ডেস্ক রিপোর্ট: বেইজিংয়ে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত টেরি ব্র্যানস্টাডকে তলব করেছে চীন। হংকং ইস্যুতে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে সর্বসম্মতভাবে পাস হওয়া একটি বিলের প্রতিবাদ জানাতে সোমবার তাকে তলব করা হয়। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স। যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টে ‘হংকং হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্র্যাসি অ্যাক্ট’ পাসের দাবি নিয়ে হংকং-এর মার্কিন কনস্যুলেট অভিমুখে একদল বিক্ষোভকারী এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে ‘হংকং হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্র্যাসি অ্যাক্ট’ নামের একটি বিল কণ্ঠভোটে পাস হয়। চীনা কর্তৃপক্ষের দমনপীড়ন থেকে হংকং-এর গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারীদের সুরক্ষায় এ বিল পাসের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এতে অঞ্চলটির মানবাধিকার সুরক্ষার বিষয়ে মার্কিন সমর্থনের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়। সিনেটে পাস হওয়ার পর বিলটি এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে তোলা হবে। পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের অনুমোদন পেলে এটি প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানো হবে। তবে এ নিয়ে ওয়াশিংটনের ওপর ক্ষুব্ধ হয় বেইজিং। বেইজিং-এর দাবি, এই বিল পাসের মধ্য দিয়ে চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি এ ‘ভুল সংশোধনের’ আহ্বান জানিয়েছেন চীনা উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেং জিগুয়াং। তার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটেও এ সংক্রান্ত একটি নোটিস পোস্ট করা হয়েছে। এতে চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বন্ধের জন্য ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। জেং জিগুয়াং-এর দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে পাস হওয়ার বিলের মাধ্যমে হংকং-এর বিক্ষোভকারীদের সহিংসতায় উসকানি দেওয়া হয়েছে; যা আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতির গুরুতর লঙ্ঘন। এ ঘটনায় বেইজিং তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করছে। এদিকে হংকং-এর জনগণের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতির প্রতি সম্মান দেখাতে চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, অঞ্চলটির মানুষ শুধু স্বাধীনতা চায়; চীন-ব্রিটিশ যৌথ ঘোষণাপত্রে যার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল
উল্লেখ্য, কয়েক মাস ধরে বিক্ষোভ চললেও সম্প্রতি হংকং-এর গণতন্ত্রপন্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। গত ১৮ নবেম্বর ভোর থেকেই হংকং পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটি এলাকায় বিক্ষোভকারীদের তীব্র সংঘর্ষে জড়ায় পুলিশ। এক পর্যায়ে ব্যারিকেডের পেছন থেকে পুলিশের দিকে পেট্রোল বোমা ও তীর ছুড়ে মারে আন্দোলনকারীরা। এতে ইউনিভার্সিটির প্রবেশপথে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার কিছুক্ষণ আগেই পুলিশের পক্ষ থেকে বিক্ষোভকারীদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়, পুলিশের ওপর হামলা বন্ধ করা না হলে তারা বিক্ষোভরতদের ওপর গুলি ছুড়বে। এমন পরিস্থিতিতেই পার্লামেন্টে বিল এনে হংকং-এর বাসিন্দাদের মানবাধিকার সুরক্ষার বিষয়ে সমর্থনের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে যুক্তরাষ্ট্র।