ঢাকা অফিস: পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ান বন্ধে ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বক্তব্য দিয়েছেন, বিএনপি নেতারা দুরভিসন্ধিমূলকভাবে তার ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনাকারী ও বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলার মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে নিরলসভাবে স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি তার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দেশবিরোধী গোষ্ঠীর মুখোশ উন্মোচন ও জনগণকে সতর্ক করতে চেয়েছেন। তাকে শিষ্টাচার শেখাতে আসবেন না। একুশে আগস্টের নারকীয় গ্রেনেড হামলাসহ অসংখ্যবার শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার সময় কোথায় ছিল আপনাদের তথাকথিত শিষ্টাচার? শুক্রবার এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে এসব কথা বলেন তিনি। বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা একজন স্বপ্নবান মানুষ। যিনি বাংলার মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে নিরলসভাবে স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে বাংলার মানুষ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার মহিমান্বিত নেতৃত্বকে মূল্যায়ন করবে। দেশের উন্নয়ন-অগতি-সমৃদ্ধি নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ব্যতিত আর কোনো নেতৃত্বই অবাধ দেশপ্রেমের সাথে ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে কোনো সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক দর্শন ও পরিকল্পনা নিয়ে বাংলার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কাজ করেননি। বাঙালির ভাগ্যোরনের সংগ্রামে একমাত্র শেখ হাসিনাই পরিপূর্ণ আত্মনিবেদন করেছেন। এ কথা আজ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত যে, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা মানেই এদেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন হওয়া। ২০০৮ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর একের পর এক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে চলেছে। রূপকল্প-২০২১ ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে। সামনে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা-২০৪১ রয়েছে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশ উন্নত দেশের কাতারে উত্তীর্ণ হবে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছে। দেশরত্ন শেখ হাসিনা ভিশনারি কর্মপরিকল্পনার মধ্য দিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিরাপদ রাখতে শতবর্ষীয় ‘ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’ ঘোষণা করেছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের একটি অনন্য মাইলফলক হলো নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ। আজকে যারা রাজনৈতিক স্বার্থে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতাকে অস্বীকার করার অপচেষ্টা চালান এবং বাংলাদেশে শ্রীলঙ্কার পরিণতি দেখতে সুপ্ত বাসনা লালন ও ষড়যন্ত্র করেন তাদেরকে বতে চাই পদ্মাসেতু শুধুমাত্র একটি সেতু না এটি জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্জিত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতার স্মারক। আওয়ামী লীগ সরকার পদ্মাসেতু নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করার পর থেকেই বিএনপি ও তার দোসররা এর বিরুদ্ধে ক্রমাগত ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় এবং তারা চক্রান্ত করে বিদেশি অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়। এরপরও দেশরত্ন শেখ হাসিনা দেশি অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তখন খালেদা জিয়াসহ একটি চিহ্নিত মহদের মক্তব্যগুলো ছিল কাণ্ডজ্ঞান বিবর্জিত ও দূরভিসন্ধিমূলক। এসব ষড়যন্ত্র ও রাজনৈতিক প্রোপাগাণ্ড শুধু সরকার বিরোধিতাই ছিল যা দেশদ্রোহিতার শামিল। বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, জনকল্যাণমুখী সৎ-সাহসী ও দেশপ্রেমিক নেতা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকলে কোনো ষড়যন্ত্রই একটি জাতিকে পিছিয়ে দিতে পারে না- বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও পদ্মাসেতু তার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। প্রতিবন্ধকতা ডিঙ্গিয়ে সফলভাবে পদ্মাসেতু নির্মাণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্য নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বিএনপি নেতৃবৃন্দ দুরভিসন্ধিমূলকভাবে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে। এমনকি বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তথাকথিত ‘হত্যার হুমকির বয়ান তৈরি করছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, বিরোধী পক্ষকে দমন ও পীড়নের রাজনীতি আওয়ামী লীগ কোনোদিন করে নাই। বরং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে ১৫ই আগস্ট স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে বিএনপির হাত ধরেই হত্যা-কু-ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষকে নির্মূল করার অপরাজনীতি শুরু হয়। আর তারই ধারাবাহিকতায় জননেত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ বার বার আক্রমণের শিকার হয়েছে। এখনও চিহ্নিত এই মহলটি ক্রমাগতভাবে দেশের স্বার্থ ও অনল্যাগবিরোধী বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা তাঁর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দেশবিরোধী এই গোষ্ঠীর মুখোশ উন্মোচন ও জনগণকে সতর্ক করতে চেয়েছেন। ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ভালো করেই জানা উচিত যে, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যদি খালেদা জিয়ার মৃত্যুই কামনা করতেন তাহলে উচ্চ আদালত কর্তৃক একাধিকবার জামিন বাতিল হওয়ার পরেও দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে ঘরে রেখে উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করতেন না। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করার সুযোগ নিতেন না। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ শিষ্টাচারের কথা বলছেন। আমি তাকে বলতে চাই, বঙ্গবন্ধুকন্যাকে হত্যার উদ্দেশ্যে একুশে আগস্টের নারকীয় গ্রেনেড হামলাসহ অসংখ্যবার হত্যাচেষ্টার সময় কোথায় ছিল আপনাদের তথাকথিত শিষ্টাচার? এমনকী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়োগ করে অপরহণ ও প্রাণনাশের অপচেষ্টা পর্যন্ত চালানো হয়েছে। বেগম জিয়াসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন সময়ে গণতন্ত্রের পীঠস্থান জাতীয় সংসদসসহ প্রকাশ্য জনসভায় যে ভাষায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মগড়া মিথ্যাচার ও অশালীন বক্তব্য প্রদান করেছেন তার নজির পৃথিবীর কোনো সভ্য সমাজে নাই। আপনাদের শিষ্টাচারের ভাষা তো গ্রেনেড, গুলি আর ষড়যন্ত্র। সুতরাং বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে শিষ্টাচার শিখাতে আসবেন না। এদেশের রাজনীতিতে শিষ্টাচার ও উদারতা যদি কেউ দেখিয়ে থাকেন তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। দেশবাসী ভালোভাবেই ফ্রানে, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা প্রতিহিংসার রাজনীতি করেন না। দুর্নীতি সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ ও স্বৈরতান্ত্রিক মানসিকতার কারণে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গণতান্ত্রিক রাজনীতির প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পারার ব্যর্থতা বিএনপির এবং তাদের দুর্নীতিবাজ শীর্ষ নেতৃত্বের। সেজন্য আওয়ামী লীগকে দোষারোপ করা পরাজিত সৈনিকের আত্মপ্রলাপ ছাড়া কিছু নয়। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সততা, সাহসীকতা, নিষ্ঠ বলিষ্ঠ নেতৃত্ব আজ তাঁকে বিশ্বসভায় এক অনন্য সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে অভিষিক্ত করেছে। গত চার দশকে বাংলাে কিন্তু মহৎ অর্জন তা শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই অর্জিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির অভিযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে। আগামীতেও এগিয়ে যাবে। কোন প্রকার ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার আর্থা গতিধারা থামাতে পারবে না। ইনশাল্লাহ্।