সমুদ্রে মারা গেছে ১০০ রোহিঙ্গা, অনাহারের শিকার আরো কয়েকশ’

0

ঢাকা অফিস: চলতি মাসের শুরুর দিকে বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির থেকে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে কয়েকশ’ রোহিঙ্গা। এ যাত্রায় প্রাণ হারায় প্রায় ১০০ জন। সমুদ্রের উপর ভাসমান নৌকায় অনাহারের মুখে পতিত হন আরো কয়েকশ’। ডক্টরস উইদাউট বর্ডারসের (এমএসএফ) এক বিবৃতিতে এমনটা বলা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে আল এরাবিয়া ও বার্তা সংস্থা এপি। খবরে বলা হয়, ২০১৭ সালে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর ভয়াল সহিংসতা থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে লাখ লাখ রোহিঙ্গা। এখন পর্যন্ত এদেশে আশ্রয় নিয়েছেন ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। তবে গত বছরের মার্চে এক ঘোষণায় আর কোনো শরণার্থী নেবে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ। ইতিমধ্যে শরণার্থী শিবিরগুলোর অবস্থা অবনতির দিকে গড়াচ্ছে। অনেকে শিবির ছেড়ে পালাচ্ছেন। এমএসএফ অনুসারে, চলতি মাসের শুরুর দিকে কয়েকশ’ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের শিবির ছেড়ে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল। তবে মালয়েশিয়া তাদের গ্রহণ করেনি। যাত্রাপথে চোরাচালানকারীদের হাতে প্রহার ও অনাহারের শিকার হয়ে ফিরে আসতে বাধ্য হয় তারা। এর মধ্যে সমুদ্রে প্রাণ হারিয়েছেন অনেকে। এ সংখ্যা কত তা নির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি। তবে এমএসএফ জানিয়েছে, আনুমানিক ১০০ জনের মৃত্যু হতে পারে। মালয়েশিয়াগামী রোহিঙ্গা নৌকাটি ফিরে আসার পর বেঁচে থাকা রোহিঙ্গাদের সেবা দিয়েছে এমএসএফ। সংস্থাটি বলেছে, রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের জরুরি ভিত্তিতে সাহায্য দরকার। তারা বলেছে, ফিরে আসা রোহিঙ্গারা অপুষ্টিতে ভুগছিলেন। এমএসএফ নার্স ও মেডিক্যাল টিম প্রধান হানাদি কাতেরজি বলেন, ফিরে আসা রোহিঙ্গাদের বেশিরভাগের বয়সই ১২ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। তাদের অনেকেই নিজে নিজে হাঁটতে পারছিল না। তাদের শরীরে কেবল চামড়া আর হাড় দেখা যাচ্ছিলো। কোনোরকমে বেঁচে ছিল তারা।
কাতেরজি বলেন, অনেক পুরুষের গাঁয়ে গুরুতর জখম ছিল। কিন্তু অপুষ্টির কারণে সেগুলো সেরে উঠছিলো না। তিনি বলেন, অনেকের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্যে অবনতি দেখা গেছে। বেশিরভাগই উদ্বিগ্ন, ভীত, অনিশ্চিত ও মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত ছিলেন।
ফিরে আসা ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরী শরণার্থী বলেছে, আমরা সমুদ্রে ভাসছিলাম। প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছিলো। ওই কিশোরী জানায়, অনেক মানুষ মারা গেছে। বিশেষ করে পুরুষরা। তারা নিঃশ্বাস নিতে পারছিলো না। সেখানে পর্যাপ্ত অক্সিজেন ছিলো না।

Share.