বিনোদন ডেস্ক: ঢালিউডের জনপ্রিয় দম্পতি ওমর সানী-মৌসুমী। দীর্ঘ ২৭ বছরের সংসার তাদের। এতটা পথ নির্ঝঞ্জাট কাটিয়ে কয়েক দিন ধরে বিতর্কে তাদের দাম্পত্য। নেপথ্যে বিতর্কিত চিত্রনায়ক জায়েদ খান। যদিও মঙ্গলবার ওমর সানী গণমাধ্যমে পাঠানো এক অডিও বার্তায় জানান, তার এবং মৌসুমীর মধ্যে সবকিছু মিটমাট হয়ে গেছে। আসলে কি তাই? সত্যি কি সবকিছু মিটে গেছে? তাহলে মৌসুমী তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে কোন অভিমান আর ব্যথার কথা জানালেন? কেন অভিনেত্রী বললেন, নিজেকে তিনি শামুকের মতো আড়াল করে রেখেছেন? মৌসুমীর ইনস্টাগ্রাম স্ট্যাটাস দেখার পর উঠছে এমনই সব প্রশ্ন। প্রিয়দর্শিনীর কথায়, ‘লুকিয়ে থাকতে চাইলেই লুকিয়ে থাকা যায়। সামনে যেটা থাকে সেটা শরীর। আমি এখন শামুকের মতো হয়ে গেছি। আড়াল করে নিজেকে নিয়ে আছি, এটাই স্বস্তি। যখন দিনের আলো দেখার সুযোগ হয়, নিজেকে বেমানান লাগে।’ মৌসুমীর এই স্ট্যাটাসই বলে দিচ্ছে, তার মনে কিছু অভিমান আর ব্যথা রয়েই গেছে। পাশাপাশি অভিনেত্রী সিলেটের বানভাসি মানুষের কথাও বলেছেন। লিখেছেন, ‘সিলেটবাসীর কাছে ছুটে যেতে ইচ্ছে করে। হয়তো সুযোগ হলে যাবো। আপনারা সবাই তাদের জন্য দোয়া করবেন।’ এর আগে গত মঙ্গলবার অডিও বার্তায় ওমর সানী দাবি করেন, ‘আমার আর মৌসুমীর মধ্যে যে সমস্যা ছিল, তা মিটে গেছে। আমরা একই ছাদের নিচে একসঙ্গে আছি। এক ঘরে থাকছি। আমি, মৌসুমী, ছেলেমেয়ে ফারদিন, ফাইজা, আমার ছেলের বউ আয়েশা- সবাই একসঙ্গে আছি। ভালো আছি, সুখে আছি।’ দাম্পত্য কলহ সম্পর্কে ওমর সানী বলেন, ‘স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কিছুটা খুনসুটি, হালকা দূরত্ব কার না হয়? আপনার মা-বাবার মধ্যে ছিল না? আপনার পাড়া-প্রতিবেশীর মধ্যে এটি দেখেছেন না? বা আপনার নিজের মধ্যে কি এটি নেই? আমরা কি দুধে ধোয়া তুলসী পাতা? তাহলে মৌসুমীকে কেন দোষ দিচ্ছেন?’ গত ১০ জুন রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে অভিনেতা-প্রযোজক ডিপজলের ছেলের বিবাহোত্তর সংবর্ধণা অনুষ্ঠানে জায়েদ খানকে চড় মারেন ওমর সানী। অভিযোগ, জায়েদ খান নাকি দীর্ঘদিন ধরে মৌসুমীকে নানা ভাবে বিরক্ত করেন, তাকে অসম্মান করেন। আজেবাজে মেসেজ পাঠান। চড় খাওয়ার পর জায়েদ খান নাকি কোমর থেকে পিস্তল বের করে ওমর সানীকে গুলি করার হুমকি দেন। যদিও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ডিপজল, চিত্রনায়িকা রোজিনা ও অঞ্জনার মতো জ্যেষ্ঠ শিল্পীরা দাবি করেন, পিস্তল বের করে গুলি করার হুমকি দেওয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। শুধু একটু কথা কাটাকাটি আর ধাক্কাধাক্কি। জায়েদ খানও শুরু থেকে এ ঘটনা অস্বীকার করে আসছেন। তার দাবি, বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুব কড়া। সেখানে কোনো ধরনের অস্ত্র নিয়ে ঢোকা যায় না। এদিকে, ঘটনার এক দিন পর জায়েদ খানের নামে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ জানান ওমর সানী। এর পরদিন সবাইকে অবাক করে ওমর সানীর বিপক্ষে গিয়ে জায়েদ খানের পক্ষে অডিও বার্তা দেন মৌসুমী। তিনি জানান, জায়েদ খান তাকে কোনোভাবে বিরক্ত করেন না। বরং বড় বোনের মতো সম্মান করেন। স্বামী ওমর সানীকে ‘ভাই’ সম্মোধন করে নায়িকা এও বলেন, ওমর সানী মিথ্যাচার করেছেন। এ ঘটনার আগে কাকপক্ষীও জানতো না, কী ঝড় বইছে সানী-মৌসুমীর দাম্পত্য জীবনে। গুঞ্জন ওঠে, এই তারকা দম্পতির ২৭ বছরের সংসার বুঝি এই ভাঙল। নইলে স্বামীর বিপক্ষে কেন কথা বলবেন মৌসুমী। জল্পনার পারদ আরও উপরে ওঠে, যখন ওমর সানী জানান, এক ছাদের নিচে থাকলেও প্রায় দেড় মাস মৌসুমীর সঙ্গে তার ফোনেও কথা হয় না। কিন্তু স্বামীর বিপক্ষে কেন গিয়েছিলেন মৌসুমী। এ বিষয়ে তারকা দম্পতির ছেলে ফারদিন এহসান স্বাধীন গণমাধ্যমে বলেছিলেন, মৌসুমী চান না ওমর সানীর সঙ্গে জায়েদ খানের দ্বন্দ্বটা বেশি দূর গড়াক। তাই বিষয়টা যাতে এখানেই থেমে যায়, সে কারণেই তিনি জায়েদের পক্ষে কথা বলেছিলেন। অবশেষে সানী মঙ্গলবার অডিও বার্তায় জানান, সবকিছু ঠিক হয়ে গেছে। এছাড়া কয়েকটি ছবি এবং ভিডিওতে সানী-মৌসুমীকে একসঙ্গে বসে খেতে দেখা যায়। সেটিও ইতিবাচক কিছুরই ইঙ্গিত দিয়েছিল। তবে মৌসুমীর দেওয়া ইনস্টাগ্রাম পোস্ট ফের যেন গোটা ঘটনায় একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন মেরে দিল।
সানী বললেন মিটে গেছে, মৌসুমীর স্ট্যাটাস বলছে ভিন্ন কিছু
0
Share.