ঢাকা অফিস: বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ভারত থেকে পাথর আমদানি কমিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে পেট্রাপোল বন্দরের ব্যবসায়ীদের ডাকা ধর্মঘটে বেনাপোল বন্দরে ৮ ঘণ্টা আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ ছিল। তবে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও শর্তসাপেক্ষে সচল ছিল দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত।শনিবার(১০ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ধর্মঘটের মধ্যে কোনো পণ্যবাহী ট্রাক দুই দেশের মধ্যে প্রবেশ করেনি।বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সাজেদুর রহমান জানান, প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে প্রায় দেড়শ ট্রাক পাথর আমদানি হয়ে আসছিল। কিন্তু বন্দরে পাথর খালাসের জন্য জায়গা না থাকায় ব্যবসায়ীরা বন্দরের বাইরে লোকালয়ে পাথর খালি করছিল। এতে ভারতীয় ট্রাক চালকদের অবাধ চলাফেরায় স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনে করোনা সংক্রমণ ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ তোলে এলাকাবাসী। বিষয়টি নিয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বৈঠক করে দিনে ৩০ ট্রাক পাথর বন্দরে প্রবেশ করবে বল সিদ্ধান্ত দেয়। ভারতীয় ব্যবসায়ীরা এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে শনিবার সকালে ধর্মঘট ডেকে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়। পরে আলোচনা করে পাথর প্রবেশের সংখ্যা কিছু বাড়ানো হবে এমন আশ্বাসে বিকেলে ধর্মঘট তুলে নিলে পুনরায় বাণিজ্য শুরু হয়।পাথর আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট রুপালী এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি রাজিব জানান, দেশের উন্নয়ন কাজে এপাথর ভারত থেকে আমদানি করা হচ্ছে। কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষ বন্দরে পাথর খালাস করতে দিচ্ছেন না, আবার কাস্টমস বন্দরের বাইরে নামাতে নিষেধ করছে। এতে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পাথরের সব ট্রাক বেনাপোল বন্দরে ঢুকতে না দিলে তারা অনান্য পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশে ঢুকতে দেবে না। এতে বন্ধ হয়ে যায় আমদানি-রপ্তানি।বেনাপোল কাস্টমস হাউজের অতিরিক্ত কমিশনার ড. নেয়ামুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি সীমান্তে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিন আক্রান্তের হার বাড়ছে। এ অবস্থায় বন্দরের বাইরে গিয়ে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে লোকালয়ে ভারতীয় ট্রাক চালকেরা পাথর খালি করায় ঝুঁকি আরও বাড়ছিল। ফলে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে এ বন্দর দিয়ে কিছুদিনের জন্য পাথরবাহী ট্রাক প্রবেশের সংখ্যা কমানো হয়। কিন্তু ব্যবসায়ীরা প্রতিবন্ধককতা সৃষ্টি করে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করে দেয়।বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, প্রতি বছর এ বন্দর থেকে সরকারকে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব দেওয়া হয়। কিন্তু বন্দরে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন না হওয়ায় মারাত্মকভাবে বাণিজ্য ব্যহত হচ্ছে। জায়গার অভাবে কখনও বাণিজ্য বন্ধ থাকছে, আবার কখনও খোলা আকাশের নিচে পণ্য রাখায় রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হচ্ছে। এতে অনেক ব্যবসায়ী সুবিধা বঞ্চিত হয়ে এ বন্দর ছাড়ে চলে যাচ্ছেন অন্য বন্দরে।এদিকে ধর্মঘটে আমদানি রপ্তানি বন্ধ হয়ে পড়ায় দুই বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় সহস্রাধিক ট্রাক পণ্য নিয়ে আটকা পড়ে। এসব পণ্যের মধ্যে আমদানি পণ্য ছিল শিল্প কারখানার কাঁচামাল ও শিশু খাদ্য, কেমিকেল, কাগজ, তুলা, পেঁয়াজ ও মাছ। রফতানি পণ্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল পাট ও পাট জাতীয় পণ্য।
ভারতীয় ব্যবসায়ীদের ধর্মঘটে ৮ ঘণ্টা আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
0
Share.