বাংলাদেশ থেকে শেরপুর প্রতিনিধি: শেরপুরের শ্রীবরদীতে পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রী ও শ্বাশুড়িসহ ৩ জনকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী মিন্টু মিয়ার (৪৩) বিরুদ্ধে। ২৩ জুন বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের পুটল গ্রামে ওই ঘটনা ঘট নিহতরা হচ্ছেন মিন্টু মিয়ার স্ত্রী মনিরা বেগম (৪০), শ্বাশুড়ি শেফালী বেগম (৬০) ও জ্যাঠাশ্বশুর নুর মোহাম্মদ ওরফে মাহমুদ হাজী (৬৫)। ওই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৩ জন। আহতদের গুরুতর অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদিকে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন শেরপুরের পুলিশ সুপার হাসান নাহিদ চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ হান্নান মিয়া, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নালিতাবাড়ী সার্কেল) আফরোজা নাজনীনসহ পিবিআই, সিআইডি ও র্যাবের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পুলিশ ও নিহতদের স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৭ বছর আগে শ্রীবরদীর পুটল গ্রামের মনু মিয়ার মেয়ে মনিরা বেগমের বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী গেরামারা গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে মিন্টু মিয়ার সাথে। তাদের সংসারে ২ সন্তান রয়েছে। গত কিছুদিন আগে থেকে মিন্টু মিয়া কোন কাজকর্ম না করায় সংসারে শুরু হয় পারিবারিক কলহ। এরই জের ধরে গত রমজান মাসের শুরুতে বাপের বাড়ি চলে আসেন মনিরা বেগম। এরপর মিন্টু কয়েকদিন স্ত্রী মনিরা বেগমকে নিতে শ্বশুরবাড়ি এলেও মনিরা বেগম স্বামীর বাড়ি যাননি। এদিকে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মিন্টু মিয়া বোরকা পরে তার শ্বশুরবাড়িতে এসে এলোপাথাড়িভাবে কুপিয়ে তার স্ত্রী মনিরা বেগম, শ্বাশুড়ি শেফালী বেগম ও জ্যাঠাশ্বশুর নুর মোহাম্মদ ওরফে মাহমুদ হাজী, শ্বশুর মনু মিয়া (৭৫), বাচ্চুনী বেগম (৫২) ও শাহাদাৎ হোসেন (৪০)সহ ৬ জনকে আহত করে। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় মনিরা বেগম। পরে স্থানীয়রা বাকী ৫ জনকে উদ্ধার করে পাশ্ববর্তী বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মাহমুদ হাজী ও শেফালী বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর ৩ জনকে গুরুতর অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। নিহতদের মধ্যে ২ জনের লাশ বকশিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। বাকী একজনের লাশ উদ্ধার করে শ্রীবরদী থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ। মিন্টু মিয়ার ব্যবহৃত বোরকাটি পাশের একটি খেত থেকে জব্দ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানান, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে পারিবারিক কলহের জের ধরে মিন্টু মিয়া তাদের কুপিয়ে হত্যা করেছে। মিন্টুকে গ্রেফতার করতে অভিযান চলছে। আশা করছি শিগগিরই তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে। ওই ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।