সিলেট থেকে বিশেষ প্রতিনিধি: আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের সময়ে দুদক সেগুনবাগিচার প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত বর্তমানে সিলেটে কর্মরত মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মূর্তিমান আতঙ্ক দূর্নীতি দমন কমিশনের উপ সহকারী পরিদর্শক মো.বশির আহমেদ। আওয়ামী লীগের নেতাদের ফাইল গায়েব মাস্টার হিসেবে পরিচিতি পাওয়া এই মো.বশির আহমেদের কুকীর্তির শেষ নেই। ফাইল-দুর্নীতি-অপকর্ম করে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। চাকুরীতে পাওয়া বেতন আর তার সম্পদের মধ্যে রয়েছে বিস্তর ফারাক। অদৃশ্য কারণে এবং দুদক ও পুলিশ শব্দ নামের সাথে যুক্ত থাকায় কেউই ভয়ে এবং আতঙ্কে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ বা মুখ খোলতে সাহস পায়নি। বরঞ্চ মো.বশির আহমেদ নিজেই বিভিন্ন জনকে প্রশাসন দিয়ে করেছে হয়রানি ।সেই হয়রানি আর নির্যাতন থেকে মুক্তি পাইনি মো.বশির আহমেদের আপন ছোট ভাই এবং তার পরিবার মো.বশির আহমেদ তার ছোট ভাই এবং ভাইয়ের বউয়ের জায়গা ভোগ দখল করতে না পেরে নিজের ভাইয়ের কর্মস্থলে ভাইয়ের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে বিভিন্ন দপ্তরের বিভিন্ন পদ-পদবী পরিচয় দিয়ে নামে বেনামে একাধিক অভিযোগ করেন। তাতেই থেমে থাকেনি মো.বশির আহমেদ। তিনি নিজেও ভাইয়ের কর্মস্থলে ভাইয়ের বউ এবং ভাইয়ের বিরুদ্ধে পাঠিয়েছেন লিখিত অভিযোগ। তিনি ভাই এবং ভাইয়ের বউ এর বিরুদ্ধে উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, এসিল্যান্ড অফিস ও থানার ওসির কাছে দিয়ে রেখেছেন একাধিক অভিযোগ। যেই অভিযোগ গুলো একাধিক বার মিথ্যা প্রমাণিত হলেও কেউই নেননি মো.বশির আহমেদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার, মুরুব্বীরা একাধিকবার বিচার শালিশ করলেও মো.বশির আহমেদ মানেনি কারো কোনো বিচার বা কথা। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে সেগুনবাগিচা থেকে সরিয়ে সিলেট আনলেও জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে গোপনে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছেন বলেও জানা যায়। তিনি ঢাকায় দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত থাকার কারণে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় অনেক নেতাদের সাথে মো.বশির আহমেদের সখ্যতা গড়ে উঠে ।সেই সুবাধে মো.বশির আহমেদের বাড়ি বর্ডারের কাছাকাছি থাকায় আওয়ামী লীগের অনেক নেতাদের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সহযোগিতা করেছেন বলেও অনেকেই ধারণা করছেন।ফাইল গায়েবের মতো দুর্নীতি অপকর্মের পাহাড় গড়েও এখনো বহাল তবিয়তে আছেন মো.বশির আহমেদ।মো.বশির আহমেদ মৌলভীবাজারে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কাছে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসেন প্রফেসর রফিকুর রহমান, আওয়ামী লীগের সাবেক কৃষিমন্ত্রী উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদসহ দুদকের নজরে থাকা বিভিন্ন ব্যক্তিদের ফাইল গায়েব করে। মূলত মো.