ঢাকা অফিস: দেশজুড়ে আলোচিত রিজেন্ট হাসপাতালের সাহেদ ও জেকেজির সাবরিনার উত্থান কীভাবে হয়েছে তার ব্যাখা দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তার দাবি, সরকারের এক ধরনের জনস্বার্থবিরোধী ভুল নীতির কারণে এদের উত্থান হয়েছে।বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে রিজভী বলেন, ‘মানুষ মরে মরুক, আমি (সরকার) তো ঠিক আছি, জনগণ চুলায় যাক, আমি তো ঠিক আছি— এটা হচ্ছে এই সরকারের নীতি। এই নীতি কারণেই আজকে সাহেদের উত্থান হয়েছে, সাবরিনাদের উত্থান হয়েছে।’করোনা পরীক্ষা না করেই ভুয়া সনদ প্রদান ও লাইসেন্সবিহীন হাসপাতালে পরীক্ষার অনুমোদন দেয়ার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি এ মানববন্ধন আয়োজন করে। রিজভী বলেন, ‘একজন পাপুল ধরা পড়ল। এরকম গত ১২ বছরে কত পাপুল তৈরি হয়েছে এটা আমরা বলতে পারব না। এই দুরাচার দুর্বৃত্তমূলক শাসনব্যবস্থায় পাপুলরাই প্রতিষ্ঠিত হবে, তারাই এমপি হবে, তাদের পক্ষেই রাষ্ট্র থাকবে। এই নীতিতে আজকে রাষ্ট্র চলছে বলেই মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই। এক ভয়ংকর মরণঘাতি বেষ্টনীর মধ্যে দেশের মানুষ এখন বন্দি হয়ে আছে।’ তিনি বলেন, ‘আজকে হাসপাতালে আইসিইউ নেই, বেড নেই, ভেন্টিলেটর নেই, হাসপাতালে মাস্ক নেই। আর নকল মাস্ক নিয়ে এসছে তার সঙ্গে কে জড়িত? মন্ত্রীর ছেলে। ভেন্টিলেটর এখন এই মুহূর্তে জীবন বাঁচানোর একটি অন্যতম সরঞ্জাম। সেটি আমদানি করছে একে তো আওয়ামী সিন্ডিকেট, তার ওপর মন্ত্রীর আত্মীয়-স্বজনেরা। তাহলে কী করে মানুষ বাঁচবে? মানুষ বাঁচানোর কোনো জায়গা তারা (সরকার) রাখবে না।’ রিজভী বলেন, ‘আক্রান্ত রোগী রাস্তায় মরছে, অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে মরছে। সরকারি হাসপাতালগুলো নরকে পরিণত হয়েছে। আজকে মানুষকে বাঁচা-মরার সার্টিফিকেট দিচ্ছে একজন প্রতারক। যার করোনা হয়েছে তাকে করোনা হয়নি বলে সনদ দিচ্ছে। আর যার করোনা হয়েছে তাকে বলছে যে তার করোনা হয়নি। আজকে দেশের ভাবমূর্তি কোথায় গেছে? আজকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় আমাদের বিমান। শুধু ইতালিতে নয়, আরও অন্যান্য দেশ থেকে আমাদের বিমান ফিরিয়ে দিচ্ছে।’বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টিউশন ফি মওকুফ করার কথা বলে রিজভী বলেন, ‘আজ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা দাবি করছেন টিউশন ফি কমানোর জন্য। প্রধানমন্ত্রী, আপনি তো অনেক প্রণোদনা দিলেন অনেককে। কিন্তু এটা কি খুব অন্যায় দাবি? শুধু ইংরেজি স্কুল নয়, আজকে দেশের সব স্কুল-মাদরাসায় টিউশন ফি একেবারে বাতিল করে দিতে পারেন। এটাই ছিল সবচাইতে মানবিক কাজ এই মুহূর্তে। একে তো ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না, তার ওপরে তাদের টিউশন ফি দিতে হবে।’ রিজভী বলেন, ‘প্রতিবাদ বন্ধ করার জন্য বিএনপির তরুণদেরকে রাতের অন্ধকার তুলে নিয়ে গুম করা হয়, স্বীকার করা হয় না। সবাই দেখেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে লোকজন টিটো হায়দারকে তুলে নিয়ে গেছে। পলিরা আজ রাত্রের অন্ধকারে গ্রেফতার হয়ে যায়। এরকম অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে করোনার মধ্যে।’তিনি বলেন, ‘বিএনপি করোনার সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানো সহ্য হচ্ছে না। এ কারণে এখন শুরু হয়েছে মিথ্যা মামলা, গুমের ধারাবাহিক বিএনপি নিধনে যে কর্মসূচি, সেই কর্মসূচি তারা অব্যাহত রেখেছে। কোনোভাবে তারা সরকারের বিরুদ্ধে কোনো সমালোচনা সহ্য করবে না। আজকে ডিজিটাল নিরাপত্তার আইনের কালো দড়ির ফাঁসি মাথার উপর লটকিয়ে রেখেছে।’ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে মহানগর, যুব দল, শ্রমিক দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, মহিলা দলের নেতারা বক্তব্য দেন। এতে বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনগুলোর দুই শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।
মানুষ মরে মরুক,আমি (সরকার) তো ঠিক আছি এটা হচ্ছে এই সরকারের নীতি:রিজভী
0
Share.