ঢাকা অফিস: রাজধানীর বুড়িগঙ্গায় যাত্রীবাহী লঞ্চডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৬ জনের লাশ উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে। নিখোঁজ অন্যদের উদ্ধারে এখনও অভিযান অব্যাহত রেখেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ও কোস্ট গার্ড।সোমবার সকালে সদরঘাটের শ্যামবাজার পয়েন্টে ময়ূর-২ নামের লঞ্চের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে যায় মর্নিং বার্ড লঞ্চ। এ ঘটনার মর্মস্পর্শী বর্ণনা দিয়েছেন ওই লঞ্চে থাকা আবদুর রউফ নামের এক যাত্রী। নিজের চোখে প্রত্যক্ষ করেছেন কীভাবে এত বড় ঘটনা ঘটল।একই লঞ্চে থাকা আবদুর রউফের বন্ধু সত্যরঞ্জন মারা গেছেন। কিন্তু ভাগ্যের জোরে বেঁচে ফিরেছেন আবদুর রউফ। তাদের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ।২০ বছর ধরে প্রতিদিন লঞ্চের যাত্রী হয়ে সকালে গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ থেকে ঢাকায় আসেন। কাজ শেষে আবার ঢাকা থেকে বিকালে গ্রামের বাড়ি ফেরেন। প্রতিদিনের মতো আজও সকাল সাড়ে সাতটায় মুন্সিগঞ্জের কাঠপট্টি থেকে মর্নিং বার্ড নামের লঞ্চটিতে দুই বন্ধু ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।কীভাবে লঞ্চটি ডুবে গেল, সে ব্যাপারে সাংবাদিকদের বর্ণনা দিতে গিয়ে আবদুর রউফ বলেন, ‘লঞ্চটি সদরঘাটের একেবার কাছে চলে আসে। আমরা নামার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। হঠাৎ করে ঘাটের খালি একটি লঞ্চ আমাদের লঞ্চটিকে ধাক্কা দেয়। ভয়ে আমরা সবাই চিৎকার দিই। ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে আমাদের লঞ্চটি উল্টে যায়। আমরা ছিলাম লঞ্চের নিচের তলায়। পানিতে হাবুডুবু খেতে থাকি। দম আমার বের হয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু আমি পানির উপরে উঠতে পেরেছি। যার কারণে বেঁচে যাই। কিন্তু আমার বন্ধু সত্যরঞ্জন উঠতে পারেনি, তার মৃত্যু হয়েছে।’আবদুর রউফ জানান, লঞ্চের যারা মারা গেছেন বা ডুবে গেছেন, তাঁদের অনেককে তিনি ভালো করে চেনেন। কারণ এসব মানুষ মুন্সিগঞ্জ থেকে প্রতিদিন ঢাকায় আসেন। কাজ শেষে আবার মুন্সিগঞ্জে চলে যান।’তিনি বলেন, ‘আমাদের লঞ্চটাতে ৫০ থেকে ৬০ জন যাত্রী ছিল। নিয়ম মেনে ঘাটে ভেড়াচ্ছিল। হঠাৎ করে অন্য লঞ্চটি ধাক্কা দিয়ে এই মানুষগুলোকে মেরে ফেলল। আমিও মরে যেতে পারতাম।’বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক (বন্দর) একেএম আরিফ উদ্দিন বলেন, সকাল ৯টার দিকে মুন্সীগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা মর্নিং বার্ড লঞ্চটি সদরঘাটে বার্দিং করার আগ মুহূর্তে চাঁদপুরগামী ময়ূর-২ লঞ্চটি ধাক্কা দেয়। এতে সঙ্গে সঙ্গে তুলনামূলক ছোট মর্নিং বার্ড লঞ্চটি ডুবে যায়। এ সময় লঞ্চটিতে কমপক্ষে অর্ধশতাধিক যাত্রী ছিলেন বলে জানান তিনি।
লঞ্চডুবি নিয়ে এক প্রত্যক্ষদর্শীর মর্মস্পশী বর্ণনা
0
Share.