বশির আহমেদ ছিলেন একজন এনজিও কর্মী। তিনি ছাত্র জীবনে রাজনীতি করতে জাসদ। তিনি জাসদ করলেও তিনি ছিলেন প্রফেসর রফিকুর রহমান ও আওয়ামী লীগের সাবেক কৃষি মন্ত্রী উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদের খুব কাছের মানুষ। তাই তাদের সেই স্পর্শে গড়েও তোলেছেন নামে বেনামে টাকার পাহাড়। জানা যায় কমলগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল এবং শমশেরনগর রয়েছে তার একাদিক জায়গা, দিয়েছেন নিজের ছেলের চাকুরী, শুধু কি তাই খাটিয়েছেন ক্ষমতার দাপট ।তবে আওয়ামীলীগের পতন হলেও পতন হয়নি মো.বশির আহমেদের কারণ তিনি এখনো দাপট খাটিয়ে যাচ্ছেন দুদক শব্দের দাপটে। এই সকল অভিযোগের বিষয় নিয়ে কথা হয় বশির আহমেদের সঙ্গে।ভাই এবং ভাইয়ের জমি ভোগদখল বিষয়ে জানতে চাইলে বশির আহমেদ বলেন, আমি ওদের চুল পরিমান জমি দখল করার প্রশ্নই উঠে না, দেশে তো আইন কানুন আছে আমি তো আইনের উর্ধ্বে না ।আমি একজন সামাজিক মানুষ ।সাবেক চেয়ারম্যানসহ গ্রামের মায়-মুরব্বি নিয়ে মীমাংসা করার কথা ছিল কিন্তু তারা আসে নাই ।সাবেক চেয়ারম্যান পুষ্প কানু আমার বন্ধু মানুষ ।তার কাছে ফোন দিলে তিনি বলেন ,তোমার ভাই ছুটি পায় নাই, তখন আমি জিজ্ঞেস করি কবে বসবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, তোমার ভাই পরে জানাবে ,তখন আমি তোমাকে জানাবো। আওয়ামী লীগের সাবেক কৃষি মন্ত্রী উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ এর সাথে খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাইলে বশির আহমেদ নিজের সম্পর্কের কথা আড়াল করতে নিজেই যেন কথার পেঁচে ধরা পড়ে যান। তিনি বলেন, না, ই- আমি বিগত পাঁচ বছরের সাথে অ–আ উনি উনি আমাদের কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল ছিলেন। বিগত দশ বছরে উনার সাথে ব্যক্তি যোগাযোগ দেখা-সাক্ষাৎ বা টেলিফোনে আলাপ হয় নাই, মিনিমাম দশ বছর হবে। তিনি আওয়ামীলীগ নন, তিনি ছাত্র জীবনে জাসদ করতেন ।এই বিষয়ের সত্যতা জানতে চাইলে বশির আহমেদ বলেন, আমি ছাত্র জীবনে বাম পন্থী করতাম ,সংগঠনও করতাম আমি, এটা তো অনেক আগের কথা, কোনো দলের সাথে সম্পৃক্ততা নেই আমার। ১৯৯৬ সালে এনজিও থেকে চাকুরীচ্যূত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বশির আহমেদ বলেন, আমি এনজিও থেকে চাকুরীচ্যূত হওয়ার কোনো সুযোগই নেই, আমি ভাই-বোনদের সার্ভিস করতে গিয়ে দেনা গ্রস্ত হয়ে গিয়েছিলাম ।দেনা গ্রস্ত হওয়ার কারণে আমি এনজিও থেকে চাকুরী ছেড়ে যে টাকা গুলো পেয়েছিলাম দেনা পরিশোধ করেছি। ৫ আগস্ট বৈষ্যমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে ভিতরগত ভাবে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বশির আহমেদ বলেন, আমি কোনো রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে ,কখনো কোনো দলের সাথে আমার সম্পর্ক নাই। এখানে আরেকটি বিষয় আসছে আপনি না কি ঢাকায় কর্মস্থল থাকার কারণে বিভিন্ন আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে সম্পর্ক হয়েছে এবং আপনার বাড়ি বর্ডার সাইডে থাকার কারণে আপনি তাদেরকে ভারতে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বশির আহমেদ বলেন, এই গুলো কাল্পনিক ,আমি এলাকায়ই আসি না। আমি তো আমার ফ্যামেলী নিয়ে ঢাকায় থাকি। ঈদ ছাড়া তো এলাকায় আসার সুযোগই থাকে না। আপনার দু’জন নিকট আত্মীয়ের বক্তব্য আপনার বিরুদ্ধে