মৃত্যুর মিছিল রোধে প্রয়োজন ‘কঠোর লকডাউন’ : ন্যাপ

0

ঢাকা অফিস: দেশে করোনা মহামারি ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় মৃত্যুর মিছিল রোধে কঠোর লকডাইনের কোন বিকল্প নাই। তাই সকল কিছু খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করে কমপক্ষে আগামী ৩০ দিন কঠোর লকডাউন কার্যকর করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ। বৃহস্পতিবার (৪ জুন) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এ আহ্বান জানান। তারা বলেন, সরকারি তথ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত দেশে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন ৫৫ হাজারেরও বেশি মানুষ আর মারা গেছেন প্রায় ৮শত জন। আইইডিসিআর ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের ধারনা করোনা রোগীর সংখ্যা শনাক্তের চেয়ে ৪০ গুণ বেশি। সরকারি প্রতিদিনের প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, মোট টেস্টের ২০-২৫% করোনায় আক্রান্ত। তার অর্থ দাড়ায় টেস্টের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে রোগীর সংখ্যাও নিশ্চিতভাবে আরো বৃদ্ধি পাবে। আমাদের টেস্টের সক্ষমতা প্রতিদিন ৩০ হাজার। অথচ এই সক্ষমতার অর্ধেকও আমরা এখনো কার্যকর করতে পারিনি। অথচ এরকম এক ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ৩১ মে থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ‘সীমিত পরিসরে’ অফিস, গণপরিবহনসহ সকল কিছু খুলে দেয়া হলো। যা আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত বলে ইতিমধ্যে প্রমানিত হচ্ছে। বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, ‘সীমিত পরিসরে’ গণপরিবহন চালুর খেসারত হিসেবে সাধারণ ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য আন্ত:জেলা পরিবহনে এবং গণপরিবহনে শতকরা ৬০ ভাগ ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এ যেন ‘বোঝাও উপর ভাড়ার আঁটি’। এ ধরনের সিদ্ধান্ত জনস্বার্থ বিরোধী এবং নিন্দনীয়। আর এদিনই দেশে সর্বোচ্চ করোনা শনাক্ত ও মৃত্যু হয়।  রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরেও সংক্রমণ বিপদজনকভাবে বাড়ছে। একজন শরণার্থী এরই মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। তাই এ রকম জটিল অবস্থায় মহামারি মোকাবেলায় গঠিত ‘জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি’র পরামর্শ ছিল আরো বেশি কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার। তাদের পরামর্শকে বিবেচনা না করে অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে সচল করার সিদ্ধান্ত খুবই আত্মঘাতী।  ন্যাপ নেতৃদ্বয় আরো বলেন, সর্বাত্মক ‘কঠোর লকডাউন’ বলবত করতে সরকার যত দেরি করবে, পরিস্থিতি ততই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। মৃত্যুর মিছিল ততই দীর্ঘ হতে থাকবে। লকডাউন কার্যকর করতে সামরিক বাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রয়োজনীয় ক্ষমতা ও এখতিয়ার দিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। একইসঙ্গে সামরিক বাহিনীসহ রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও সংস্থাসমূহের মাধ্যমে লকডাউন ফলপ্রসূূ করতে আগামী ৩০ দিনের জন্য দেশের সকল মধ্যবিত্ত-নিম্ন মধ্যবিত্ত, শ্রমজীবী-দিনমজুর ও অভাবী পরিবারসমূহের কাছে প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী পৌঁছানোও নিশ্চিত করতে হবে সরকারকে। তারা বলেন, করোনা মহামারির বিপজ্জনক সংক্রমণ ও মৃত্যুর সময় বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এবং দেশে করোনা সংক্রান্ত পরামর্শকদের মতামত-পরামর্শকে পাত্তা না দিয়ে বাস্তবে সব কিছু খুলে দিয়ে সরকার একদিকে চূড়ান্ত দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। অন্যদিকে, দেশের মানুষকে ব্যাপক সামাজিক সংক্রমণ আর মৃত্যুর ঝুঁকির দিকে ঠেলে দিয়েছে। জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধ না থাকায় এবং কোনো পর্যায়ে সরকারের জবাবদিহিতা না থাকায় তারা একের পর এক স্বেচ্ছাচারী ও পরষ্পর বিরোধী পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে। নেতৃদ্বয় বলেন, প্রতিদিনই তো সংক্রমণ বাড়ছে, আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে, চরে খাও, বাঁচলে বাঁচো, মরলে মরো- এটাই হচ্ছে সরকারের বর্তমান নীতি।

Share.