বাংলাদেশ থেকে নাটোর জেলা প্রতিনিধি: নাটোরের বাগাতিপাড়ায় সরকারী আইন অমান্য করে আবাসিক এলাকায় লেয়ার ও ব্রয়ালার মুরগির খামার করা হয়েছে এবং মুরগির খামারের বর্জ্য পুকুরের পানিতে দেওয়ায় তা ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এছাড়াও খামারটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় হওয়ায় দুর্গন্ধে অতিষ্ট এলাকাবাসী। এই ঘটনাটি উপজেলার জামনগর ইউনিয়নের ঘোষপাড়া গ্রামে। সম্প্রতি খামারের মালিক সুলতান আলীর বিরুদ্ধে উপজেলা ও জেলা প্রশাসন এবং পরিবেশ অধিদপ্বতরে, পরিবেশ দুষণ বন্ধে আইনী পদক্ষেপ গ্রহনে লিখিত আবেদন করেছেন ভুক্তভোগীরা। লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, খামারী সুলতান আলী ও আসাদুল ইসলাম দীর্ঘদিন থেকে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় খামার স্থাপন করে ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগি পালন করেছেন। আর খামারের বর্জ্য অপরিকল্পিতভাবে ফেলছেন যত্রতত্র। অভিযোগকারীর পুকুরেও এসকল বর্জ্য ফেলে পানি দুষিত করছেন বলে জানা গেছে। অথচ ওই পুকুরের পানি এলাকার মানুষ ব্যবহার করেন। বর্জ্য ফেলায় মানুষের গোসল ও গৃহস্থালী কাজে পকুরের পানি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।ওই পুকুরের পানি ব্যবহারকারী বিউটি খাতুন ও লাইলী বেগম জানান, তারা এই পুকুরের পানি গোসল ও গৃহস্থালী কাজে ব্যবহার করেন। কিন্তু খামারের বর্জ্য পুকুরের পানিতে ফেলার কারণে পানি দুষিত হয়ে গেছে তাই ওই পুকুরের পানি ব্যবহার করতে পারছেন না তারা। আবেদনকারী সানাউল্লাহ দাবি করেন, খামারের দুর্গন্ধে বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তার খামারের বর্জ্য আমার পুকুরের পানিতে এসে পানিসহ এলাকার পরিবেশ দূষিত করছে। খামারি বদমেজাজি ও দাঙ্গাবাজ হওয়ায় তার অন্যায়ের প্রতবিাদ করতে কেউ সাহস পায়না। আমি নিজেও বলতে গেলে আমার সঙ্গে সুলতান অসাদাচরন করে হুমকি দেয়। আমাকে বলে এটা নিয়ে তুই বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোকে গাছে লটকিয়ে ছিলে ফেলবো। আমি অবশেষে বাধ্য হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক এবং পরিবেশ অধিদপ্তরে পরিবেশ দুষণ বন্ধে আইনী পদক্ষেপ গ্রহনে লিখিত আবেদন করেছি। তিনি আরো জানান, সুলতান দীর্ঘদিন যাবৎ খামার স্থাপন করলেও লাইসেন্স বা আইনী কোন কাগজপত্র তার নেই। সম্প্রতি প্রশাসন বরাবর লিখিত আবেদন করার পর থেকে সুলতান আরো ক্ষিপ্ত হয়েছে। বর্তমানে আমি জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনের বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার পোল্ট্রি খামার টি বন্ধের জন্য দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি জানিয়েছেন তিনি। এদিকে খামারি সুলতান আলী এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়ানোর কথা স্বীকার করে বলেন, আমি খামার তো দীর্ঘদিন থেকে চালাচ্ছি দুর্গন্ধ তো আজকে নতুন ছড়াচ্ছ না, বর্তমানে আমার সাথে সানাউল্লার পারিবারিক বিরোধের কারণে সে অভিযোগ করেছে। অভিযোগটির তদন্ত কর্মকর্তা বাগাতিপাড়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমি সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিভিন্নভাবে তদন্ত করেছি এবং আমার তদন্ত্র প্রতিবেদন উপজেলা প্রশাসনকে জমা দিয়েছি। তবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় আমি ওই খামারটি অপসারনের প্রস্তাব দিয়েছি। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিয়াংকা দেবী পাল বলেন, অভিযোগটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তদন্ত প্রতিবেদনও হাতে পেয়েছি, খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যেই ওই বিষয়টি নিয়ে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
সরকারী আইন অমান্য করে আবাসিক এলাকায় মুরগির খামার, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ প্রতিবেশীরা
0
Share.