বললে বশির আহমেদ বলেন, হতেই পারে ব্যক্তি স্বার্থে বলতেই পারে। আপনার এক বোনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আপনি কাউকে সম্মান দেন না। উনি বিভিন্ন মানুষকে হয়রানি করে আরও অনেক অভিযোগ দিয়েছেন। এমন প্রশ্নের জবাবে বশির আহমেদ বলেন, এই সব কাল্পনিক মিথ্যা কথা । আমি সবাইকেই সম্মান দেই। কুতুব সাহেবের বিরুদ্ধে উনার কর্মস্থলে নামে বেনামে অভিযোগ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক কর্মকর্তা বশির বলেন, “এগুলো ভুয়া, এগুলো এদের কাল্পনিক। এ বিষয়ে আমি নিজেও আমার ভাইয়ের অফিসে কমান্ডিং অফিসারকে লিখিত দিয়েছি। এসব বিষয়ে আমি কোন অভিযোগ করি নাই। আমি কেন এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দেবো। আমি তাকে ছোট থেকে মানুষ করে বড় করেছি। আমি তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করি নাই”। ইদানিং কুতুব মিয়ার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে জানতে চাইলে বশির আহমেদ বলেন, “আমি কোন সম্মেলন করি নাই। উনারাই আমার বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে। তবে ওরা কয়েকজন আসছিল আমার বক্তব্য নেয়ার জন্য। আমি আমার বক্তব্য দিয়েছি”। আপনি দুদকে সেগুনবাগিচায় কর্মরত ছিলেন প্রশাসন শাখার বিতরণ বিভাগে। তখন নাকি আপনি ফাইল গায়েবের মাস্টার হিসেবেও পরিচয় লাভ করেছেন আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে। সাবেক কৃষি মন্ত্রী উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ ,আওয়ামী লীগের নেতা প্রফেসর রফিকুর রহমান সহ বেশ কয়েকজন নেতা দুর্নীতির ফাইল গায়েব করেছেন । এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বশির আহমেদ বলেন, “এসব কাল্পনিক ফাইল সংশ্লিষ্টতা আমার কাছে নেই। আমার কাছে ফাইল ছিল না কখনো। ফাইল অনুসন্ধান করার সুযোগ আমাদের নাই। ফাইল গায়েব করার সুযোগ কারোও নেই” । ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে এলাকার বিভিন্ন মানুষকে হয়রানি করার বিষয়ে জানতে চাইলে বশির আহমেদ বলেন, “আমি এলাকার মানুষকে হয়রানি করার প্রশ্নই উঠে না। ৯৯৯ তো জাতীয় সেবা। এলাকার মানুষের সাথে আমার সুসম্পর্ক। আমি গুরুজনদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়েছি। অন্তত চারজন মানুষের সাথে সম্পর্ক রাখা উচিত,যাতে তারা কবরে লাশ নিয়ে যেতে পারে। আমি ওমরা হজ করেছি। যদি কাউকে হয়রানি করি তাহলে আমি আল্লাহ প্রদত্ত হয়রানির শিকার হব”। এবিষয়ে মো.বশির আহমেদের ছোট ভাই কুতুব এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন-” বশির ভাই আমার জীবনটাই শেষ করে দিয়েছে। আমার পরিবার তছনছ করে দিয়েছে। আমার চাকরি ক্ষেত্রে সামাজিক ক্ষেত্রে আমাকে হাসির পাত্র বানিয়েছে। আমার আত্মসম্মান কেড়ে নিয়েছে। এলাকার মায় মুরুব্বি, চেয়ারম্যান মেম্বারসহ সবাই যে শালিস করেছে সেটাই আমি মেনে নিয়েছি। আমার স্ত্রী ঢাকায় তার নিজের জায়গা বিক্রি করে আমার এলাকায় জায়গা নিয়েছে। সেই জায়গা উনি ভোগদখল করতে চায়। আমি আতঙ্কে থাকি। উনি কখন আমাকে মেরে ফেলবে, আমার পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলবে ।