৯ দিন পর রাজধানীতে চলেছে বাস

0

ঈদুল আজহার পর দিন (২৩ জুলাই) থেকে বন্ধ হয়ে যায় দেশের সব গণপরিবহণ চলাচল। সে হিসাবে গত নয় দিন বন্ধ ছিল বাস চলাচল। কিন্তু, রপ্তানিমুখী শিল্প শ্রমিকদের ঢাকায় আসার সুযোগ করে দিতে গতকাল শনিবার রাত থেকে আজ রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত গণপরিবহণ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। সকাল থেকে শুরু হয় পোশাকশ্রমিকদের জন্য বাস চলাচল।নয় দিন পর আজ সকাল থেকে শ্রমিকদের আনা-নেওয়ার কারণে স্বল্প পরিসরে কিছু গাড়ি চলতে দেখা গেছে। তবে, পরিবহণ শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, যাত্রীর সংখ্যা খুবই কম। সব রুটেই অল্প কিছু বাস বের হয়েছে। সেগুলোতেও যাত্রী সংকট।আজ রোববার সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, যাত্রাবাড়ী সায়েদাবাদ, মতিঝিল, পল্টন, শাহবাগ, মগবাজার,কারওয়ান বাজার, ফার্মগেটসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীতে অল্প সংখ্যক বাস চলাচল করছে। বাসস্ট্যান্ডগুলোতে যাত্রীদের তেমন ভিড় নেই। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ধরে নোয়াখালী ও কুমিল্লার অল্প সংখ্যক দূরপাল্লার বাস চলাচল করতে দেখা গেছে।রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ডে গুলিস্তান রুটে চলাচলকারী শ্রাবণ পরিবহণের ছয়-সাতটি বাস সারি ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। যাত্রী কম থাকায় বেশ সময় নিয়ে এক একটি বাস পূর্ণ হচ্ছিল।রজনীগন্ধা গাড়ির সুপারভাইজার রবিউল ইসলাম বলেন, এই রুটে শত শত গাড়ি থাকলেও অল্প কয়েকটি গাড়ি বের হয়েছে। গাড়ি চলবে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। তিনি বলেন,’মালিক কইছে গাড়ি চালাইস। যা পাস, তুই নিস, আমারেও কিছু দিস। কিন্তু যাত্রী তো নাই।’শিকড় নামের গাড়ির চালক বলেন, ‘এই অল্প সময়ের জন্য বেশির ভাগ গাড়িই নামেনি। যারাও গাড়ি নিয়ে নেমেছে, তারা যাত্রী পাচ্ছে না। গাড়ি ভরতে সময় লাগছে। দুপুরের মধ্যে দুই ট্রিপের বেশি দেওয়া যাবে না।’রাজধানীতে অনাবিল, রজনীগন্ধা, মুক্তিযোদ্ধা, মৌমিতা, মেঘলাসহ বিভিন্ন কোম্পানির দু-একটি করে বাস চলতে দেখা গেছে। তবে দুপুর ১২টার পরও রাজধানীতে বাস চলাচল অব্যাহত রয়েছে। দেশে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি উদ্‌বেগজনক পর্যায়ে চলে যাওয়ায় কয়েক মাস ধরে বিধিনিষেধ আরোপ করে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে আট দিনের জন্য শিথিল করা হয়েছিল বিধিনিষেধ। এরপর আবার গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েছে সরকার। আগামী ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত থাকবে এই বিধিনিষেধ।বিধিনিষেধে সব ধরনের গণপরিবহণ, সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ ছিল। খাদ্যপণ্য উৎপাদন-প্রক্রিয়াকরণ, চামড়া পরিবহণ-সংরক্ষণ ও ওষুধ খাত ছাড়া বন্ধ ছিল সব ধরনের শিল্পকারখানা।কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে রোববার থেকে রপ্তানিমুখী শিল্প-কারখানা খুলে দিয়েছে সরকার। এই ঘোষণার পর গতকাল শনিবার ঢাকামুখী মানুষের ঢল নামে। গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় কাজে যোগ দিতে শ্রমিকেরা সীমাহীন দুর্ভোগ সয়ে কর্মস্থলে ফিরছেন।যদিও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, শিল্পকারখানা খুললেও আপাতত কেউ কাজে যোগ না দিলে চাকরি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, তাঁরা চাকরি হারাবেন না। ঈদে বাড়ি গিয়ে যাঁরা ফিরতে পারেননি, তাঁরা ৫ আগস্টের পর পর্যায়ক্রমে ফিরবেন। শনিবার রাতে সরকারি তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়েছে, রপ্তানিমুখী শিল্পের শ্রমিক ও সংশ্লিষ্টদের কাজে যোগদানের সুবিধায় ১ আগস্ট দুপুর ১২টা পর্যন্ত গণপরিবহণ চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

Share.