সাতক্ষীরায় বিএনপির ৫০ নেতাকর্মীর সাজা রাজনৈতিক কারণে : রিজভী

0

ঢাকা অফিস: রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সাতক্ষীরায় সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ বিএনপির নেতাকর্মীদের সাজা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।সাতক্ষীরায় রায় ঘোষণার পর আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।কলারোয়ায় ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় হত্যাচেষ্টার মামলার রায় আজ বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হয়। সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ূন কবির এই রায় ঘোষণা করেন।রায়ে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবকে ১০ বছরসহ ৫০ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন আদালত। তাঁদের সবাই বিএনপির নেতাকর্মী। আসামিদের মধ্যে ১৫ জন পলাতক রয়েছেন।রায়ের পর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেছেন, মামলার সব আসামির সাজা হওয়ায় দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেছেন, তাঁরা ন্যায়বিচার পাননি, উচ্চ আদালতে যাবেন।আজকের সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব দাবি করেন, ‘২০০২ সালে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মিথ্যা অভিযোগে হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ সাতক্ষীরার স্থানীয় নেতাদের নামে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দেওয়া হয়। অথচ সেদিন হাবিবুল ইসলাম হাবিব ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপিকে ধারাবাহিকভাবে ধ্বংস করার অংশ হিসেবে দীর্ঘদিন পর এই মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করে।’‘এই মিথ্যা মামলাটির মাধ্যমে আওয়ামী লীগ যে প্রতিশোধ গ্রহণের খেলায় মেতেছে; তার প্রমাণ ঢাকা থেকে একজন অ্যাডিশনাল অ্যাটর্নি জেনারেল ও তিনজন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে সাতক্ষীরায় পাঠানো হয়েছিল মামলাটিকে নিজেদের অনুকূলে নিয়ে আসার জন্য, যা নজিরবিহীন ঘটনা।’রিজভী আরো বলেন, ‘তার মানে কী, সরকার যা চায়, সাজাটি যাতে নিশ্চিত হয়, এ কারণেই একজন অ্যাডিশনাল অ্যাটর্নি জেনারেল ও তিনজন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে সেখানে পাঠানো হয়।’বিএনপির পক্ষ থেকে অবিলম্বে হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ সব নেতাকর্মীর মামলা প্রত্যাহার করে তাদের মুক্তির জোর দাবি জানান রুহুল কবির রিজভী।এ সময় বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, ‘বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব লায়ন আসলাম চৌধুরী ষড়যন্ত্রমূলক রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে কারাগারে বন্দি আছেন। প্রায় শতাধিক মামলায় জামিন হয়ে জেলখানা থেকে বের হওয়ার সময় শাহবাগ থানার মিথ্যা মামলায় গতকাল বুধবার কোতোয়ালি থানার একটি মামলায় শ্যেন অ্যারেস্ট দেখায়। অবিলম্বে লায়ন আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহারসহ মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।’সাতক্ষীরায় বিএনপির যে ৫০ নেতাকর্মীর সাজা হয়েছে তাঁরা হলেন— সাবেক সংসদ সদস্য মো. হাবিবুল ইসলাম হাবিব, কলারোয়া পৌরসভার দুইবারের সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা গাজী আক্তারুল ইসলাম, সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার, সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ, ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন ও আবদুর রকিব মোল্লা, মো. আব্দুল কাদের বাচ্চু, মো. আরিফুর রহমান ওরফে রঞ্জু, মো. নজরুল ইসলাম, রিপন, মো. আব্দুল রাজ্জাক, শেখ তামিম আজাদ মেরিন, মো. মফিজুল ইসলাম, মো. আব্দুল মজিদ, মো. হাসান আলী, মো. ইয়াছিন আলী, ময়না, মো. আব্দুস সাত্তার, খালেদ মঞ্জুর রোমেল, মো. তোফাজ্জেল হোসেন সেন্টু, মো. মাজহারুল ইসলাম, মো. আব্দুল মালেক, আব্দুর রব, মো. জহুরুল ইসলাম, মো. রবিউল ইসলাম, মো. গোলাম রসুল, রিংকু, মো. আব্দুল সামাদ, মো. আলাউদ্দিন, মো. আলতাফ হোসেন, সঞ্জু, মো. নাজমুল হোসেন, শাহাবুদ্দিন, মো. সাহেব আলী, মো. সিরাজুল ইসলাম, টাইগার খোকন ওরফে বেড়ে খোকন, জাবিদ রায়হান লাকী, রকিব, ট্রলি শহিদুল, কনক, শেখ কামরুল ইসলাম, মো. মনিরুল ইসলাম, মো. ইয়াছিন আলী, শেলী, মো. শাহিনুর রহমান, বিদার মোড়ল, মো. সোহাগ হোসেন, মো. মাহাফুজুর রহমান মোল্লা, মো. আব্দুল গফফার গাজী ও মো. মাহফুজুর রহমান সাবু।

Share.