বুধবার, ডিসেম্বর ২৫

হৃত্বিককে চরম অপমান করেন সালমান, রেহাই পাননি নিজেও

0

বিনোদন ডেস্ক: নায়ক হিসেবে বলিউডে অভিষেকের আগে একটি রোগাপাতলা ছেলেকে বডি বিল্ডিংয়ের নানা টিপ্‌স দিয়েছিলেন সুপারস্টার সালমান খান। সে সময় অনেকেই ওই ছেলেটিকে চিনতেন অভিনেতা তথা প্রযোজক-পরিচালক রাকেশ রোশনের পুত্র বলে। তবে ২০০০ সালে ওই রোগাপাতলা ছেলেটির ‘কাহো না প্যায়ার হ্যায়’ মুক্তির পর সে ছবিই উল্টে গিয়েছিল। রাকেশকেই লোকজন ‘হৃত্বিক রোশনের বাবা’ বলে পরিচয় দিতে শুরু করেন। ‘কাহো না প্যায়ার হ্যায়’ মুক্তির পর রাতারাতি তারকা হয়ে উঠেছিলেন হৃত্বিক। শাহরুখ, আমির এবং সালমান- বলিউডের তিন খানের রাজত্বেও থাবা বসিয়েছিলেন তিনি। এর আঁচ নাকি পড়েছিল হৃত্বিক এবং সালমানের বন্ধুত্বেও। অন্তত বলিউডের অন্দরে তেমনই জল্পনা। ২০০০ সালের আগে থেকেই সালমানের সঙ্গে বন্ধুত্ব হৃত্বিকের। বন্ধুত্বের চেয়েও তাদের মধ্যে খানিকটা গুরু-শিষ্যের সম্পর্ক ছিল। বলিউডের অন্দরের অনেকেই এ কথা বলেন। তবে যে হৃত্বিককে প্রায় হাতে ধরে দেহসৌষ্ঠব তৈরির খুঁটিনাটি শিখিয়েছিলেন, তাকেই কিনা একবার চরম অপমান করে বসেন সালমান! ‘কাহো না পেয়ার হ্যায়’ মুক্তির পর প্রায় ১০ বছর টিকেছিল হৃত্বিক-সালমানের বন্ধুত্ব। তার পরই ছন্দপতন! ২০১০ সালে মুক্তি পেয়েছিল সঞ্জয় লীলা বানশালির ‘গুজারিশ’। সমালোচকদের প্রশংসা কুড়ালেও হৃত্বিক অভিনীত ছবিটি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়েছিল। ওই ছবিতে হৃত্বিকের বিপরীতে নায়িকা ছিলেন সালমানের সাবেক প্রেমিকা ঐশ্বরিয়া রাই। এমন মুখরোচক ‘কাস্টিং’ও বাঁচাতে পারেনি বানশালির ‘গুজারিশ’কে। সেই ছবি নিয়েই সালমান-হৃতিকের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়েছিল। ‘গুজারিশ’ মুখ থুবড়ে পড়ায় তা নিয়ে হৃত্বিককে খোঁচা দিয়েছিলেন সালমান। সাক্ষাৎকারে চাঁছাছোলা ভাবে বলেন, ‘আরে! ওই ছবিতে তো মাছি উড়ে বেড়াচ্ছিল। কোনো মশাও তা দেখতে যায়নি। এমনকি, কোনো কুকুরও না।’ সালমানের ওই কটূক্তি নিয়ে ফিল্মি দুনিয়ায় শোরগোল পড়তে দেরি হয়নি। চুপ ছিলেন না হৃত্বিকও। তবে সালমানের মন্তব্যের জবাবে শালীনতা বজায় রেখেছিলেন তিনি। তার জবাব ছিল, ‘সালমান খানকে সবসময় ভালো মানুষ হিসেবেই চিনি। যার থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছি, যার তারিফ করেছি। এখনও করি। উনি সবসময় আমার হিরো। তা-ই থাকবেন। তবে হ্যাঁ, একজন পরিচালক বক্স অফিসে তোমার ফিল্মের মতো টাকা না কামালেই তার কাজ নিয়ে তাকে হেয় করব, হাসিঠাট্টা করব, এটা খুব একটা নায়কোচিত নয়। ‘গুজারিশ’ নিজের মতো করে চূড়ান্ত সফল। এভাবে মিস্টার বানশালির বিরুদ্ধে কেউ মন্তব্য করলে আমি খুব ব্যথিত হবো।’ সে সময় সালমানকে খানিকটা উপদেশও দিয়েছিলেন হৃত্বিক। বলেছিলেন, ‘আমার মতে, হিরোরা কখনও অন্যের ব্যর্থতায় আনন্দ পান না। আপনি চূড়ান্ত সফল হলে বরং আরও দয়ালু হবেন। অন্যের ব্যর্থতায় তার সঙ্গে শত্রুতার বদলে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেবেন। সকলকে ভালোবাসায় ভরিয়ে তুলুন। তাদের নিয়ে ঠাট্টা করবেন না। আমি এখনই ওকে ক্ষমা করে দিয়েছি। কারণ, মনে হয় যে ওর মধ্যে আসলে আমার প্রতি ভালোবাসা ছাড়া আর কিছু নেই। একটা বেহিসেবি মুহূর্তে ওই মন্তব্য করেছেন সালামন। পরের বার দেখা হলে উনি আমাকে জড়িয়ে ধরবেন বলেই আশা রাখি।’ হৃত্বিকের মন্তব্যের পরেও অবশ্য বিষয়টি মিটমাট হয়নি। পরের বছর নিজের টক-শোয়ে সরাসরি না হলেও সে প্রসঙ্গ তুলে আনেন পরিচালক-প্রযোজক করণ জোহর। ২০১১ সালের ওই শোয়ে হৃত্বিকের কাছে তিনি জানতে চান, বাস্তবে সুপারহিরো হলে সালমানের কাছ থেকে কী কেড়ে নিতে চাইবেন? উত্তরে হৃত্বিকের জবাব, ‘সকলেই সালমানকে ভালোবাসেন। তবে তিনি ভাবেন, সকলেই তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। সালমানের মধ্যে ‘ভিক্টিম সিনড্রোম’ রয়েছে। সেটা কেড়ে নিতে চাইব।’ তবে কি সালমান-হৃত্বিকের মনোমালিন্য মেটেনি? তা অবশ্য নয়। ২০১৯ সালে সালমানের টেলিভিশন রিয়ালিটি শো ‘বিগ বস্‌’-এ গিয়েছিলেন হৃত্বিক। একসময় দেখা গেল দুজনেই বলিউডি গানের তালে কোমর দোলাচ্ছেন। কোন গান? ‘কাহো না প্যায়ার হ্যায়’। সেটাই তো এত দিন পরস্পরকে বলছিলেন সালমান আর হৃত্বিক!

Share.