বিনোদন ডেস্ক: বিতর্কিত চিত্রনায়ক জায়েদ খানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন ‘কুলি’ খ্যাত চিত্রনায়ক ওমর সানী। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, জায়েদ খান কোমর থেকে পিস্তল বের করে তাকে গুলি করার হুমকি দিয়েছেন। ওমর সানীর আরও নালিশ, জায়েদ খান দীর্ঘ চার মাস ধরে তার স্ত্রী চিত্রনায়িকা মৌসুমীকে নানাভাবে বিরক্ত ও অসম্মান করে আসছেন। এ সমস্ত অভিযোগের কথা উল্লেখ করে গেল রবিবার বিকালে শিল্পী সমিতির সভাপতি বরাবর একটি চিঠি পাঠান ওমর সানী? দুই দিন হয়ে গেল, ওমর সানীর নালিশের ভিত্তিতে জায়েদ খানের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নিতে চলেছে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি? এ প্রসঙ্গে জানতে কথা হয় সমিতির নতুন সভাপতি ও একসময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে। এই অভিনেতা ও সমাজসেবক ঢাকাটাইমসকে জানিয়েছেন, তিনি একা কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না। সমিতির সকল সদস্যদের উপস্থিতিতে শিগগিরই মিটিংয়ে বসে এ নিয়ে কথা বলবেন। ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘ওমর সানীর অভিযোগের চিঠি হাতে পেয়েছি। আগামী সভায় এ নিয়ে কথা হবে। সম্পাদক ও কার্যনির্বাহী সদস্যরা মিলে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। আমাদের কাছে নানা রকমের চিঠি আসে। সেগুলো জমা রাখি। প্রতি মাসের মিটিংয়ে গুরুত্ব অনুযায়ী সেগুলোকে সামনে আনা হয়। সানীর অভিযোগ নিয়েও সেভাবেই কথা হবে। যত দ্রুত সম্ভব আমরা সভায় বসার চেষ্টা করব।’ গত শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে ছিল অভিনেতা-প্রযোজক ডিপজলের ছেলের বিবাহোত্তর সংবর্ধণা। চলচ্চিত্রের অনেক তারকাই ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন। গিয়েছিলেন ওমর সানী এবং জায়েদ খানও। মৌসুমীকে বিরক্ত করার অভিযোগে সেখানেই জায়েদ খানকে সবার সামনে চড় মেরে বসেন ওমর সানী। এরপর জায়েদ খান নাকি কোমর থেকে পিস্তল বের করে ওমর সানীকে গুলি করার হুমকি দেন। যদিও ওমর সানীর চড় মারার কথা স্বীকার করলেও জায়েদ খানের পিস্তল বের করে হুমকি দেওয়ার ঘটনাকে অসত্য ও বানোয়াট বলেন ডিপজল, রোজিনা ও অঞ্জনার মতো জ্যেষ্ঠ তারকারা। ডিপজল দাবি করেন, ‘ওমর সানী ও জায়েদের মধ্যে সামান্য ধাক্কাধাক্কি হয়েছে, তবে পিস্তল দিয়ে ভয় দেখানোর মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।’ অভিনেতা বলেন, ‘আমার ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে পিস্তল নিয়ে ঢুকবো, এমন সাহস কার আছে।’ এছাড়া জায়েদ খানও শুরু থেকে বিষয়টি অস্বীকার করে আসছেন। তবে জায়েদ খানের কাছে পিস্তল ছিল বলে মনে করেন শিল্পী সমিতির কোষাধ্যক্ষ ও খল অভিনেতা যাদু আজাদ। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি গণমাধ্যমের কাছে বলেছেন, ‘আমি খাওয়া শেষ করে উপহার দিয়ে পান খাচ্ছিলাম। এমন সময় পাশে হইচই শুনতে পাই। আমি কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে ছিলাম।’ যাদু আজাদের দাবি, ‘আমি জায়েদ খানকে বলতে শুনেছি, তিনি ওমর সানীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘গুলি করে দেব কিন্তু।’ এরপর পকেট থেকে পিস্তল বের করল বলে মনে হলো। এগিয়ে কাছে যাওয়ার আগেই ডিপজল ভাই পরিস্থিতি ঠান্ডা করে ফেলেন।’ যাদু জানান, ঘটনার পর ওমর সানী না খেয়েই অনুষ্ঠান ছেড়ে চলে যান। এর আধঘণ্টা পর না খেয়ে বেরিয়ে যান জায়েদ খানও। এদিকে, গোটা ঘটনায় স্বামীর বিপক্ষে গিয়ে জায়েদ খানের পক্ষে কথা বলেছেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী। তিনি সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক অডিও বার্তায় জানান, জায়েদ খান তাকে কোনো ভাবে বিরক্ত বা অসম্মান করেননি। বরং তাকে বড় বোনের মতো সম্মান করেন। জায়েদ খানকে ভালো ছেলে উল্লেখ করে মৌসুমী বলেন, ওমর সানী মিথ্যাচার করছেন। এছাড়া স্বামীকে ভাই বলেও সম্মোধন করেন ‘প্রিয়দর্শিনী’। তবে বাবার পক্ষ নিয়ে ওমর সানীর ছেলে ফারদিন এহসান স্বাধীন গণমাধ্যমে দাবি করেছেন, ‘জায়েদ খান শুধু আম্মুকে না, চলচ্চিত্রের অনেককেই বিরক্ত করে। এই বিষয়গুলো আমি জানি। জায়েদ খান আমার ব্যবসায়েরও ক্ষতি করার চেষ্টা করেছেন।’ পাশাপাশি জায়েদ খানকে রাস্তার ব্যাঙের সঙ্গে তুলনা করে ফারদিন বলেন, ‘তাকে নিয়ে ভাববার সময় নেই।’