স্পোর্টস ডেস্ক: সবার নজর আটকে ছিল পিএসজির বেঞ্চে, কখন নামবেন লিওনেল মেসি। শেষ হল অপেক্ষা, মাঠে নামলেন সাবেক বার্সেলোনা তারকা। তার আগেই অবশ্য জোড়া গোল করে ম্যাচের গতিপথ ঠিক করে দেন কিলিয়ান এমবাপে। রাঁসের মাঠে রবিবার রাতে লিগ ওয়ানের ম্যাচটি ২-০ গোলে জিতেছে মাওরিসিও পচেত্তিনোর দল। দুই-তৃতীয়াংশের বেশি সময় বল দখলে রেখে গোলের উদ্দেশে মোট ১২টি শট নেয় পিএসজি, যার মাত্র তিনটি ছিল লক্ষ্যে। কম যায়নি প্রথম তিন রাউন্ডেই ড্র করে আসা রাঁসও। তাদের ১১ শটের চারটি ছিল লক্ষ্যে। দুই পক্ষের শক্তির বিবেচনায় পিএসজির জয়টা প্রত্যাশিতই ছিল। মূল ফোকাসটা ছিল বার্সেলোনায় ২১ বছর কাটিয়ে আসা মেসির অভিষেক। এ মাসের মাঝামাঝি যা কারোর ভাবনাতেও ছিল না, সেটিই আনুষ্ঠানিকভাবে বাস্তবে ধরা দিল। ক্লাব ক্যারিয়ারে বার্সেলোনা ব্যতীত অন্য কোনো জার্সিতে মাঠে নামলেন আর্জেন্টাইন তারকা। গোল করে বা করিয়ে নতুন শুরুটা রাঙাতে না পারলেও বল পায়ে পুরনো জাদু দেখানোর আভাস ঠিকই দিয়েছেন তিনি। তারকায় ঠাসা পিএসজি নিজেদের গুছিয়ে নিতে সময় নেয় কিছুটা। প্রথম আট মিনিটে যে কয়েকটি আক্রমণ হয়, সবকটিই রাঁসের। তার কোনোটিই অবশ্য প্রতিপক্ষকে তেমন ভাবনায় ফেলতে পারেনি। দশম মিনিটে প্রথম আক্রমণ শানায় পিএসজি। প্রথম ছোঁয়ায় বল নিয়ন্ত্রণে নিলেও পাশের জালে মারেন এমবাপে। ছয় মিনিট পর তার নৈপুণ্যেই এগিয়ে যায় শিরোপাপ্রত্যাশীরা। ডান দিক থেকে আনহেল দি মারিয়ার ক্রসে হেডে গোলটি করেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে জালের দেখা পেলেন তিনি। প্রথমার্ধের বাকি সময়ে বল দখলে একচেটিয়া আধিপত্য করে পিএসজি। তারপরও বিরতির আগে তাদের আর কোনো সুযোগ তৈরি করতে না পারাটা ছিল হতাশাজনক। উল্টো ৪২তম মিনিটে তো বিপদেই পড়তে বসেছিল দলটি। ২০ গজ দূর থেকে মোরেতো কাসামার আচমকা শট পোস্টের ওপরের দিকে লাগলে বেঁচে যায় গতবারের রানার্সআপরা। ৫১তম মিনিটে মার্শাল মুনেতসি খুব কাছ থেকে বল জালে পাঠালে উল্লাসে মাতে রাঁস। তবে ভিএআরের সাহায্যে অফসাইডের বাঁশি বাজান রেফারি। এরপরও বেশ খানিকটা সময় চাপ ধরে রেখেছিল স্বাগতিকরা, কিন্তু সুবিধা করতে পারেনি। ৬৩তম মিনিটে দারুণ এক প্রতি-আক্রমণে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন এমবাপে। ডান দিক থেকে আক্রমণে ওঠা আশরাফ হাকিমি কিছুটা এগিয়ে আসা গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে দূরের পোস্টে বল বাড়ান, ছুটে গিয়ে অনায়াসে টোকায় বাকি কাজ সারেন বিশ্বকাপ জয়ী তারকা। কোপা আমেরিকার ফাইনালের দেড় মাসের বেশি সময় পর প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে আলো ছড়াতে পারেননি নেইমার। তিন মিনিট পর তাকে তুলে মেসিকে নামান কোচ। গ্যালারি থেকে ভেসে আসছিল প্রিয় তারকার নামে চিৎকার। মাঠে নামার পাঁচ মিনিট পর একজনকে এড়িয়ে এগিয়ে যাওয়ার পথে ফাউলের শিকার হন মেসি। কিছুক্ষণ পর প্রতিপক্ষের থেকে বল কেড়ে বাড়ান এমবাপেকে। তিনি নতুন সতীর্থকে ফিরতি পাস দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন; কিন্তু মাঝপথে বাধা পায়। শেষ দিকে আরও একবার কড়া ট্যাকলের শিকার হন মেসি। বাকি সময়ে আর তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কোনো পক্ষই। মেসি ছাড়াও আলোচনায় আছেন এমবাপে। গণমাধ্যমে গুঞ্জন, রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার ইচ্ছাতেই পিএসজির নতুন চুক্তিতে রাজি হচ্ছেন না তিনি। ক্লাবটির পক্ষ থেকেও মাঝে বলা হয়েছে, চলে যেতে চান এমবাপে। রিয়ালও নাকি বড় অঙ্কের প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে। তবে মাঠে তার পারফরম্যান্সে সেসবের কোনো ছাপ ছিল না। শতভাগ নিংড়ে দিয়ে তিনিই জয়ের নায়ক। চার ম্যাচের সবকটি জিতে ১২ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষেই পিএসজি। ১০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে অঁজি।
মেসির অভিষেকে পিএসজির জয়
0
Share.