আমার স্ত্রী এবং আমার মেয়ের উপর আক্রমণও করেছে বেশ কয়েকবার। উনি আমার অফিসে আমার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে নামে বেনামে একাধিক অভিযোগ দিয়েছে। আমি আমার বা আমার স্ত্রীর জায়গায় কাজ করাতে গেলেই উনি বাঁধা সৃষ্টি করে। উনি ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে কিংবা প্রশাসনকে ফোন দিয়ে কাজে ব্যাঘাত ঘটায়। উনি আমার ঘর বাড়ি বিভিন্ন স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলে। উনি এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বার ও বিভিন্ন জনের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে। মিথ্যাকে সত্য বানিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে কাগজ জমা দেয়। উনি মিথ্যাকে খুব বেশি সত্য বানিয়ে বলতে পারদর্শী। উনার ক্ষমতার দাপটে এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বারসহ কেউই উনার অপকর্মের কথা খুলে বলতে সাহস পায় না। উনি আমার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যা বানোয়াট সংবাদ পরিবেশন করিয়েছে। যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ আমি জানাচ্ছি । আমি জানি গণমাধ্যম কর্মীরা সমাজের আয়না। আমি তাদের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ করবো , সত্য জেনে সত্য তথ্য ও প্রমাণাদি সহকারে আপনারা সংবাদ পরিবেশন করুন। কাউকে হেয় করার জন্য নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সংবাদ পরিবেশন করে কারো জীবনটাকে বিষিয়ে তুলবেন না , আমি আপনাদের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ করলাম ।এই বিষয়ে মো.বশির আহমেদের ছোট ভাইয়ের বউ হাফিজুন আক্তারের কাছে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন- আমার ভাসুরকে আমি খুবই সম্মান করতাম। কিন্তু তিনি একজন লোভী। উনি অমানুষের মত আচরণ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। নিজের পরিবারকে হেয় করতে পছন্দ করেন। তিনি নিজেকে সবসময় বিশাল কিছু মনে করেন। মানুষকে ছোট করতে তিনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।উনি আমার জায়গা ভোগ দখল করার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। আচ্ছা আপনারাই বলুন, স্বামীর এলাকার মানুষকে কতটুকু ভালোবাসলে ঢাকা শহরে জায়গা বিক্রি করে মফস্বলের জায়গা কেনা যায় ? উনি আমার স্বামীর কর্মক্ষেত্রে একাধিকবার অভিযোগ দিয়েছেন । উনি আমাদের বিরুদ্ধে একাধিকবার থানায় ইউনো অফিস এসি ল্যান্ড অফিসে অভিযোগ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ শাসন আমলে সাবেক কৃষি মন্ত্রী ও প্রফেসর রফিকুর রহমানের কাছের মানুষ থাকায় আমার ভাসুর যেভাবে ইচ্ছা সেভাবেই আমাদেরকে নির্যাতন করেছেন ।আজও উনি দুদকে কর্মরত থাকায় দুদকের ক্ষমতা খাটিয়ে আমাদেরকে নির্যাতন করে যাচ্ছেন। আমরা একাধিকবার এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বার সহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করেছি। কিন্তু তার কোন ন্যায্য বিচার পায়নি। উনি অবৈধ টাকার মালিক হয়েছেন। কিন্তু ওনার মন-মানসিকতার উন্নতি হয়নি। তাই আমি দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে আপনাদের মাধ্যমে অনুরোধ করব, আপনারা আমার ভাসুরের বিভিন্ন অপকর্ম অনুসন্ধান