ডেস্ক রিপোর্ট: করোনায় আক্রান্তদের সেবা শুশ্রূষা করে বিভিন্ন দেশে প্রশংসিত হচ্ছে নার্সরা। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন আইসিইউতে তাকে সেবাদানকারী নার্সদের। সবচেয়ে বড় কথা, এই ভয়াবহ সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া করোনা রোগীদের শয্যাপাশে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকছেন এই নার্সরাই। বর্ধিত বেতন কিংবা সামাজিক সম্মানের দাবি করছেন না তারা। তবু মেক্সিকোতে জনসাধাণের কাছে আতঙ্ক, ঘৃণা আর অসম্মানের পাত্র হয়ে উঠছেন এ নার্সরাই। ৫৯ বছর বয়সী লেজিয়া জানিয়েছেন তার তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা। ২০০৯ সালে সোয়াইন ফ্লু আর ২০১৩ সালে কলেরার প্রাদুর্ভাবের সময় কাজ করেছেন তিনি। কিন্তু কখনো এবারের অভিজ্ঞতার মুখে পড়েননি। কিছু লোক এবার এমন অদ্ভুত আচরণ দেখাচ্ছে, যা রীতিমতো ভয়ঙ্কর। ইউকাতানের মেরিডার এই বাসিন্দা বলেন, ৮ এপ্রিল কাজ শেষে বাসায় ফিরছিলেন তিনি। এসময় পেছন থেকে হোন্ডায় চড়া এক লোক তার পিঠে গরম কফি ছুঁড়ে মারে এবং একই সঙ্গে ‘ইনফেকটেড’ বলে চেঁচাতে চেঁচাতে দ্রুত সরে পড়ে।লেজিয়া বলে, ভাগ্য ভাল, আমি খুব বেশি আহত হইনি। কিন্তু হলেও হতে পারতাম।মেক্সিকান সরকার হিসাব করে জানিয়েছে, ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত দেশটিতে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, বিশেষ করে নার্সদের ওপর কম পক্ষে ৪৭টি হামলা ও হেনস্তার ঘটনা ঘটেছে। প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে বলেও তাদের অনুমান। বাসে নার্সদের উঠতে বাধা দান, কোভিড-১৯ রোগিদের হাতে চিকিৎসকদের লাঞ্ছিত করার মতো ঘটনা ঘটছেই প্রায় সময়। লেজিয়া বলেন, এসব ঘটনা তাকে ব্যথিত করে। মানুষ কী করে এতটা নির্দয় হয়ে উঠতে পারে, অবাক হয়ে সেটাই ভাবি।এর মধ্যে কিছু কিছু হামলা অবশ্য স্বাস্থ্যকর্মীদের ভুলের কারণেও হয়েছে। যেমন কোথাও জীবাণুমুক্ত করতে গিয়ে ভুল করে ফেললে স্থানীয় জনতার মধ্যে মাথাগরম টাইপের কেউ কেউ হয়তো তাদের ওপর চড়াও হয়েছে।নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ আলোন্দ্রা টরেসের কথা শোনা যাক। নিজের শহর গুয়াদালাজারায় কুকুর নিয়ে রাস্তায় হাঁটতে বেরিয়েছিলেন তিনি। এমন সময় কেউ একজন তার দিকে ব্লিচিং পাউডরগোলা পানি ছুড়ে মারে।নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ আলোন্দ্রা নিশ্চয় ক্লিনিকে করোনা রোগীদের চিকিৎসা করেন না। তবু তার গায়ে হাসপাতালের ইউনিফর্ম দেখে হয়তো মাথা খারাপ হয়ে উঠেছিল আতঙ্কিত কোনো একজনের। তিনি বলেন, পানি আমার চোখে পড়েছিল আর আমার চোখ যেন জ্বলে যাচ্ছিল।শুধু ডাক্তার-নার্সরাই নন, আতঙ্কিত সাধারণ মানুষদের দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীরাও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, আমি বাসে উঠলে কিছু লোক ‘নোংরা’ ‘নোংরা’ বলে গালাগাল শুরু করে এবং আমাকে বাস থেকে ঠেলে নামিয়ে দিতে চায়।
মেক্সিকোতে চরম হেনস্তার শিকার ডাক্তার-নার্সরা
0
Share.