যে ১৬টি দেশে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে

0

ডেস্ক রিপোর্ট: করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে হলেও ক্রমেই তা ছড়িয়ে পড়ছে অন্যান্য দেশেও। ইতোমধ্যে অন্তত ১৬টি দেশে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। চীনের বাইরে অস্ট্রেলিয়া, কম্বোডিয়া, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, মালয়েশিয়া, নেপাল, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, যুক্তরাষ্ট্র ও ভিয়েতনামেও এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শনাক্ত করা হয়েছে।

চীন : চীনে করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৩২ জনে দাঁড়িয়েছে। আর আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৯৭৪। ২৯ জানুয়ারি বুধবার দেশটির কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। দেশটিতে মৃতদের বেশিরভাগই করোনার উৎপত্তিস্থল হুবেই প্রদেশের উহান শহরের বাসিন্দা। হুবেই ছাড়াও রাজধানী বেইজিংসহ ২৯টি প্রদেশে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিজ দেশের নাগরিকদের বিদেশ ভ্রমণ স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছে চীন। দেশটির জাতীয় অভিবাসন বিভাগের এক বিবৃতিতে এ  ব্যাপারে নাগরিকদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, চীনা নাগরিক ও বিদেশিদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিশ্চিতের জন্যই জনগণকে বিদেশ সফর স্থগিতের আহ্বান জানানো হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়া:  অস্ট্রেলিয়ায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনের এ ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। আক্রান্তদের সবাই উহান থেকে দেশে ফিরেছিল। সিডনি ও মেলবোর্নের হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা করা হচ্ছে।

কম্বোডিয়া :  কম্বোডিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত ২৭ জানুয়ারি প্রথমবারের মতো দেশটিতে ৬০ বছরের এক ব্যক্তির করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কথা জানায়। চীনের উহান শহর থেকে ফেরা ওই ব্যক্তিকে বিচ্ছিন্ন একটি ঘরে রাখা হয়েছে। বর্তমানে তার অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানা গেছে।

জাপান:  জাপানের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ২৮ জানুয়ারি দেশটির পঞ্চম ও ষষ্ঠ করোনা ভাইরাস সংক্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আক্রান্তদের মধ্যে ৬০ বছরের এক ব্যক্তি চীন সফরে না গেলেও সম্প্রতি দেশটির পর্যটকরা জাপানে তার বাসে উঠেছিল।

মালয়েশিয়া:  মালয়েশিয়া রবিবার দেশটিতে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত চতুর্থ ব্যক্তির সন্ধান পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আক্রান্ত চারজনের প্রত্যেকেই চীনের উহান শহরের বাসিন্দা। নতুন বছরের ছুটি কাটাতে সিঙ্গাপুর হয়ে তারা মালয়েশিয়ায় গিয়েছিলেন।

নেপাল:  নেপালে চীনের উহান শহর থেকে আসা ৩২ বছরের এক ব্যক্তির শরীরে এ ভাইরাস পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে তাকে আলাদা করে রাখা হয়। একপর্যায়ে সুস্থ হলে তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

সিঙ্গাপুর:  সিঙ্গাপুরে এখন পর্যন্ত সাতজনের করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কথা জানা গেছে। তারা সবাই চীনের উহান থেকে এসেছিল।

দক্ষিণ কোরিয়া:  দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম গত ২৭ জানুয়ারি দেশটির চতুর্থ করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কথা জানায়। জাতীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, আক্রান্তদের মধ্যে তিন জন পুরুষ এবং একজন নারী। তারা সবাই উহান শহর থেকে দেশটিতে ভ্রমণে গিয়েছিলেন

শ্রীলঙ্কা:  শ্রীলঙ্কার কর্তৃপক্ষ গত ২৭ জানুয়ারি প্রথম একজন নারীর এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কথা নিশ্চিত করে। ৪৩ বছরের ওই নারী সম্প্রতি চীনের হুবেই প্রদেশ থেকে দেশটিতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। কলম্বোর কাছেই সংক্রামক রোগ বিষয়ক একটি হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

তাইওয়ান:  তাইওয়ানে এখন পর্যন্ত সাতজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। সর্বশেষ আক্রান্ত দুইজন ৭০ বছরের দুই চীনা নাগরিক। গত ২২ জানুয়ারি একটি ট্যুর গ্রুপের সদস্য হিসেবে তারা তাইওয়ানে প্রবেশ করেন।

থাইল্যান্ড:  চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে থাইল্যান্ডে। ২৮ জানুয়ারি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১৪ জনের এ ভাইরাস সংক্রমণের ব্যাপারে তারা নিশ্চিত হয়েছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আক্রান্ত সর্বশেষ ছয়জনের সবাই চীনের উহান শহরের বাসিন্দা। তাদের মধ্যে পাঁচজন একই পরিবারের সদস্য। তাদের বয়স ৬ থেকে ৭০-এর মধ্যে।

ভিয়েতনাম:  ভিয়েতনাম এ পর্যন্ত ভাইরাস সংক্রমণের দুইটি ঘটনা নিশ্চিত করেছে। উহান শহরের একজন আক্রান্ত ব্যক্তি এই মাসের শুরুর দিকে দেশটির হো চি মিন শহরে ভ্রমণ করেছিলেন। তার কাছ থেকেই ভাইরাসটি ছেলের শরীরে সংক্রমিত হয়।

কানাডা:  কানাডা গত ২৭ জানুয়ারি সম্প্রতি সস্ত্রীক উহান সফরকারী এক ব্যক্তির শরীরে এ ভাইরাস সংক্রমণের কথা নিশ্চিত করে। পরে তার স্ত্রীর শরীরেও এ ভাইরাস পাওয়া যায়।

যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্র পাঁচজনের শরীরে এ ভাইরাস পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে। তারা সবাই সম্প্রতি উহান থেকে দেশে প্রবেশ করেন। আক্রান্তদের মধ্যে দুইজন ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা। বাকি তিনজন আরিজোনা, শিকাগো ও ওয়াশিংটনের বাসিন্দা।

ফ্রান্স:  করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ইউরোপের প্রথম দেশ ফ্রান্স। দেশটিতে তিনজন আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আক্রান্তদের একজন প্যারিস এবং একজন বোর্দো শহরের বাসিন্দা। এছাড়া এই দুইজনের একজনের এক নিকট আত্মীয়ও সংক্রমিত হয়েছেন। ওই তিনজনের প্রত্যেকেই সম্প্রতি চীন সফর করেন। তাদের আলাদাভাবে রাখা হয়েছে।

জার্মানি:  জার্মানি গত ২৮ জানুয়ারি দেশটির বাভারিয়া অঙ্গরাজ্যে এক ব্যক্তির শরীরে এ ভাইরাস পাওয়ার কথা নিশ্চিত করে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে রাজ্যের স্টার্নবার্গ এলাকায় আলাদা করে রাখা হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে জার্মানি সফরকারী একজন চীনা সহকর্মীর কাছ থেকে তার শরীরে এ ভাইরাস সংক্রমিত হয়।

Share.