করে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিবেন। যেহেতু উনি আপনাদের দুদক শব্দের ক্ষমতা খাটিয়ে এই অপকর্ম করার সাহস পাচ্ছে। তাই আপনারা ওনার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবেন। আর এলাকার মায় মুরুব্বি সহ বিভিন্ন প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ করব। আপনারা আমাদের সুষ্ঠু বিচার করে দিন। গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে অনুরোধ করব আপনারা সত্য জেনে লিখুন। আমাদের সম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলবেন না। আপনাদেরও মা বোন আছে, আপনাদেরও পরিবার আছে। সেদিকে একটু নজর রাখবেন, সেটাই অনুরোধ করব। বশির সাহেব নাকি একাধিকবার কুতুব সাহেবের অফিসে অভিযোগ করেছেন এবং কুতুব সাহেবের স্ত্রীর যে জায়গাটা সেটি নাকি বশির সাহেব ভোগদখল করতে চাইছিলেন? এই প্রশ্নের জবাবে পুষ্প কানু বলেন, “দুই ভাই একে অপরকে কাঁদা ছোড়াছুড়ি করতেছে । একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়। এটা আমি শুনে আসতেছি। এবং তার স্ত্রী যে জায়গাটা এটা মীমাংসা করার জন্য আমরা বসতে চেয়েছিলাম, কিন্তু কুতুবের অফিসে ছুটি নেই বলে সে আসতে পারেনি । তাই আমরা বসতে পারি নি।কারণ যদি সঠিক কাগজপত্র আমরা না দেখি তাহলে কার অভিযোগটি সত্য কার অভিযোগটা মিথ্যা সেটা তো আমরা সঠিকভাবে বলতে পারতেছি না”। বশির সাহেব নাকি বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে দুদক কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে অনেক মানুষকে হয়রানি করেন ? এমন প্রশ্নের জবাবে জানতে চাইলে পুষ্প কানু বলেন, এটা আমার জানা নাই। অন্য কেউ যদি জেনে থাকে তাহলে হয়তো এই বিষয়টি সত্য হতে পারে ।আমার নজরে এগুলো পড়ে নাই ,আমাকে কেউ বলে নাই যে অমুক কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে এসব করতেছে।আওয়ামী লীগের আমলে প্রফেসর রফিকুর রহমান ও সাবেক কৃষি মন্ত্রী উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদের প্রভাব খাটিয়ে নাকি বশির আহমেদ কোটি কোটি টাকা বানিয়েছেন? এই প্রশ্নের উত্তরে পুষ্প কানু বলেন, আমি কৃষি মন্ত্রীর বিষয়ে বলতে পারবো না। তবে ,ওর এক শালিসে আমরা বসছিলাম ,শালিসে বসাকালীন সময়ে আওয়ামী লীগের রফিক সাহেবও ছিলেন । আমরা শালিস টা করে যথাযথভাবে সব মীমাংসা করে দিয়েছিলাম। এরপর এদের মধ্যে আবার কি নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হল এইটা সমাধান করার জন্য আমরা চেয়েছিলাম যে ,বসে উভয়ের কথা শুনে, তাদের ভাইদের ভেতরে যাতে সমস্যাটা না থাকে, এটা শেষ করার । কিন্তু আমরা আর বসতে পারিনি।এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোতাহির আলী কাছে বশির আহমেদ তার ভাই কুতুব আহমাদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা দুই ভাইয়ের সমস্যা, এটা পারিবারিক সমস্যা। আমরা স্থানীয় ভাবে এটা শেষ করার জন্য বসি। এখানে উপজেলার চেয়ারম্যান ছিলেন ।