ডেস্ক রিপোর্ট: বরিস জনসনের নেতৃত্বে ব্রেক্সিট, নাকি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার সিদ্ধান্ত উল্টে দেওয়ার মতো আরেকটি গণভোট- এই দুইয়ের মধ্যে থেকে একটিকে বেছে নিতে পাঁচ বছরের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো সাধারণ নির্বাচনের ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েছেন যুক্তরাজ্যের নাগরিকরা। বৃহস্পতিবার গ্রিনিচ মান সময় ৭টায় ইংল্যান্ড, ওয়েলস, স্কটল্যান্ড ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের ৬৫০টি সংসদীয় আসনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। রাত ১০টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণের পরই শুরু হবে গণনা। আর শুক্রবার সকালে প্রথম কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অধিকাংশ আসনের ফল ঘোষণা করার কথা রয়েছে। যুক্তরাজ্যে এই ভোট ২০২২ সালে হওয়ার কথা থাকলেও মূলত ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়া (ব্রেক্সিট) নিয়ে যে জটিলতা দেখা দিয়েছে, তার প্রেক্ষাপটেই আবারও ভোট হচ্ছে। ব্রেক্সিট নিয়ে পরিস্থিতি এতটাই জটিল অবস্থায় পৌঁছেছিল যে, প্রায় শতবছরের ঐতিহ্য ভেঙ্গে ডিসেম্বরে ভোটের আয়োজন করতে হয়েছে কনজারভেটিভ পার্টির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে। পার্লামেন্টে তিনবার ব্রেক্সিট চুক্তি পাস করাতে ব্যর্থ হয়ে টেরিজা মের পদত্যাগের পর ক্ষমতায় আসা জনসনকেও কম গলদঘর্ম হতে হয়নি। ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ব্রেক্সিটে ব্যর্থ হয়ে তাই তাকে ডিসেম্বরে সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দিতে হয়েছে। জনসনের ভাষায়, যুক্তরাজ্যের বিদায় (ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে) এবং অর্থনীতিকে হুমকির মুখে ফেলার মাধ্যমে যে রাজনৈতিক অচলাবস্থার তৈরি হয়েছে, তা থেকে উত্তরণের পথ দেখাবে এই নির্বাচন। ‘ব্রেক্সিট সম্পন্ন কর’ (গেট ব্রেক্সিট ডান) স্লোগানে এই নির্বাচনে অংশ নেওয়া জনসনের জয়ের ব্যাপারে আভাস মিলেছে বেশ কয়েকটি মতামত জরিপে। জয়লাভ করলে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে যুক্তরাজ্যকে ইইউ থেকে বের করে নিয়ে আসবেন এমন প্রতিশ্রুতি জনসন দিচ্ছেন। পাশাপাশি ক্ষমতায় টিকে যেতে পারলে স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং পুলিশের মানোন্নয়নে আরও বেশি অর্থ ব্যয়ের আশাও দেখিয়েছেন। অন্যদিকে তার প্রধান প্রতিপক্ষ লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন ক্ষমতায় এলে ছয় মাসের মধ্যে নমনীয় একটি ব্রেক্সিট চুক্তি করতে গণভোটে দেওয়া ছাড়াও নাগরিকদের জন্য আরও বেশি ব্যয়, প্রধান প্রধান সেবাগুলো জাতীয়করণ এবং ধনীদের ওপর আরও বেশি করারোপের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটের মাঠে নেমেছেন। এই নির্বাচনে জয় বরিস জনসনকে হয়তো আবারও দেশটিকে ইইউ থেকে বের করে নিয়ে আসার সুযোগ করে দিবে। কিন্তু আদতে ব্রেক্সিট এখনও অনেক দূরের পথ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ ইইউর সাথে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য তিনি যে ১১ মাস সময় নিয়েছেন, সেটি করতে তাকে কঠিন পরিশ্রম করতে হবে। ৩১ জানুয়ারিরর পরই আসলে একটা রূপান্তরের মধ্যে দিয়ে যাবে যুক্তরাজ্য। ওই সময়ই ইইউ২৭ এর সাথে নতুন সম্পর্কের বিষয় নিয়ে দেশটি এগোতে পারে, আর জনসন ২০২০ সালের শেষ নাগাদ এই কাজটিই করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ব্রেক্সিট ভাগ্য নির্ধারণে সাধারণ নির্বাচনের ভোট চলছে
0
Share.