২ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন রামেকের সিসিইউ, আতঙ্কে রোগীরা

0

ঢাকা অফিস: রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডটি মূলত হৃদরোগীদের জন্য নির্ধারিত একটি ওয়ার্ড। ওই ওয়ার্ডে সংকটাপন্ন রোগীদের ভর্তি ও চিকিৎসা দেয়া হয়।করোনাকালে হৃদরোগে আক্রান্তদের ভরসাও ৩২নং ওয়ার্ড ও মেডিকেল হাসপাতালের সিসিইউ। কিন্তু হঠাৎ করেই রোববার দিনগত রাত ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ২ ঘণ্টা অন্ধকার হয়ে পড়ে স্পর্শকাতর এ ওয়ার্ড। বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় ওয়ার্ডের ফ্যান ও শীতাতপ ব্যবস্থা। ফলে এই ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীদের স্বজনদের মাঝে উৎকণ্ঠা দেখা দেয়। তবে মেরামতের ২ ঘণ্টা পর রাত ১২টায় ৩২নং ওয়ার্ডে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল হয়।ওয়ার্ডে থাকা হৃদরোগে আক্রান্ত নওগাঁর একজন রোগীর স্বজন জানান, আকস্মিকভাবে রোববার দিনগত রাত ১০টার দিকে ৩২নং ওয়ার্ডের সিসিইউর কয়েকটি ফ্যানের বৈদ্যুতিক সংযোগ বিকল হয়ে পড়ে। ওয়ার্ডের এসিসহ হৃদরোগীর জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও অচল হয়ে যায়।ফলে ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীদের স্বজনদের মাঝে আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ে। তারা ছোটাছুটি শুরু করেন অন্ধকারে। জীবন সংকটে পড়েন রোগীরা।এই ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন সংকটাপন্ন রোগীদের স্বজনদের অভিযোগ, হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে। শেষে গণপূর্ত বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের খবর দিলে তিনজন টেকনিশিয়ান ঘটনাস্থলে গিয়ে রাত ১২টায় ওয়ার্ডের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা সচল করেন।জানা গেছে, রোববার রাতের বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের পর সোমবার সকালে ওয়ার্ডের সিসিইউ থেকে তিনজন রোগীকে অন্যত্র চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান স্বজনরা।এদিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীদের স্বজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনাকালীন যদিও কোনো সিনিয়র চিকিৎসক কোনো ওয়ার্ডে পা রাখেন না, তবু শারীরিক সমস্যা প্রকট হলে স্বজনরা রামেক হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন রোগীদের।ভর্তির পর তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত হচ্ছে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ইন্টার্ন ও জুনিয়র চিকিৎসকরা রোগীদের পরামর্শ ও চিকিৎসা দিচ্ছেন। এ কারণে হাসপাতালের অধিকাংশ ওয়ার্ডের চিকিৎসাব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে।পরিচ্ছন্নতার অভাবে ওয়ার্ডগুলোতে দুর্গন্ধে ঢোকা প্রায় অসম্ভব। করোনার ভয়ে পরিচ্ছন্নকর্মীরা প্রায় মাসাধিককাল ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন না।অন্যদিকে অধিকাংশ ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকরা ওয়ার্ডে না যাওয়ায় রামেক হাসপাতালে রোগী ভর্তির হারও কমে গেছে আশঙ্কাজনকভাবে।ভুক্তভোগী একজন স্বজন অভিযোগে বলেন, রামেক হাসপাতালের কোনো ওয়ার্ডেই দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক পা দেন না। সব চিকিৎসা চলছে ফোনে ফোনে। রোগীর শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ ছাড়াই দেয়া হচ্ছে ওষুধপত্র। ওষুধ সরবরাহও করা হচ্ছে না হাসপাতাল থেকে।রোগীর স্বজনরাই ওষুধ কিনে রোগীকে সরবরাহ করছেন। নার্সরা শুধু ওয়ার্ডের বাইরে টুল-চেয়ার পেতে বসে ওয়ার্ডের গেট পাহারা দিচ্ছেন।সিসিইউ ওয়ার্ডে ২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকা ও হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোতে চিকিৎসা পরিষেবার বেহাল দশা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম আতাতুর্ক সোমবার দুপুরে যুগান্তরকে বলেন, ৩২নং সিসিইউ ওয়ার্ডে ২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকার বিষয়টি তাকে কেউ জানায়নি। কেন স্পর্শকাতর একটি ওয়ার্ডে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটেছে তিনি খোঁজ নেবেন।

Share.