ডেস্ক রিপোর্ট: শিশুদের বেড়ে ওঠার জন্য উপযুক্ত এমন দেশগুলোর তালিকায় পিছিয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশেষ করে জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয় এবং দেশটিতে বন্দুক হামলা ক্রমাগত বাড়তে থাকা এবং কর্মক্ষেত্রে বাবা মায়ের ছুটির অভাবের কারণে সেখানে সন্তান মানুষ করা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। শিশুদের বেড়ে ওঠার জন্য ভালো এমন দেশগুলোর তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান অবস্থান ১৮। আর এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপের বেশ কিছু দেশ। গতকাল বুধবার ইউএস নিউজ অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড রিপোর্টস ২০২০ এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকা স্বত্ত্বেও পারিবারিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং নিরাপত্তার ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র। শিক্ষা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে থাকলেও শিশু বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে চারজনের একটি পরিবারের প্রতি মাসে ব্যয় হয় চার হাজার ৪৫ ডলার। যেখানে ডেনমার্কের রাজধানী কোপেন হেগেনে ব্যয় হয় তিন হাজার ৭০৫ ডলার। অপরদিকে দেশটিতে একজন শিশুর দেখাশুনার পেছনে চাইল্ড কেয়ারে বছরে ব্যয় হয় ৯ হাজার থেকে ৯ হাজার ৬শ ডলার। প্রতি মাসে খরচ হয় ৭৫০ ডলার। চাইল্ড কেয়ারে অতিরিক্ত ব্যয়ভার বহনে সরকারের তরফ থেকে কোনো সুবিধা পান না বাবা-মায়েরা। এমনকি মার্কিন কোম্পানিগুলোতেও সন্তানদের দেখাশুনার জন্য বাবা-মায়েদের আলাদা কোনো ছুটির ব্যবস্থা নেই। ১৮৭টি দেশেই মাতৃত্বকালীন ছুটি থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের কোনো ছুটি ছিল না। তবে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর গত ডিসেম্বরে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এতে ২১ লাখ সরকারি কর্মীকে এ ধরনের ছুটির সুবিধা দেওয়া হয়। তবে ২০১৮ সালে বেসরকারি খাতে মাত্র ১৭ ভাগ মার্কিনি পারিবারিক ছুটি পেয়েছেন বলে সরকারি এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। একটি শিশুর জন্মের পর থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। শিশদের দীর্ঘকালীন স্বাস্থ্য এবং মানসিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এই সময়টা বিশেষভাবে জরুরি। ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কমপক্ষে ৪৫টি স্কুলে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলায় বহু শিশু প্রাণ হারিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের হামলা বেড়ে যাওয়ায় দেশটিতে শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এক্ষেত্রে শিশুদের জন্য যথেষ্ঠ নিরাপদ ডেনমার্ক। দেশটিতে সর্বশেষ স্কুলে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছিল ২০১৫ সালে। অপরদিকে, ১৯৯৬ সালে একটি স্কুলে গোলাগুলির ঘটনায় ৩৫ জন নিহত হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ায় বন্দুকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আনা হয়। সেখানে এখন পর্যন্ত আর কোনো স্কুলে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে এখনও পর্যন্ত এ ধরনের কোনো আইন আনা সম্ভব হয়নি। মার্কিন সংবিধান বন্দুকের মালিকানার বিষয়ে নিশ্চয়তা দিলেও বয়স্ক লোকজন এবং শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় লক্ষণীয় কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।
শিশুদের বেড়ে ওঠার জন্য উপযুক্ত এমন দেশগুলোর তালিকায় পিছিয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র
0
Share.