ডেস্ক রিপোর্ট: ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি সকালেই ঘোষণা হয় চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরের অনির্দিষ্টকালের লকডাউনের। মানুষের শরীরে ভয়াবহ করোনা ভাইরাস শনাক্তের কয়েকদিনের মধ্যেই লকডাউন ঘোষণা করা হয় এ শহরে। ধীরে ধীরে এ ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে পুরো দেশে। শুধু চীনেই আক্রান্ত হয় ৫ কোটি ৬০ লাখ মানুষ।হাসপাতালগুলোতে নামে করোনা আক্রান্ত মানুষের ঢল। খুব দ্রুতই এই ভাইরাসের সংক্রমণ চীনের সীমান্ত পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়ে পুরো বিশ্বে। সারা বিশ্বে এখনো চলছে করোনার তাণ্ডব। সেই লকডাউন ঘোষণার ঠিক এক বছর পর এখন অনেকটাই স্বাভাবিক উহান শহরের জীবনযাপন। এক বছর আগের ভয় শঙ্কা এখন নেই বললেই চলে। যানজট, কর্মব্যস্ততা, বাজার, শপিংমল আর রেস্টুরেন্টে ভিড় দেখে বোঝার উপায় নেই ১ বছর আগের একই দিনে উহান ছিলো মৃত্যুপুরী।উহান করোনামুক্ত হওয়ার পরই লকডাউন তুলে নেয়া হয়। কিন্তু এখনো চীনের বিভিন্ন শহরে বিভিন্ন সময়ে শনাক্ত হচ্ছে করোনা রোগী। এরপরও স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরেছে চীন। কুয়াশায় ঘেরা নদী তীরে অনেকেই করছেন শরীরচর্চা।সংক্রমণ সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার এক বছর পরও কিছুদিন পরপরই নতুন ধরনের করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে। অনেক যুদ্ধের পর ভ্যাকসিন প্রস্তুত করেও সেটি করোনা প্রতিরোধে শতভাগ নিরাপদ ও কার্যকর ভূমিকা রাখবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। সারাবিশ্বে ভ্যাকসিন পৌঁছে দেয়াও এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।করোনা মহামারীর কারণে এখন পর্যন্ত সারাবিশ্বে অন্তত ২০ লাখ মানুষের প্রাণ গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছিলো, চীনের উহানের সামুদ্রিক প্রাণির বাজার কিংবা উহানের ভাইরাস গবেষণাগার থেকে ছড়িয়েছে সার্স কোভ-টু ভাইরাসটি। এরপর বন্ধ করে দেয়া হয় সামুদ্রিক প্রাণির ওই বাজার। ২০২০ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে বন্ধ সেই হুয়ানান সামুদ্রিক প্রাণির পাইকারি বাজার।তবে চীনাদের দাবি, ভাইরাসটি দেশের বাইরে থেকেই এসেছে। চীন এখানে ভুক্তভোগী। কেউ কেউ বলেন, ভাইরাসটি আমেরিকা থেকে এসেছে।করোনা মহামারী রুখতে চীন সরকারের সব উদ্যোগই প্রশংসার দাবি রাখে। দেশটিতে গণহারে করোনা পরীক্ষা, অ্যাপস দিয়ে করোনা রোগী সনাক্ত আর বাধ্যতামূলক মাস্ক পরা, সবকিছুই করোনা প্রতিরোধ ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু এখনো সারাবিশ্বের কাছে প্রশ্ন, যদি চীন থেকে ভাইরাসটি না আসে, ভাইরাসটি এসেছিলো কোথা থেকে? প্রাথমিকভাবে বিজ্ঞানীদের দাবি, এটি একটি জুনোটিক ভাইরাস, যা বাদুর থেকে মানুষের মাঝে এসেছে। বিজ্ঞানীদের দাবি, উহানের ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলোজি থেকে দুর্ঘটনাবশত ভাইরাসটি এসেছে। এ বিষয়ে চীনের তদন্ত খুবই সীমিত।ঘটনা তদন্তে কয়েকমাস পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি দলও তদন্তে আসে উহানে। তাদেরও দাবি, ভাইরাসটি এসেছে চীনের বাইরে থেকে।উহানে শুরু হওয়া এ সংকট এখন বিশ্ব সংকটে পরিণত হয়েছে। এখনো প্রোপাগান্ডাই হয়ে আছে উহানের অতীত।
লকডাউনের এক বছর, কেমন আছে উহান
0
Share.