শনিবার, নভেম্বর ২৩

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে অর্থ বন্ধ করলেন ট্রাম্প

0

ডেস্ক রিপোর্ট: করোনা ভাইরাস মহামারিতে ‘মৌলিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ’ হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। তাই জাতিসংঘের এ সংস্থাকে অর্থ দেয়া বন্ধ করতে প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কয়েকদিন ধরেই এ সংস্থার বিরুদ্ধে তিনি নানা রকম অভিযোগ উত্থাপন করে যাচ্ছিলেন। জবাবে এ সময়ে রাজনীতি না করে সবাইকে একত্রিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানানো হয় জাতিসংঘসহ বিভিন্ন পর্যায় থেকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো কথায় কান না দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে বিরোধটাকে জিঁয়েই রাখলেন ট্রাম্প। তার অভিযোগ, জাতিসংঘের এই সংস্থাটিতে অব্যবস্থাপনা রয়েছে। চীনে যখন করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঘটেছে তখন তারা একে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছে। তাই এই সংস্থাকে অবশ্যই জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত।এর আগেবিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীনের প্রতি পক্ষপাতী বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ খবর দিয়ে অনলাইন বিবিসি লিখেছে, নিজের দেশেই করোনা মহামারি মোকাবিলা নিয়ে সমালোচনার মুখে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তা সত্ত্বেও তিনি হোয়াইট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভূমিকায় মারাত্মক অব্যবস্থাপনা রয়েছে। তারা করোনা ভাইরাসের বিস্তার ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছে। তাই তাদেরকে তহবিল দেয়া বন্ধ করতে আমার প্রশাসনকে নির্দেশ দিচ্ছি। তিনি আরো বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তার মৌলিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। তাই তাদেরকে অবশ্যই জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত।ট্রাম্পের এমন বক্তব্যের জবাবে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরাঁ বলেছেন, এখনবিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সম্পদ সরবরাহ কর্তন করার সময় নয়। উল্লেখ্য, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় সবচেয়ে বড় অর্থদাতা যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর তারা এ সংস্থাকে দিয়েছে ৪০ কোটি ডলার। এই পরিমাণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মোট বাজেটের শতকরা প্রায় ১৫ ভাগ। এ সংস্থার ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে এ খাতে চীন দিয়েছে প্রায় ৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এ ছাড়া তারা ভলান্টারি ফান্ডিং দিয়েছে প্রায় এক কোটি ডলার। ওদিকে করোনা মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মার্চে ৬৭ কোটি ৫৯০ লাখ ডলার সহায়তার আবেদন জানায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তারা কমপক্ষে ১০০ কোটি ডলারের নতুন আবেদন করার পরিকল্পনা করছে। করোনা মহামারিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত যুক্তরাষ্ট্র। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ লাখ ৮ হাজার ৩৭৭ জন। মারা গেছেন কমপক্ষে ২৫ হাজার ৯৮১ জন। এর প্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে আমাদের যথেষ্ট উদ্বেগ আছে যে, আমেরিকার উদারতাকে বড় করে দেখা হয়েছিল কিনা। এক্ষেত্রে চীনের উহান শহরে যখন প্রথম করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ে তখন এ বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ্য সংগ্রহে ব্যর্থ হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তিনি প্রশ্ন রাখেন, চীনের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কি মেডিকেল বিশেষজ্ঞদের সেখানে পাঠিয়েছিল কিনা এবং তারা কি চীনের স্বচ্ছতার ঘাটতির বিষয়ে কোনো কথা বলেছিল কিনা। এই করোনা মহামারিকে তার উৎস নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মৃত্যুর সংখ্যাকে অনেক কমিয়ে আনা যেত। তা করা হলে হাজার হাজার মানুষের জীবন রক্ষা হতো। বিশ্ব অর্থনীতির ক্ষতি এড়ানো যেতো। পক্ষান্তরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইচ্ছাকৃতভাবে চীনের মুখ রক্ষার নিশ্চিয়তা দিয়েছে। চীন সরকারের কর্মকান্ডের পক্ষে কথা বলেছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হোয়াইট হাউজের রোজ গার্ডেনে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, লকডাউন থেকে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার কাছাকাছি। এ নিয়ে ৫০ জন গভর্নরের সঙ্গে শিগগিরই আমি কথা বলবো। প্রতিজন গভর্নরকে তার রাজ্যে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কর্তৃত্ব দেবো। তাদের দিকে নিবিড় নজর রাখবে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে এক্ষেত্রে সব গভর্নরকে জবাবদিহিতার মধ্যে রাখা হবে।

Share.