ঢাকা অফিস: ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছিল বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার শেরে বাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকারে ফখরুল এই দাবি করেন। ফখরুল বলেন, ‘৭ নভেম্বর সিপাহী জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমেই বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছিল। যে কারণে ৩ নভেম্বর স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে গৃহবন্দি করা হয়েছিল। সেই চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দিয়ে এদেশের দেশপ্রেমিক সিপাহী এবং জনগণ ৭ নভেম্বর জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করে দেশে সত্যিকার অর্থে স্বাধীনতাকে সুসংহত করেন। একই সঙ্গে গণতন্ত্রের যে পথ, সেই পথের নতুন সূচনা করেন।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রকৃত পক্ষে ৭ নভেম্বর থেকেই এদেশে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল এবং তার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শহীদ জিয়াউর রহমান। এই ঐতিহাসিক দিবসটি স্মরণ করার জন্য আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে জিয়াউর রহমানের মাজারে পুস্পস্তবক অর্পণ ও তার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য এসেছি।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকের এই দিনটি বর্তমান বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৭৫ এর পূর্বে দেশে যে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, জনগণের অধিকারকে হরণ করা হয়েছিল। আজকে আবার ঠিক একই কায়দায় বাংলাদেশের জনগণের অধিকারকে হরণ করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে আওয়ামী লীগ জোর করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। সেজন্য আমরা আজকে শপথ নিয়েছি, গণতন্ত্রকে উদ্ধার করবো, মিথ্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব এবং এই গণতন্ত্রের সংগ্রামকে অবশ্যই জয়ী করবো ইনশাল্লাহ।’ স্বাস্থ্যবিধি মেনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী দলের প্রতিষ্ঠাতার কবরে পুস্পমাল্য অর্পণ করে প্রয়াত নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তারা নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টায় মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, কৃষক দল, ছাত্রদল, তাতী দল ও মৎস্যজীবী দলসহ অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে পুস্পমাল্য অর্পণ করা হয়। এদিকে দিবসটি উপলক্ষ্যে শনিবার ভোরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে দলীয় অফিসে দলীয় পতাকা উত্তালন ও জিয়াউর রহমান ছবি সম্বলিত পোস্টার প্রকাশ করেছেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এছাড়া ভার্চুয়াল সভাও করে দলটি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান সপরিবারের নিহত হওয়ার পর সেনাপ্রধানের দায়িত্বে আসেন জিয়াউর রহমান। এরপর মুক্তিযুদ্ধে অন্যতম সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীতে একটি অভ্যুত্থান হয়, জিয়া হন গৃহবন্দী। ৭ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের আরেক সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে পাল্টা অভ্যুত্থানে আটকাবস্থা থেকে মুক্ত হন জিয়া। এর মধ্য দিয়ে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন জিয়া। বিএনপি এই দিনকে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস, আওয়ামী লীগ মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস এবং জাসদ সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।
মিথ্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব : ফখরুল
0
Share.