স্থানীয় বর্তমান চেয়ারম্যান ও সাবেক চেয়ারম্যান এবং ইউপি সদস্য উপস্থিতিতে শেষ না করতে পারলেও পরবর্তীতে আমি স্থানীয় ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) তাঁদের আত্মীয় লাগায় এর একটা সুন্দর সমাধান করে দিয়েছি। জায়গা সম্পত্তি আমি পাঠ পাঠ করে বুঝিয়ে দিয়েছি কিন্তু এখন সামান্য বিষয় নিয়ে তাঁদের মাঝে উত্তেজনা শুরু হয়। কুতুব আহমেদের কর্মস্থলে বশির আহমেদের নামে বেনামে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়। আমি যতটুকু জানি ঘটনা ততটা বড় নয়। ধারাবাহিকভাবে তাদের মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব লেগেই আছে। উভয়ই ভালো চাকরি করে, সম্মানী মানুষ তারা। তারা এত নিচে নামতেছে কেন সেটা আমার জানা নেই । উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আপনাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন এটি শেষ করে দেওয়ার জন্য। জানতে চাইলে তিনি বলেন শুধু ইউ নো সাব ই নয় সাবেক এসপি সাহেবও আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। আমি শেষ করে দিয়েছি। শুধু তাই নয় উভয়ের দপ্তর থেকে গোয়েন্দার লোক এসে আমাদেরকে জিজ্ঞেসও করেছে । আমরা বলেছি তেমন কিছু নয়।বশির সাহেব বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি দিয়ে অর্থ বাণিজ্য করেছেন এ ব্যাপারে আপনি কতটুকু অবগত হয়েছেন । জানতে চাইলে ইউপি সদস্য বলেন-এই অভিযোগ শুনেছি ,তবে আমাদের কাছে কেউ বিচার প্রার্থী হয় নাই। আরে প্রশ্ন জুলাই আগস্টের আন্দোলনের সাবেক কৃষি মন্ত্রী উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ ও প্রফেসর রফিকুর রহমানের সাথে সুসম্পর্ক থাকার কারণে সক্রিয় ভূমিকা রেখে আন্দোলন করার বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলে-রফিক সাহেব উনার বিচারে আসছিল। উনার সাথে সুসম্পর্ক আছে। স্যার বলে সম্বোধন করেন। রফিকুর রহমান ও উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ সাহেবের বিষয় জানতে চাইলে -তিনি বলেন এগুলো আমার জানা নেই ,তবে হতে পারে। জুলাই আগস্টের আন্দোলনের কথা এবং ভারতে আওয়ামী লীগ নেতাদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য বলেন, “এখন আমি সেটা বলতে পারবো না”। এ ব্যাপারে এলাকার মুরুব্বী ও আত্মীয় জমশেদ এর কাছে বশির আহমেদ ও কুতুব আহমেদ এর ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উনাদের ব্যাপারে আমরা কোন কিছুই বলবো না ভাই ।তবুও উনার কাছে কিছু জানতে চাইলে তিনি বলেন, উনারা দুজনেই আমার চাচা ।আমার বাড়ির পাশেই উনাদের বাড়ি। উনারা আমার আব্বুর চাচাতো ভাই। এর আগেও কয়েকজন সাংবাদিক আমার সাথে কথা বলতে চেয়েছিলেন ,কিন্তু আমি বলি নাই । কুতুব সাহেব এবং কুতুব সাহেবের বউয়ের জায়গা ভোগ দখল, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে দুদকের বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে নিয়োগ বাণিজ্য ,উনার সাথে কৃষিমন্ত্রী ও প্রফেসর রফিকুর রহমানের সাথে ভালো সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন যে ,সম্পর্ক ছিল। ভালো সম্পর্ক ছিল আমার চাচার ।