হ্যাচারি-ফার্মে ফসলি জমির ক্ষতি, প্রতিবাদে উল্টো ‘হুমকি’

0

ঢাকা অফিস: সিরাজগঞ্জের তাড়াশের দেশীগ্রাম ইউনিয়নের উত্তর সীমান্তবর্তী টাগড়া গ্রামের উত্তরপার্শ্বে গড়ে ওঠেছে ‘মেসার্স ব্রিডার এগ্রো ফার্ম অ্যান্ড হ্যাচারি’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। প্রায় ৯ একর তিন ফসলি জমির ওপর গড়ে ওঠা ওই প্রতিষ্ঠানে ব্রিজের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে পাশের ফসলগুলোর জমে থাকা পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হচ্ছে। যার ফলে ফসলগুলোর অনেক ক্ষতি হচ্ছে। এর প্রতিবাদ করতে গেলে ফার্মের মালিকের লোকজন উল্টো চাঁদাবাজির মামলার হুমকি দেন বলে জানান স্থানীয়রা। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে মেসার্স ব্রিডার এগ্রো ফার্ম অ্যান্ড হ্যাচারির মালিক মাসুম মিয়া উপজেলার টাগরা গ্রামের নইমুদ্দিন ও সুহারা গ্রামের আব্দুল আলিমের থেকে প্রায় ৯ একর জমি কিনে নেন। মূলতঃ সেসময় মালিক পক্ষ এলাকাবাসীদের জানান, সেখানে হাসপাতাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে। আর হাসপাতাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার কথা বলায় বিক্রয় করা জমির মালিকরা বাজার মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে ওই জমিগুলো বিক্রি করে দেন। আর জমি কেনার পর এক বছরের মধ্যেই ওইসব জমিতে মাটি ভরাট করার কাজ শুরু করেন মালিক পক্ষ। মাটি ভরাটের পর তারা প্রথমে চারিদিকে বাউন্ডারি করে। পরে ভেতরে নির্মাণ কাজ শুরু করেন। পরে কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে, সেখানে মেসার্স ব্রিডার এগ্রো ফার্ম অ্যান্ড হ্যাচারি গড়ে তোলেন। বর্তমানে সেই ফার্মের লেয়ার মুরগির বিষ্ঠার গন্ধে স্থানীয়রা অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। একাধিক স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, ফার্মের বাউন্ডারির ভেতরে এলাকার লোকজনকে ঢুকতে দেওয়া হতো না। তাই, তারা প্রথমে বুঝতে পারেন নাই সেখানে কি হচ্ছে। পরে মুরগির বিষ্ঠার দুর্গন্ধ বের হওয়ায় তারা বুঝতে পারছেন, এখানে লেয়ার মুরগির ফার্ম গড়ে তোলা হয়েছে। এমনকি ওই ফার্মের প্রধান দুইটি গেটে প্রতিষ্ঠানের কোন সাইনবোর্ড ব্যবহার করা হয়নি বলে জানান তারা। তারা আরও জানান, টাগড়া চৌরাস্তা থেকে রানীর সড়কের ফার্ম এলাকায় ব্রিজের মুখ বন্ধ করে এ ফার্ম গড়ে তোলা হয়েছে। ফলে ফার্মের উত্তর মাঠের পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। ভারী বৃষ্টিপাতে পানি নিষ্কাশন হতে না পেরে জমির ফসল বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মনির উদ্দিন, নবীর উদ্দিন, যুবলীগ নেতা সুলতান মাহমুদসহ স্থানীয়রা জানান, ফসলি মাঠের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ ওই ব্রিজের মুখ বন্ধ করে ফার্ম নির্মাণ করা হয়েছে। আর এর প্রতিবাদ করতে গেলে ফার্মের মালিকের লোকজন চাঁদাবাজির মামলার হুমকি দিয়ে থাকে। এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে মেসার্স ব্রিডার এগ্রো ফার্ম অ্যান্ড হ্যাচারিতে অবস্থান করা দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুদ বলেন, ‘নিয়মনীতি মেনেই ফার্ম করা হয়েছে। আপনার মত অনেক সাংবাদিক এখানে এসেছে। তারাতো নিউজ করছে না। আমারও অনেক সাংবাদিক আছে।’ অন্যদিকে দেশীগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘এখানে লেয়ার মুরগির ফার্ম করায় বিষ্ঠার গন্ধে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।’ তাড়াশ ইউএনও মেজবাউল করিম জানান, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share.