স্পোর্টস ডেস্ক: ম্যাচের শুরুতেই পর্তুগালের জালে বল। ধাক্কা কাটিয়ে উঠবে কি, ত্রিশ মিনিটের মধ্যে আবারও খেয়ে বসে গোল। ব্যবধান কমিয়ে কোণঠাসা দলকে পথে ফেরালেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। শেষ ২০ মিনিটে প্রতিপক্ষ শিবিরে এক জন কম থাকায় সুয়োগও ছিল বেশ। তবে উজ্জীবিত ইউক্রেনের বিপক্ষে শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেনি ইউরোপ চ্যাম্পিয়নরা। ঘরের মাঠে সোমবার রাতে পর্তুগালকে ২-১ গোলে হারিয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের মূল পর্ব নিশ্চিত হয়ে গেছে ইউক্রেনের। শুধু তাই নয়, দারুণ এই জয়ে ‘বি’ গ্রুপের শীর্ষস্থানও নিশ্চিত হয়ে গেছে আন্দ্রি শেভচেঙ্কোর শিষ্যদের। ইউক্রেনের উৎসবের রাতে ফিকে হয়ে গেছে রোনালদোর দারুণ অসাধারণ এক কীর্তি গড়ার আনন্দ। ব্যবধান কমানো গোলটি দিয়ে ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে ৭০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেন পাঁচবারের বর্ষসেরা ফুটবলার। ম্যাচ শুরুর ৭০ সেকেন্ডের মাথায় প্রথম আক্রমণেই পর্তুগালের রক্ষণে ভীতি ছড়ায় ইউক্রেন। ডিফেন্ডারদের পেছনে ফেলে ডি-বক্সে ঢুকে পড়লেও শেষ পর্যন্ত গোলরক্ষক বরাবর দুর্বল শট নিয়ে বসেন রোমান ইয়ারেমচুক। চার মিনিট পর কাঙ্ক্ষিত গোল পেয়ে যায় স্বাগতিকরা। কর্নারে শেরি ক্রিস্টোভের হেড ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়েছিলেন গোলরক্ষক রুই পাত্রিসিও; তবে বিপদমুক্ত করতে পারেননি। আলগা বল গোলমুখে পেয়ে জালে ঠেলে দেন ইয়ারেমচুক। শুরুতে গোল খাওয়ার ধাক্কা সামলে অল্প সময়ের মধ্যে বেশ কয়েকটি ভালো পাল্টা আক্রমণ করে পর্তুগিজরা। তবে প্রথম ছয় রাউন্ডে মাত্র একটি গোল হজম করা ইউক্রেনের জমাট রক্ষণ ভাঙতে পারেনি তারা। উল্টো ২৭তম মিনিটে দ্বিতীয় গোল খেয়ে বসে ইউরোপ চ্যাম্পিয়নরা। বাঁ দিক থেকে মাইলেঙ্কোর দারুণ ক্রস ডি-বক্সে পেয়ে প্রথম ছোঁয়ায় প্লেসিং শটে ঠিকানা খুঁজে নেন ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেডের ফরোয়ার্ড আন্দ্রি ইয়ারমোলেঙ্কো। প্রথম ৩০ মিনিটে দুটি ফ্রি-কিকে দুর্বল শট নেওয়া রোনালদো ৪১তম মিনিটে আবারও সরাসরি লক্ষ্যে শট নেন। এ যাত্রায় বল ক্রসবার ঘেঁষে বাইরে চলে যায়। দ্বিতীয়ার্ধের ষষ্ঠ মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে রোনালদোর জোরালো শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান গোলরক্ষক। ৭২তম মিনিটে অবশেষে লড়াইয়ে ফেরা গোলের দেখা পায় পর্তুগাল। আর জোড়া ধাক্কা খায় ইউক্রেন। প্রতিপক্ষের একটি আক্রমণ ডি-বক্সে তারাস স্তেপানেঙ্কো স্লাইড করে ঠেকাতে গেলে বল তার হাতে লাগে। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি, সঙ্গে এই মিডফিল্ডারকে দেখান দ্বিতীয় হলুদ কার্ড। বুলেট গতির স্পট কিকে ব্যবধান কমান রোনালদো। এই নিয়ে ইউরো বাছাইয়ে টানা চার ম্যাচে জালের দেখা পেলেন রোনালদো। এই সময়ে তার গোল হলো সাতটি, জাতীয় দলের হয়ে হলো ৯৫টি। যোগ করা সময়ে পরপর দুই মিনিটে দারুণ দুটি সুযোগ তৈরি করেছিল পর্তুগাল। কিন্তু রোনালদোর হেড গোলরক্ষক ঠেকানোর পর দানিলোর প্রচেষ্টা ক্রসবারে লেগে ফিরলে হারের হতাশায় মাঠ ছাড়তে হয় উয়েফা নেশন্স লিগের শিরোপাধারীদের। সাত ম্যাচে ছয় জয় ও এক ড্রয়ে শীর্ষস্থান নিশ্চিত করা ইউক্রেনের পয়েন্ট ১৯। এক ম্যাচ কম খেলা পর্তুগাল ৮ পয়েন্ট কম নিয়ে আছে দ্বিতীয় স্থানে। লিথুয়ানিয়ার মাঠে ২-১ গোলে জেতা সার্বিয়া ছয় ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে আছে তিন নম্বরে। মূল পর্বে ওঠার লড়াইয়ে ভালোভাবেই আছে তারা। ‘এ’ গ্রুপে বুলগেরিয়ার মাঠে ৬-০ গোলে জেতা ইংল্যান্ড ছয় ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে আছে শীর্ষে। ৩ পয়েন্ট কম নিয়ে দুই নম্বরে আছে চেক রিপাবলিক। ঘরের মাঠে মন্টেনেগ্রোকে ২-০ গোলে হারানো কসোভো ১১ পয়েন্ট নিয়ে আছে তৃতীয় স্থানে। মূল পর্বে ওঠার সম্ভাবনা আছে তাদেরও। ‘এইচ’ গ্রুপে ফ্রান্সের মাঠে ১-১ গোলে ড্র করে ফিরেছে তুরস্ক। গ্রুপের অষ্টম রাউন্ড শেষে দুই দলের পয়েন্ট সমান ১৯; তবে মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে শীর্ষে আছে তুর্কিরা। অ্যান্ডোরাকে ২-০ গোলে হারিয়ে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে আছে আইসল্যান্ড। আলবেনিয়ার পয়েন্ট ১২।
রোনালদোর ৭০০ ছোঁয়ার ম্যাচে পর্তুগালের হার, মূল পর্বে ইউক্রেন
0
Share.