বিনোদন ডেস্ক: কিংবদন্তি কথাসহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের নাটক এবং চলচ্চিত্রের অভিনয়শিল্পীরা কে কোথায়-এর প্রথম পর্বের আলোচনা ছিল আসাদুজ্জামান নূর, আবুল হায়াত ও চ্যালেঞ্জারের মতো তিন প্রখ্যাত অভিনেতাকে নিয়ে। আজকে আমরা জানব আরও তিন গুণী অভিনয়শিল্পী সম্পর্কে, যারা এক সময় নিয়মিত হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে কাজ করেছেন। চলুন তবে জেনে নিই তাদের সম্পর্কে-
এজাজুল ইসলাম: প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের হাত ধরেই অভিনয় জগতে এসেছিলেন পেশায় চিকিৎসক এজাজুল ইসলাম। প্রথম নাটক ১৯৯৮ সালে নির্মিত ‘সবুজ সাথী’। পরের বছর হুমায়ূন আহমেদের ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ সিনেমাটির মাধ্যমে চলচ্চিত্রেও অভিষেক করেন। পরবর্তীতে ‘তারা তিনজন’, ‘টি মাস্টার’, ‘সমুদ্র বিলাস প্রাইভেট লিমিটেড’, হাবলঙ্গের বাজারে, ‘জুতা বাবা’সহ হুমায়ূন আহমেদের অনেক নাটকে অভিনয় করেন এজাজুল ইসলাম। পাশাপাশি প্রয়াত নির্মাতার ‘দুই দুয়ারী’, ‘চন্দ্রকথা’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’ ও ‘আমার আছে জল’ সিনেমাগুলোতেও তাকে দেখা গেছে। চলে গেছেন হুমায়ূন আহমেদ। তবে তার হাতেগড়া ডা. এজাজুল ইসলাম অভিনয় করেন এখনো। বহু দিন কোনো সিনেমা না করলেও ছোটপর্দায় প্রায় তার দেখা মেলে। অভিনয়ের পাশাপাশা চিকিৎসা পেশাটাও এজাজুল ইসলাম সামলাচ্ছেন অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউক্লিয়ার মেডিসিন বিভাগের প্রধান হিসেবে কর্মরত আছেন।
ফারুক আহমেদ: হুমায়ূন আহমেদের আরেক হাতিয়ার। ফারুক আহমেদের স্বভাবসিদ্ধ অভিনয় মুগ্ধ করেনি, এমন ভক্ত নেই বললেই চলে। তার অভিনয়ে হাতেখড়ি মঞ্চ নাটক থেকে। ২৫ বছর সেখানে কাজ করেছেন হুমায়ূন ফরীদি, আফজাল হোসেন, সুবর্ণা মুস্তাফা, শিমুল ইউসুফ, রাইসুল ইসলাম আসাদ ও আহমেদ রুবেলের মতো শিল্পীদের সঙ্গে। ফারুক আহমেদ অভিনীত প্রথম টেলিভিশন নাটক ১৯৯১ সালে ইমদাদুল হক মিলনের ‘বড় রকমের মানুষ’। সেখানে তাকে রসিকলাল চরিত্রে দেখা যায়। দর্শকের পাশাপাশি রসিকলাল নজর কাড়েন হুমায়ূন আহমেদেরও। ওই বছরই ফারুক আহমেদকে তিনি কাজ করান তার ‘অচিন বৃক্ষ’ নাটকে। সেখানেও তার অভিনয় ছিল দুর্দান্ত। হুমায়ূন আহমেদের প্রিয় হয়ে ওঠেন ফারুক আহমেদ। হুমায়ূন আহমেদের সবচেয়ে বেশি নাটকে অভিনয় করেছেন এই ফারুক আহমেদ। তার মধ্যে বনুর গল্প, বৃক্ষ মানব, গৃহসুখ প্রাইভেট লিমিটেড, যমুনার জল দেখতে কালো, চোর, জইতরী, ভূত বিলাস, হাবলঙ্গের বাজারে, ২৪ ক্যারেট ম্যান, তারা তিনজন, মহান চৈনিক চিকিৎসক: ওয়াং পি, চার দুকোণে চার, রুপালি রাত্রি, এনায়েত আলীর ছাগল, উড়ে যায় বকপক্ষী উল্লেখযোগ্য। এখনো অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত আছেন ফারুক আহমেদ। হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পর মোশাররফ করিমের সঙ্গে ভালো একটা জুটি গড়ে ওঠে ফারুক আহমেদের। তারা একসঙ্গে মানিব্যাগ, বিহাইন্ড দ্যা সিন, বিহাইন্ড দ্য ট্রাপ নাটকগুলো উপহার দিয়েছেন। সেগুলো দারুণ দর্শকপ্রিয়তাও পেয়েছে। আসছে ঈদের জন্যও একাধিক নাটক করছেন তিনি। এছাড়া বর্তমানে তিনি নাটক রচনা এবং পরিচালনায়ও করেন।
স্বাধীন খসরু: হুমায়ূন আহমেদের নাটকের আরেক নিয়মিত শিল্পী ছিলেন স্বাধীন খসরু। তিনি বহু আগে থেকেই লন্ডনপ্রবাসী। তবে তাকে হুমায়ূন আহমেদের এতটাই পছন্দ ছিলেন যে, নাটকের কাজ পড়লেই ডেকে পাঠাতেন। স্বাধীন খসরুও হুমায়ূন আহমেদকে খুব পছন্দ করতেন। তাই ডাকলেই তিনি লন্ডন থেকে ছুটে আসতেন। প্রয়াত নির্মাতার বহুল জনপ্রিয় ‘তারা তিনজন’ সিরিজের প্রতিটি নাটকেই স্বাধীন খসরুকে দেখা গেছে। এছাড়া হুমায়ূন আহমেদের ‘বৃক্ষ মানব’, ‘জুতা বাবা’, ‘উড়ে যায় বকপক্ষী’সহ বেশ কিছু নাটকে তিনি অভিনয় করেছেন। পাশাপাশি অভিনয় করেছেন হুমায়ূন আহমেদের ‘চন্দ্র কথা’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’ সিনেমাগুলোতেও। হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পর অভিনয়ে একেবারেই অনিয়মিত স্বাধীন খসরু। আগের মতো এখনো তিনি লন্ডনপ্রবাসী। দেশে আসেন কালেভদ্রে।