স্টাফ রিপোর্টার: বরেণ্য অভিনেতা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক ও বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আলী যাকেরের মরদেহ রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে নেওয়া হয়েছে। সেখানে আলী যাকেরকে শ্রদ্ধা জানাতে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিরাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত হয়েছেন। আজ শুক্রবার বাদ আসর বনানী কবরস্থানের মসজিদে জানাজা শেষে তাঁকে দাফন করা হবে। এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ তথ্য জানিয়েছেন আলী যাকেরের ছেলে ইরেশ যাকের। ইরেশ লিখেছেন, ‘চার বছর ক্যানসারের যুদ্ধের পর বাবা আজকে সকাল ৬:৪০ এ (৬টা ৪০ মিনিটে) চলে গেল। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। উনি যে দোয়া ও ভালোবাসা পেয়েছেন তার জন্য আমরা হৃদয়ের গভীর থেকে কৃতজ্ঞ। মৃত্যুর দুই দিন আগে বাবার করোনা শনাক্ত হয়। বাবার জানাজা আজ বাদ আসর বনানী গোরস্থান মসজিদে পড়া হবে।’ এর আগে আলী যাকেরের মালিকানাধীন বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটির পক্ষ থেকে এক খুদেবার্তায় জানানো হয়েছিল, দাফনের আগে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আলী যাকেরের মরদেহ বেলা ১১টায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে নেওয়া হবে। দীর্ঘ চার বছর ক্যানসারে আক্রান্ত আলী যাকের রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে আজ শুক্রবার ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আলী যাকের মৃত্যুবরণ করেন। ৭৬ বছর বয়সী বরেণ্য অভিনেতা আলী যাকেরের মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অভিনেতা ও সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন, গত পরশুদিন হঠাৎ করে ফের শরীরের অবস্থার অবনতি হলে বুধবার ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয় আলী যাকেরকে। সেখানে নমুনা পরীক্ষার পর সেদিনই তাঁর করোনা পজিটিভ আসে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ শুক্রবার ভোরে না ফেরার দেশে চলে গেছেন আলী যাকের। ১৯৪৪ সালের ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের রতনপুর ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন আলী যাকের। গত ৬ নভেম্বর নিজ বাসায় ঘরোয়া আয়োজনে ৭৬তম জন্মদিন পালন করেন এই অভিনেতা। ১৯৬০ সালে সেন্ট গ্রেগরি থেকে ম্যাট্রিক পাস করে নটরডেমে ভর্তি হন আলী যাকের। সেখান থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন তিনি। এরপর সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক করেন। অনার্স পড়াকালেই ছাত্ররাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন। ছাত্র ইউনিয়ন করতেন। আলী যাকের তাঁর অভিনয়জীবন শুরু করেন ১৯৭২ সালে। আরণ্যক নাট্যদলের হয়ে মামুনুর রশীদের নির্দেশনায় মুনীর চৌধুরীর ‘কবর’ নাটকটিতে প্রথম অভিনয় করেন, যার প্রথম প্রদর্শনী হয়েছিল ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনে। এরপর জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘বহুব্রীহি’ ও ‘আজ রবিবার’-এ অভিনয় করে আলোচনায় আসেন। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক পেয়েছেন এই গুণীজন। বর্তমানে আলী যাকের বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটির কর্ণধার। আলী যাকের ১৯৭৫ সালে অভিনেত্রী সারা যাকেরকে বিয়ে করেন।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে আলী যাকেরকে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা
0
Share.