ঢাকা অফিস: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আজকে আমাদের মিডিয়াকে শক্ত হয়ে দাঁড়াতে হবে। আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে চেষ্টা করছি। শত বাধাবিপত্তি মোকাবিলা করছি। শত মামলা-মোকদ্দমা, সহকর্মীদের মৃত্যু, নেত্রীর অন্যায়ভাবে কারাবাস, নেতা নির্বাসিত, তারপরও আমরা চেষ্টা করছি। কিন্তু সমস্যা তো আমাদের একার না। আমি বারবার বলেছি, এই সমস্যা শুধু বিএনপির সমস্যা না। এটা দেশের সমস্যা, জনগণের সমস্যা। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। আগামী বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিতব্য ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচন নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় আমেরিকার নির্বাচন থেকে আওয়ামী লীগ ও নির্বাচন কমিশনের শিক্ষা নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ও নির্বাচন কমিশনের শিক্ষা নেওয়া উচিত যে নির্বাচন কমিশন কাকে বলে। আজকে আমেরিকার নির্বাচন কমিশন সব চাপের মুখেও অবিচল থেকেছে। অবিচল থেকে তারা জনগণের রায়কে সমুন্নত রেখেছে। এটাই গণতন্ত্র। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান যদি না থাকে, তাহলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতে পারে না।’ বিএনপির মহাসচিব আরো বলেন, ‘আমাদের নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী হতে হবে। বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ শক্তিশালী হতে হবে। প্রশাসনকে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ এবং জনগণের কল্যাণের জন্য কাজ করতে হবে।‘ তিনি বলেন, ‘আজকে আমেরিকার জনগণ স্বস্তি পেয়েছে। সারা পৃথিবীর মানুষ আজকে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে। একটামাত্র কারণ কর্তৃত্ববাদী যে চাপ, যে অসহায়ত্ব, সেখান থেকে তারা বেরিয়ে আসতে চায়।’মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরো বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ অনেক চাপকে পরাজিত করে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিএনএনের ওপরে কত অত্যাচার গেছে। আমরা সবাই জানি, পত্রিকায়ও এসেছে। কিন্তু তারা শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।’ বাংলাদেশের এই নির্বাচন কমিশন দিয়ে আর সম্ভব না জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এটা ধ্বংস হয়ে গেছে। ঢাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে পিস্তল ধরে নেতাদের স্ত্রীকে বলেছে, তাঁকে বলবেন যেন বাড়িতে না থাকে। সিরাজগঞ্জে বাড়ি থেকেই বের হতে দেয় না। সেখানে প্রয়াত নাসিম সাহেবের ছেলে নির্বাচন করছেন। তারা অত্যন্ত প্রভাবশালী। কাউকে নির্বাচনী প্রচার চালাতেই দিচ্ছে না। সেখানে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে, প্রচার চালানো যাচ্ছে না। ঢাকা-১৮ আসনে একই অবস্থা চলছে। তারপরও সেখানে বের হয়ে এসে প্রচার করছে। আপনারা দেখেছেন, হাজার হাজার মানুষ বেরিয়ে প্রচার করছে। আমরা অনেক আশাবাদী, কিন্তু আবার ওই আশঙ্কায় থাকি যে, ২০১৮ সালের আগের রাতে যে নির্বাচন, অন্যান্য উপনির্বাচনে যে অবস্থা, মেয়র ইলেকশনের যে অবস্থা, তাতে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। তারপরও আমরা বলব, জনগণের রুখে দাঁড়াতে হবে। তাদের অধিকারের জন্য লড়াই-সংগ্রাম করতে হবে। প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।‘ সংবাদ সম্মেলনে আরো কথা বলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ঢাকা-১৮ আসনে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক আমান উল্লাহ আমান। তিনি ঢাকা-১৮ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকদের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয় তুলে ধরেন। এ সময় তিনি হামলা-মামলারও বিবরণ দেন। এ ছাড়া বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনের বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুও সেখানে বিভিন্ন অনিয়ম ও প্রচারণায় বাধাদানের বিষয়ে তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম, কেন্দ্রীয় দপ্তরের চলতি দায়িত্বে থাকা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স প্রমুখ। ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনে ১২ নভেম্বর ভোট গ্রহণ করা হবে।
মিডিয়াকে শক্ত হয়ে দাঁড়াতে হবে : ফখরুল
0
Share.