ডেস্ক রিপোর্ট: ইরানে গোলার আঘাতে ১৭৬ আরোহী নিয়ে বিধ্বস্ত হওয়া ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমানটির ব্লাকবক্স ‘অকেজ’ বলে দাবি করছে তেহরান। এটি কোন তদন্ত কাজেই আর কাজে আসবে না বলে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে দিয়েছে ইরান। তবে কোন দেশ চাইলে এটা পরীক্ষা করে দেখতে পারে বলেও জানিয়েছে তেহরান। খবর আরব নিউজের। ইরানের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন বাহারভান্দ দেশটির রাষ্ট্রীয় ইরনাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বিমান বিধ্বস্তের বিষয়ে ইরানের তদন্ত প্রায় শেষ। এখন ইউক্রেন বা তৃতীয় কোন দেশ চাইলে এটি পরীক্ষা করে দেখতে পারে। বিমানটি এ বছরের জানুয়ারির ৮ তারিখ ভোরে তেহরান বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ণের পরই বিধ্বস্ত হয়। তখন অবশ্য ইরান দাবি করে আসছিল, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিধ্বস্ত হয়েছে। কিন্তু কয়েকদিন সেটেলাইটে ধারণ করা একটি ফুটেজে দেখা যায়, বিমানবন্দরের পাশে থেকে আসা একটি গোলার আঘাতে এটি বিধ্বস্ত হয়। অবশেষে ১১ জানুয়ারি ইরানের সামরিক বাহিনী স্বীকার করে, অনিচ্ছাকৃতভাবে ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমানটিকে ভূপাতিত করেছে তারা। যাতে ১৭৬ আরোহী নিহত হয়েছে। তখন বিবৃতিতে বলা হয়, ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের একটি স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ সাইটের কাছাকাছি যাত্রীবাহী বিমানটি চলে আসলে ‘মানব ত্রুটির’ কারণে বিমানটি ভূপাতিত হয়। বিমানটিকে “শত্রু টার্গেট” মনে করে ভুল করা হয় এবং ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়, বিবৃতিতে বলা হয়। এর আগে ইরান এ কখা অস্বীকার করে আসছিল। কিন্তু ইরান হয়তো ভুল করে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিমানটি ভূ-পাতিত করেছে- যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এমন দাবি তোলার পর থেকে ইরানের উপর চাপ বাড়তে থাকে। ইউক্রেনের ওই ফ্লাইটটি ইউক্রেনীয় রাজধানী কিয়েভ হয়ে কানাডার টরেন্টোর দিকে যাচ্ছিল, কিন্তু উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরেই ইমাম খোমেনি বিমানবন্দরের কাছে আছড়ে পরে এটি। মার্কিন গণমাধ্যমে বলা হয় যে, ইরান যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল তাই তারা হয়তো ইউক্রেনীয় এয়ারলাইন্সের বিমানটিকে যুদ্ধবিমান ভেবে ভুল করেছে। কারণ জানুয়ারির ৩ তারিখে ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলেইমানি মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হওয়ার প্রতিশোধ হিসেবে আকাশ পথে হামলা চালায় ইরান। বিধ্বস্ত বিমানে নিহতদের মধ্যে ৮২ জন ইরানের, ৫৭ জন কানাডার এবং ১১ জন ইউক্রেনের নাগরিক ছিলেন। এছাড়া সুইডেন, যুক্তরাজ্য, আফগানিস্তান এবং জার্মানির নাগরিক থাকার কথাও জানা যায়। কানাডা গত কয়েক মাস ধরেই বিধ্বস্ত বিমানের ব্লাকবক্সটি পরীক্ষা করার জন্য চেয়ে আসছে ইরানের কাছে।
১৭৬ আরোহী নিয়ে ইরানে বিধ্বস্ত উক্রেনের বিমানটির ব্লাকবক্স ‘অকেজ’
0
Share.