ডেস্ক রিপোর্ট: সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে কুর্দি বিদ্রোহীদের সঙ্গে তুরস্কের যুদ্ধবিরতিতে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। শনিবার আঙ্কারায় এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতায় গত ১৭ অক্টোবর ৫ দিনের এ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় তুরস্ক। এরদোয়ান বলেন, ৫ দিনের সময়সীমার পর সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ফের অভিযান শুরু করবে আঙ্কারা। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হওয়া সমঝোতা বাস্তবায়ন না হলে সন্ত্রাসীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করবে তুর্কি বাহিনী। তুরস্ক সীমান্তবর্তী সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে শরণার্থীদের পুনর্বাসনের জন্য সেফ জোন তৈরির ব্যাপারে আঙ্কারার অবস্থানের কোনও পরিবর্তন হয়নি। সেফ জোনের জন্য তুরস্কের নির্ধারিত কিছু স্থানে রাশিয়ার সহযোগিতায় আসাদ বাহিনীর উপস্থিতির বিষয়েও কথা বলেন এরদোয়ান। তিনি বলেন, এ ইস্যুতে আমরা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলবো। আমাদের একটি সমাধান খুঁজে বের করা দরকার। ২০১৯ সালের ৯ অক্টোবর তুর্কি সীমান্তবর্তী সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় এলাকা থেকে সিরিয়ার কুর্দি বিদ্রোহীদের উৎখাতে অভিযান শুরু করে তুরস্ক। পরে ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতায় গত ১৭ অক্টোবর ৫ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় আঙ্কারা। তুরস্ক বলছে, দেশটি আশ্রয় নেওয়া ৩৬ লাখেরও বেশি সিরীয় শরণার্থীকে পুনর্বাসনের জন্য সেখানে তারা একটি সেফ জোন গড়ে তুলতে চায়। ১৭ অক্টোবর আঙ্কারায় তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, দুই দেশ এ ব্যাপারে একমত যে, উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার স্থলভাগে আঙ্কারা ও ওয়াশিংটনের আরও ঘনিষ্ঠ সমন্বয় প্রয়োজন। দুই দেশই ন্যাটো সদস্য হিসেবে পারস্পরিক সম্পর্কের বিষয়টি পুনরায় পুনর্ব্যক্ত করছে। নিজ দেশের সীমান্ত নিয়ে তুরস্কের বৈধ উদ্বেগের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র অনুধাবন করে। বিবৃতিতে বলা হয়, ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো প্রত্যেকেই প্রত্যেকের জন্য; এমন বোঝাপড়ার ভিত্তিতে যে কোনও হুমকির বিরুদ্ধে ন্যাটো ভূখণ্ড ও জনগণের সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্ক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। উভয় দেশ মানুষের জীবন, মানবাধিকার এবং ধর্মীয় ও নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে একমত যে, সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে শুধু সন্ত্রাসী এবং তাদের আস্তানা, বাসস্থান, অস্ত্র, যানবাহন ও সরঞ্জামাদিকেই লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হবে। তুরস্ক তুর্কি বাহিনী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সিরিয়ার নিরাপদ অঞ্চলের বাসিন্দাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। সিরীয় নাগরিক এবং বেসামরিক অবকাঠামোর সুরক্ষায় আঙ্কারা সর্বোচ্চ যত্নবান থাকবে। যৌথ ঘোষণায় সিরিয়ার রাজনৈতিক ঐক্য ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্ক নিজ নিজ দেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। প্রাথমিকভাবে তুর্কি সশস্ত্র বাহিনী সেফ জোন বা নিরাপদ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করবে। ওয়াশিংটন ও আঙ্কারা উভয়েই সিরিয়ায় পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করবে। সূত্র: আল জাজিরা।
সিরিয়ায় প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান এরদোয়ানের
0
Share.