ডেস্ক রিপোর্ট: মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তিন দিন পেরিয়ে গেলেও ভোট গণনা শেষ না হওয়ায় ফল ঘোষণায়ও দেরি হচ্ছে। তবে জয়ের খুব কাছে পৌঁছে গেছেন ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী জো বাইডেন। এদিকে, নির্বাচন নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একদিকে ভোট গণনা বন্ধ করে পুনরায় গণনার দাবি করছেন ট্রাম্প সমর্থকেরা। অন্যদিকে, প্রতিটি ভোট গণনার দাবিতে বিক্ষোভ করছেন বাইডেন সমর্থকেরা। ভোট গণনা নিয়ে এমন পরিস্থিতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে রিপাবলিকানরা যথেষ্ট সহযোগিতা করছেন না দাবি করে চটেছেন ট্রাম্পের দুই ছেলে। এর মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বড় ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র টুইটারে বলছেন, ভোট গণনা নিয়ে কারচুপি রুখতে বা প্রতিবাদ জানাতে রিপাবলিকানদের অনেকেই সরব নন। এ ছাড়া রিপাবলিকানদের কেউ কেউ প্রতিবাদ জানিয়ে টুইটারে সরব না থাকায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তিনি। জর্জিয়ায় ট্রাম্প সমর্থকদের সমাবেশে যোগ দিয়ে ট্রাম্প জুনিয়র আরো বলেন, ‘ব্যাটলগ্রাউন্ড খ্যাত অঙ্গরাজ্যগুলোতে ভোট গণনায় অস্বচ্ছতা ছিল। যদি এমন অভিযোগ ডেমোক্র্যাটরা মেনে না নেয়, তাহলে এটা স্পষ্ট যে এই কারচুপির সঙ্গে ডেমোক্র্যাটরা জড়িত। অবাধ ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় জয়-পরাজয় নির্ধারণ না হলে মার্কিন জনগণ হিসেবে আমার মতো অন্যরাও এই ভোট মানবে না।’ ট্রাম্পের আরেক ছেলে এরিক ট্রাম্প টুইটারে লেখেন, ‘রিপাবলিকানরা কোথায়? নিজেদের মেরুদণ্ড সচল রাখুন। জালিয়াতির বিরুদ্ধে লড়াই করুন। আপনাদের এমন আচরণ আমাদের ভোটাররা মনে রাখবে।’ এদিকে, ট্রাম্পের ডাকযোগের ব্যালট গণনা বন্ধের দাবিকে অন্যায্য, বিপজ্জনক এবং দায়িত্বহীন হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের সাবেক আইন কর্মকর্তা লিসা গ্রেইভস। লিসা গ্রেইভস বলেন, ‘সংবিধানকে অসম্মান করেন, এমন ব্যক্তির পক্ষেই ভোট গণনা বন্ধের মতো অসাংবিধানিক, অন্যায্য, বিপজ্জনক এবং অসংগত দাবি করা সম্ভব। আইনের প্রতি যে ট্রাম্পের কোনো শ্রদ্ধা নেই, এটা স্পষ্ট। পরাজয়ের আভাস পেয়ে ভোট গণনা বন্ধের জন্যে মামলা করে প্রতিটি নাগরিকের ভোট গণনার অধিকারকে অসম্মান করেছেন ট্রাম্প।’ যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এই উপসহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গণনা বন্ধের দাবি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে আগে কখনো শোনা যায়নি। প্রতিটি ভোট গণনা হবে, এটাই গণতন্ত্র। ব্যালট গণনার জন্য সংবিধানে পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হয়েছে।’ ফল ঘোষণার বাকি থাকা পাঁচ অঙ্গরাজ্যের চারটিতেই ট্রাম্প এগিয়ে থাকলেও নেভাদায় এগিয়ে রয়েছেন বাইডেন। ৫০টি অঙ্গরাজ্য ও ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়ার মধ্যে নেভাদা, পেনসিলভানিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা, জর্জিয়া ও আলাস্কার ভোটের ফলাফল এখনো মেলেনি। এগুলোতে এখনো ভোট গণনা চলছে। এর মধ্যে পেনসিলভানিয়ায় ২০টি, নর্থ ক্যারোলাইনায় ১৫টি, জর্জিয়ায় ১৬টি, আলাস্কায় তিনটি ও নেভাদায় ছয়টি মহামূল্যবান ইলেকটোরাল ভোট আছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজের প্রজেকশন অনুযায়ী, নেভাদায় ৮৪ শতাংশ ভোট গণনা হয়েছে, যার ৪৯ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন বাইডেন। আর ট্রাম্প পেয়েছেন ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট। এখানে জয় পেলে আকাঙ্ক্ষিত ছয়টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোটই হতে পারে বাইডেনের হোয়াইট হাউসে যাওয়ার চাবিকাঠি। অন্যদিকে আবারও প্রেসিডেন্ট হতে হলে ট্রাম্পকে নেভাদাসহ পাঁচটি অঙ্গরাজ্যের সব (৬০টি) ইলেকটোরাল ভোটই পেতে হবে।
রিপাবলিকানদের ওপর চটেছেন ট্রাম্পের দুই ছেলে
0
Share.