ডেস্ক রিপোর্ট: ইউক্রেন-রাশিয়া শস্যচুক্তি নবায়ন না হওয়ায় বিশ্বের অনেক মানুষের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির ত্রাণবিষয়ক প্রধান মার্টিন গ্রিফিন গতকাল শুক্রবার নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে বলেন, এই পরিস্থিতি কোটি কোটি মানুষের জন্য ক্ষুধাসহ আরও বড় হুমকি ডেকে আনছে।‘ ইউক্রেন থেকে নিরাপদে শস্য রফতানি চালু রাখতে গত বছরের জুলাইয়ে এগিয়ে আসে জাতিসংঘ ও তুরস্ক। তাদের মধ্যস্থতায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শস্যচুক্তি হয়। তিন দফা বাড়ানোর পর ১৭ জুলাই শেষ হয় চুক্তির মেয়াদ। রাশিয়া এই দফায় আর মেয়াদ বাড়াতে রাজি হয়নি। রাশিয়ার অভিযোগ, শিপিং ও বীমার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেশটির খাদ্য ও সার রপ্তানিকে বাধাগ্রস্ত করেছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সতর্ক করে বলেছিলেন যে খাদ্য ও সার রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করা হলে মস্কো এই ‘চুক্তি থেকে নিজেকে স্থগিত’ করবে। তাদের অভিযোগ, ইউক্রেনীয় শস্য গরীব দেশগুলোতে ঠিকঠাক পৌঁছাচ্ছে না। এই চুক্তি বাতিলের পর যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে গমের দাম ৬ শতাংশ বেড়ে গেছে। মার্টিন গ্রিফিন বলেন, বর্তমানে ৬৯টি দেশের ৩৬ কোটি ২০ লাখ মানুষের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। চুক্তি বাতিল হওয়ায় তাদের অনেকেই ক্ষুধার্থ থাকবে, অনাহারে থাকবে, অনেকে মারাও যেতে পারেন। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয় কৃষ্ণসাগরের এই শস্যচুক্তিতে গরীব দেশগুলো উপকৃত হয়েছে। বিশ্বজুড়ে গমের দাম কমে গিয়েছিল ২৩ শতাংশ। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ইউক্রেনের ৭ লাখ ২৫ হাজার টন খাদ্যশস্য আফগানিস্তান, জিবুতি ইথিওপিয়া, কেনিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেন পৌঁছে দিয়েছে। রাশিয়া দাবি করেছে মাত্র ৩ শতাংশ শস্য গরীব দেশগুলোতে গেছে। তার পক্ষ হয়ে অর্থনীতিবিদ মিখাইল খান নিরাপত্তা পরিষদের সামনে দাবি করেন, শস্যচুক্তির বৈশ্বিক প্রভাব খুব আশাব্যঞ্জক ছিল না। গতকাল শুক্রবার রুশ উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ভারসিন বলেন, যেসব দেশগুলোর সবচেয়ে বেশি খাদ্যশস্য প্রয়োজন তাদের সঙ্গে আলাপ করছে তারা। তবে এখনও কোনও চুক্তিতে পৌঁছায়নি। এদিনে টানা চতুর্থদিনের মতো ইউক্রেনের শস্যবাহী জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে রাশিয়া। তারা বলছে, ক্রিমিয়া দ্বীপে ইউক্রেনীয় হামলার প্রতিশোধ হিসেবে তারা এই ব্যবস্থা নিয়েছে। রাশিয়া বলছে, তারা এখন কৃষ্ণসাগরে যাতায়াতকারী যেকোনও ইউক্রেনীয় জাহাজরকে সামরিক হুমকি বলে বিবেচনা করবে। জাতিসংঘের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বিষয়ক প্রধান রোজমেরি ডিকারলো নিরাপত্তা পরিষদকে বলেন, ইউক্রেনীয় বন্দরে নতুন এই হামলার ঢেউ বিশ্বজুড়ের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য চরম হুমকি। তিনি বলেন, এই হুমকি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
শস্যচুক্তি বন্ধের কারণে অনেক মানুষের মৃত্যু হতে পারে: জাতিসংঘ
0
Share.