শনিবার, নভেম্বর ২৩

বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অনলাইন শিক্ষায়’ চাপ সৃষ্টি আত্মঘাতী

0

ঢাকা অফিস: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে চাপ সৃষ্টি করা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করেছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। সকল সমস্যা সমাধান করে শতভাগ শিক্ষার্থীরা এর আওতায় আসতে পারে সেটি নিশ্চিত করে এ কার্যক্রম শুরু করার দাবি জানিয়েছেন তারা।বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের পর্যবেক্ষণ ও প্রস্তাব সংক্রান্ত অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তোলা হয়।লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, কোভিড ১৯ মহামারীর বৈশ্বিক বিস্তারের ফলে চলতি বছরের মধ্য মার্চ থেকে বিগত সাড়ে তিনমাস ধরে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম আক্ষরিক অর্থে বন্ধ রয়েছে। তবে এপ্রিল মাস থেকে ইউজিসি (বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন) থেকে ‘অনলাইন-ক্লাস’ চালুর জন্য কিছু জরিপ কার্যক্রম লক্ষ্ করা গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় সম্পূর্ণ খোলার কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা বা সমন্বিত নির্দেশনা এখনো আসেনি।বলা হয়েছে, পাঠদান ও পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যেহেতু সেশন জ্যাম ও নানা সংকটে পড়ার আশঙ্কায় পড়েছে সমগ্র শিক্ষাঙ্গন, সেহেতু শিক্ষা-জীবন পুনরুদ্ধারের জন্য আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসাবে বিশেষ অনলাইন শিক্ষা-কার্যক্রম চালু করা একটি সম্ভাব্য উপায় হতে পারে । তবে অপরিকল্পিত, অপ্রস্তুত, ও বৈষম্যমূলক পন্থায় প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ও চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে তা চালুর চেষ্টা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য আত্মঘাতী হবে। তাই এসব শুরুর আগে আমাদের প্রতিষ্ঠান, শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের বাস্তব অসুবিধার কথা বিবেচনা করার আহ্বান জানান।তারা বলেন, ‘অনলাইন’ শিক্ষার প্রাতিষ্ঠানিক নানা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। নানা সমস্যার কারণে সকল শিক্ষার্থীর অংশগ্রহনে অনিশ্চয়তা রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্ষমতা ও দক্ষতার অভার রয়েছে। ‘অনলাইন’ কোর্সের জন্য বিশেষায়িত কারিকুলাম তৈরী ও বাস্তবায়নের কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই। কারিকুলাম ও একাডেমিক প্রক্রিয়ার পর্যালোচনা ও পূনর্বিন্যাস না করে কোন ইন্টারনেটনির্ভর শিক্ষণ কার্যক্রমে যাওয়ার চেষ্টা বিদ্যাগত বা গ্রহণযোগ্য নয়। এবিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে করোনার দুর্যোগকালীন বিশেষ একাডেমিক ক্যালেন্ডার তৈরি করে সে সময় সীমার মধ্যে শেখানো সম্ভব এমন কারিকুলাম ও সিলেবাস প্রণয়নের দাবি জানানো হয়।সেখানে আরো বলা হয়, কোন প্রস্তুতি ছাড়া বর্তমানে কেবল অস্পষ্ট দাপ্তরিক আদেশ দিয়ে ‘অনলাইন-ক্লাস’ চালুর প্রচেষ্টাকে নিয়ে আমরা সন্দিহান যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের রাজনৈতিক আনুগত্য ও ফায়দা হাসিলের জন্য তাড়াহুড়ো করে লোক দেখানো কাজ করে শিক্ষার্থীদের মহামারী বিপর্যস্ত জীবনে আরো মারাত্মক সমস্যার জন্ম দিবে।ইউজিসি’র এ সংক্রান্ত জরিপ কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তারা বলেন, বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর এই অনলাইন জরিপে অংশগ্রহণের কোনো উপায়ই নেই, বা জরীপের প্রশ্নের মধ্যে নানান ফাঁক রয়েছে। শুধু অনলাইনে থাকতে পারা শিক্ষার্থীদের মাঝে জরিপ চালিয়ে কীভাবে ‘অনলাইন-ক্লাসে’ যুক্ত হওয়ার সক্ষমতা যাচাই হতে পারে না। এ বিষয়ে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব অবকাঠামো তৈরি, সক্ষমতা, প্রশিক্ষণ, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের সমস্যা সমাধানের পর এ কার্যক্রম শুরুর দাবি জানান পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা।

Share.