিমানবাহিনীকে আরো শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা গ্রহণ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, ’৭৭ সালে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় থাকাকালে বিমানবাহিনীতে ক্যু’র অজুহাতে প্রায় ৬শ’ কর্মকর্তা এবং সৈনিককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। যার ফলে বিমানবাহিনী ধ্বংসের দিকে চলে গিয়েছিল।’ বিমানবাহিনীর উন্নয়নে সরকারের নানা সফলতার কথা উল্লেখ করে এ বছরের মধ্যেই দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও কয়েকটি বিমান এই বাহিনীতে যুক্ত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়াও শিগগিরই বিমান বাহিনীতে আনম্যানড অ্যারিয়াল ভেহিকেল সিস্টেম, এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন, মোবাইল গ্যাপ ফিলার র্যাডার, কে-এইট ডব্লিউ এয়ারক্রাফট সিমুলেটর, এ্যাটাক হেলিকপ্টার এবং বিভিন্ন ধরনের সামরিক সরঞ্জাম যুক্ত হতে যাচ্ছে বলে জানান।
বিমানবাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য অর্জনে পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোর তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর
0
Share.