সোমবার, ডিসেম্বর ২৩

১শ’কোটি টাকা পরিশোধ করল গ্রামীণ ফোন

0

ঢাকা অফিস: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বিশেষ নিরীক্ষায় উদঘাটন হওয়া ৭শ’ কোটি টাকা অপরিশোধিত মূল্য সংযোজন করের (ভ্যাট) মধ্যে ১শ’ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণ ফোন। এনবিআরের প্রাথমিক দাবিনামা জারির প্রেক্ষিতে গ্রামীণ ফোন গত সপ্তাহে এই অর্থ পরিশোধ করে। এনবিআরের ভ্যাটের বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (এলটিইউ) একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে কমিশন পরিশোধকালে কর্তিত ভ্যাট সরকারের ঘরে জমা দেয়নি প্রতিষ্ঠানটি। এনবিআরের বিশেষ নিরীক্ষায় এই বিষয়টি উদঘাটন হওয়ার পর আমরা গ্রামীণ ফোনের কাছে প্রাথমিক দাবিনামা জারি করি। এর প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটি ১শ’ কোটি টাকা পরিশোধ করে। তবে ১শ’ কোটি টাকা পরিশোধ করলেও এনবিআরের নিরীক্ষার কিছু বিষয়ে গ্রামীণ ফোন আপত্তি জানিয়েছে বলে তিনি জানান। এনবিআরের এই কর্মকর্তা বলেন, তাদের আপত্তির বিষয়গুলো যাচাই-বাছায়ের জন্য ভ্যাট এলটিইউ’র একজন অতিরিক্ত কমিশনারের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করে দেখছে। নিরীক্ষার ক্ষেত্রে যদি কোথাও অসঙ্গতি বা ভূল হয়ে থাকে সেটি সংশোধন করা হবে। ভ্যাটের অপরিশোধিত বাকী টাকা গ্রামীণ ফোন স্বল্পতম সময়ের মধ্যে পরিশোধ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সাল থেকে চার বছরের গ্রামীণফোনের বিভিন্ন নথিপত্র নিরীক্ষা করে ৭শ’ কোটি টাকার রাজস্বের অর্থ পরিশোধ না করার বিষয়টি বের করে এনবিআরের কর্মকর্তারা। ভ্যাট আইন অনুযায়ী, কোনো প্রতিষ্ঠান সেবা গ্রহণের পর সেবার মূল্য বা কমিশন পরিশোধকালে ১৫ শতাংশ হারে মূসক কর্তন করে সরকারের কোষাগারে জমা দিতে হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি চার বছর ধরে এ অর্থ জমা দেয়নি। প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। কমিশন প্রদানকালে আলোচ্য ভ্যাট ছাড়াও বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনকালে নির্বাচন কমিশনে সংরক্ষিত আঙুলের ছাপ মিলিয়ে দেখার জন্য ভোটারের তথ্যভান্ডার ব্যবহার করে। এর বিপরীতে নির্বাচন কমিশনকে প্রদত্ত ফির ওপর ভ্যাট কর্তনের কথা। কিন্তু ওই ভ্যাট এনবিআরকে পরিশোধ করেনি গ্রামীণ ফোন। বাংলাদেশ রেলওয়ে লিজের সেবামূল্য পরিশোধের সময় আদায়কৃত ভ্যাটও সরকার পায়নি বলে জানা গেছে। সব মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটির অপরিশোধিত ভ্যাটের পরিমান দাঁড়িয়েছে ৭শ’ কোটি টাকা। বিদ্যমান ভ্যাট আইন অনুযায়ী, প্রাথমিক দাবিনামা জারির পর অর্থ পরিশোধ কিংবা জবাব দেওয়ার জন্য দুই সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। অর্থ পরিশোধ না হলে চূড়ান্ত দাবিনামা জারি করা হয়।

Share.