বাংলাদেশ থেকে ফরিদপুর প্রতিনিধি: ভাল নেই ফরিদপুরের সালথা উপজেলার প্রধান ফসল পেঁয়াজ চাষিরা। দাম না পেয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। বেশ কয়েকদিন ধরে কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত এখানকার কৃষকরা পেঁয়াজ উত্তোলনের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ইতোমধ্যে উত্তোলনের কাজও প্রায় শেষের দিকে। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার পেঁয়াজের ফলন ভাল হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। বিঘা প্রতি ৭০ থেকে ৮০ মন করে পেঁয়াজ পাচ্ছেন তারা। কিন্তু উৎপাদন খরচের তুলনায় দাম না পাওয়ায় চাষিদের লোকসান হচ্ছে বলে তাদের ভাষ্য। পেঁয়াজ চাষি মো. হারুন শেখ, হাফেজ মোল্যা ও সহিদ মিয়া জানান, এই বছর এক মণ পেঁয়াজ চাষ করতে চাষিদের খরচ হয়েছে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা। কিন্তু বাজারে ভাল মানের এক মণ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে। এতে খরচের চেয়েও মণ প্রতি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা করে লোকসান গুণতে হচ্ছে চাষিদের। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের দাবি জানিয়ে তারা আরও বলেন, দিন দিন সকল পণ্যের দাম বাড়লেও পেঁয়াজের দাম ক্রমেই কমে যাচ্ছে। পেঁয়াজের দাম যখন কম থাকে তখন সরকার কোন পদক্ষেপ নেয় না। আর যদি দাম একটু বাড়ে তাহলে তা নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার বাজারে প্রশাসন নামিয়ে দেয়। আবার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের কোনো উদ্যোগও নেওয়া হয় না। ওখান পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হলে আমরা হয়তো সঠিক দাম পেতাম। তারা বলেন, আমরা ডাল-ভাত খেয়ে কোনো রকম বেঁচের থাকার জন্য চাষাবাদ করি। চাষাবাদ করে আমরা লাভ করতে চাই না। আমরা আমাদের ফসলের ন্যায্যমূল্য চাই। আমরা যদি পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য পাই, তাহলে আগামীতে পেঁয়াজ চাষ করা থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হতে হবে। সালথা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জিবাংশু দাস বলেন, সালথার প্রদান ফসল হচ্ছে পেঁয়াজ। এখানে প্রতি বছর ব্যাপক পেঁয়াজের চাষ হয়। এবারও ১০ হাজার ৫৩৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ করা হয়েছে। ফলনও হয়েছে ভাল। চাষিরা যদি পেঁয়াজের দাম ভাল পায় তাহলে আগামীতে এখানকার চাষিরা বানিজ্যিকভাবে পেঁয়াজের চাষাবাদের আগ্রহী হবে।