ডেস্ক রিপোর্ট: বিশ্বের বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল আমদানিকারক দেশ চীন। সম্প্রতি চীনের অর্থনীতির গতি মন্থর এবং চাহিদা কমে যাওয়ায় প্রভাব পড়েছে বৈশ্বিক তেলের বাজারে। ফলে সোমবার দ্বিতীয় অধিবেশনে বিশ্বব্যাপী তেলের দাম কমেছে।অন্যদিকে বিশ্বের শীর্ষ রপ্তানিকারক সৌদি আরামকোর প্রধান বলেছেন, তারা উৎপাদন বাড়াতে প্রস্তুত। বর্তমানে বিশ্ব বাজারে ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারের দাম ব্যারেল প্রতি ৮৯ সেন্ট বা ০.৯ শতাংশ কমে ৯৭.২৬ ডলারে নেমেছে। এছাড়া সোমবার প্রথম সেশনে যুক্তরাষ্ট্রের বেঞ্চমার্ক ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুডের প্রতি ব্যারেল ছিল ৯১.০৩ ডলার, এর দাম আগের সেশনে ২.৪ শতাংশ কমার পর আবার ১.০৬ ডলার বা ১.২ শতাংশ কমেছে। সরকারি তথ্য বলছে, জুলাই মাসে চীনের অর্থনীতি অপ্রত্যাশিতভাবে ধীর হয়ে যায়। এ সময় শোধনাগারের উৎপাদন প্রতিদিন ১২.৫৩ মিলিয়ন ব্যারেলে নেমে আসে। এটি ২০২০ সালের মার্চের পর থেকে সর্বনিম্ন। মুডি’স অ্যানালিটিক্সের অর্থনীতিবিদ হেরন লিন বলেন, ‘সরকারি তথ্য থেকে জানা যায় তেলের চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়ছে। কারণ অভ্যন্তরীণ সরবরাহ এবং ভোক্তাদের চাহিদা রেকর্ড পরিমাণ তেলের দাম বাড়ার কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন তেলের চাহিদা বছরের বাকি সময়ে নিম্নমুখী হতে পারে। কারণ কোভিড-১৯ বিধিনিষেধের হুমকি সতর্কতামূলক সঞ্চয়কে উত্সাহিত করে এবং তেলের ব্যবহার হ্রাস করে। আরামকোর প্রধান নির্বাহী আমিন নাসের রবিবার সাংবাদিকদের বলেছেন, সৌদি আরব সরকার অনুরোধ করলে অপরিশোধিত তেলের উৎপাদন সর্বোচ্চ ১২ মিলিয়ন বিপিডিতে বাড়ানোর জন্য প্রস্তুত রয়েছে আরামকো। নাসের আরও বলেন, আমাদের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য সরকারের বা জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে আহ্বানের প্রয়োজন হলে যেকোন সময় ১২ মিলিয়ন বিপিডি পর্যন্ত র্যাম্প করার ক্ষমতার বিষয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী। চীন কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ শিথিল করতে পারে। সেইসঙ্গে বিমান শিল্পে পিকআপ চাহিদা বাড়িয়ে তুলতে পারে। এতে জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তেলের একটি পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মেক্সিকো উপসাগরের কয়েকটি অফশোরে উৎপাদন ব্যাহত হয়। যে কারণে গত সপ্তাহে বিশ্ব বাজারে তেলের দাম ৩ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পায়। যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানার একজন কর্মকর্তা বলেছেন, মেক্সিকো উপসাগরের ক্ষতিগ্রস্ত পাইপলাইন শুক্রবার রাতের দিকে মেরামত করায় কিছু উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান তাদের স্থগিত হয়ে যাওয়া উৎপাদন পুনরায় শুরু করেছে। এই শীতে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল এবং পরিশোধিত পণ্য সরবরাহের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বব্যাপী তেলের বাজারগুলি কঠোর সরবরাহের দ্বারা সমর্থিত ছিল। বিশ্লেষকরা বলেছেন, ইরান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি প্রস্তাব গ্রহণ করলে আরও সরবরাহ আসতে পারে। প্রস্তাবটি ইরানের তেল রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে।
বিশ্ববাজারে আবারো কমলো তেলের দাম
0
Share.