ডেস্ক রিপোর্ট: যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোতে ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের সদস্যভুক্তিতে সম্মতি জানিয়েছে তুরস্ক। এক্ষেত্রে নিজেদের কোন সমস্যা নেই বলে জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে দুই দেশে ন্যাটোর সামরিক স্থাপনা নির্মাণ করা হলে কঠোর পরিণতি ভোগের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। আল-জাজিরা জানায়, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর প্রথমবার সাবেক সোভিয়েত দেশ তুর্কমেনিস্তানে সফর করছেন পুতিন। সেখানেই সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের সদস্যপদ নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। তুর্কমেনিস্তানের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনার পর রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমকে পুতিন বলেন, ‘ইউক্রেনের সঙ্গে আমাদের যে সমস্যা রয়েছে, সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের সঙ্গে একই সমস্যা নেই। তারা ন্যাটোতে যোগ দিতে চাইলে যোগ দিতে পারে।’ ‘‘কিন্তু তাদেরকে অবশ্যই বুঝতে হবে যে, বর্তমানের মতো অতীতেও তারা হুমকি ছিল না। যদি সামরিক বাহিনীর সদস্য এবং স্থাপনা দেশগুলোতে নির্মাণ করা হয়, সেক্ষেত্রে আমরা প্রতিক্রিয়া দেখাবো। আমাদের প্রতি যে ঝুঁকি তৈরি করা হবে একই ঝুঁকি তাদের প্রতি করা হবে।’’ উভয় দেশের ন্যাটোতে সদস্যভুক্তি নিয়ে তাদের সঙ্গে সম্পর্কের তিক্ততা তৈরি হয়েছে বলে স্বীকার করেন পুতিন। তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে সবকিছু স্বাভাবিক ছিল কিন্তু বর্তমানে সামান্য কিছু দুশ্চিন্তা অবশ্যই রয়েছে আর ভবিষ্যতেও তা নিশ্চিত থাকবে। যদি আমাদের আঞ্চলিক নিরাপত্তার প্রতি ঝুঁকি থাকে সেক্ষেত্রে অবশ্যই তা ঘটবে।’ চলতি সপ্তাহে সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়েছে তুরস্ক। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আকস্মিকভাবে রুশ হামলার প্রতিক্রিয়ায় নিরাপত্তা সংকটে ভুগতে থাকে সুইডেন ও ফিনল্যান্ড। তারপরই তারা ন্যাটোতে যোগদানের আবেদন জানায়। কিন্তু শুরুতে তুরস্ক তাদের সদস্যপদের বিরোধিতা করলেও পরে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। কোন দেশ ন্যাটোর সদস্য হতে হলে ন্যাটোভুক্ত সব দেশের সমর্থন থাকতে হয়। তুরস্কের বিরোধিতার কারণে সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের সদস্যপদ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এখন তুরস্ক সমর্থনের কারণে তাদের সদস্যপদ নিয়ে আপাতত কোন অনিশ্চয়তা নেই। উভয় দেশ ন্যাটোতে যোগদান করলে তা সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপের নিরাপত্তারক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এক প্রতিক্রিয়ায় বিবিসির নিরাপত্তা বিষয়ক সংবাদদাতা ফ্রাঙ্ক গার্ডনার বলেছিলেন, ফিনল্যান্ড ও সুইডেন আধুনিক, গণতান্ত্রিক আর সুপ্রশিক্ষিত সামরিক বাহিনীর অধিকারী দেশ হওয়ায় তা ন্যাটো উত্তরাঞ্চলে হুমকি মোকাবিলা শক্তিশালী করে তুলবে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ানের কার্যালয় থেকে বলা হয়, সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের কাছ থেকে তারা যা চেয়েছে, ‘সেটা পেয়েছে’।