দুজনের সাথে এখনো সম্পর্ক আছে বলে জানান জমশেদ । বৈষম্য ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন ,এ বিষয়ে তিনি জানেন না। উনি ঢাকা কর্মরত থাকা সময়ে ৯৯৯ এ কল দিয়ে এলাকার বিভিন্ন মানুষকে ও কুতুব সাহেবকে হয়রানির বিষয়ে জানতে চাইলে জমশেদ বলেন, এটা হয়েছে, এটা ঠিক আছে। উনি জানিয়েছেন ,আমি ছিলাম ,আমি দেখেছি। অনেকবার পুলিশ আনিয়েছে। ভারতে আওয়ামী লীগ নেতাদের পালিয়ে যেতে বশির সাহেবের ভূমিকার বিষয়ে জানতে চাইলে জমশেদ বলেন, “হতে পারে, এগুলো আসলে আমি জানিনা”। বশির সাহেব এবং কুতুব সাহেবের বিষয়টি মীমাংসা করেন না কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন ,আমরা অনেকবার চেষ্টা করেছি, অনেকবার বিচার হয়েছে। বশির উনি আমার বড় চাচা। উনি কারো বিচার মানে না এজন্য কেউ বিচারে আসে না।এ ব্যাপারে তাদের আত্মীয় এবং এলাকার মুরব্বি জনাব আমির আলী নবই এর কাছে বশির আহমেদের বিভিন্ন বিষয় জানতে চাইলে নবই বলেন, “ওরা আমার মামাতো ভাই লাগে, আমি ওদের বড় ভাই। তাদের বাপ মারা যাওয়ার পরে আমি তাদের অভিভাবক। তাদের জায়গা সম্পত্তি নিয়ে যতটুকু না দ্বন্দ্ব তার চেয়ে বেশি দ্বন্দ্ব হিংসা নিন্দা নিয়ে। সবচেয়ে বেশি দোষ হল বশিরের। ও একটা বেয়াদব। ও একবার বিচারে বসে কুতুব এর বন্ধুকে চেয়ার দিয়ে পিটিয়েছে। এরপর কয়েকবার আমরা চাইছি এটার মীমাংসা করতে। ওর অহংকারের শেষ নাই ,ও দুদকে চাকরি করে ।কুতুব ভদ্র এবং শান্ত ।তার সততাও আছে। দুদকের ফাইল গায়েবের বিষয়ে এবং উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ ও রফিক সাহেবের বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওদের সাথে বশিরের খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। আওয়ামী লীগের আমলে এদের দিয়ে বশির যথেষ্ট ক্ষমতা দেখিয়েছে, দাপট খাটিয়েছে । আমরা ভাই হলে কি হবে আমি সত্য কথা বলতেছি ।” জুলাই আগস্টের আন্দোলনের বশির আহমেদের সংশ্লিষ্টতা বিষয়ে জানতে চাইলে নবই বলেন, “আমার বয়স সত্তরের উপরে ,আমি মিথ্যা বলি না। এই বিষয়ে আমার জানা নাই, ধারণা নাই “।আওয়ামী লীগ নেতাদের ভারতে পালিয়ে যেতে বশির আহমেদের সহযোগিতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,” বশির কখন চাকরি করে সেটা তো জানিনা ।তাকে তো সবসময় বাড়িতেই দেখি। মোটরসাইকেল নিয়ে ঘোরাফেরা করে ।এই শুনি সিলেটে, ওই শুনি ঢাকাতে। আসলে এটা শুনিও নাই, দেখিও নাই ,হতে পারে হয়তোবা “।একাধিক দুর্নীতিবাজদের দুদক থেকে ফাইল গায়েবের বিষয়ে জানতে চাইলে নবই বলেন, “আমরা এটাই জানি উনার দুদকে বিশাল পাওয়ার, বিশাল দাপট ।শুধু উনার ভাই না এলাকার সবাইকেই দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করে। ওনার বিশাল প্রভাব ।উনি জেলায় বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি ঘর বানাইতেছে ।তবে মানুষ বলেছে আমরা চোখে দেখি নাই ।তবে হতে পারে ফাইল গায়েবের বিষয়টি। ওর অনেক টাকা ,এত টাকা পেল কোথায়”।৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে পুলিশ এলাকার মানুষকে বিভিন্নভাবে হয়রানির বিষয়টি জানতে চাইলে নবই বলেন ,”হ্যাঁ ,হ্যাঁ সে বলে আমি দুদকের অমুক বলছি, আমি তমুক বলছি বলে মানুষকে হয়রানি করে”।তার ক্ষমতার দাপটে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে থাকে । বশির আহমেদের নির্যাতনে শিকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, আমাদের না জিজ্ঞেস করলেও হবে কারণ বশির আহমেদ মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে পুলিশ পাঠানোর বিষয়ে ভালোই জানে ৯৯৯ নাম্বার। সে যেখানেই থাকুক না কেন তার কথা না শুনলে, তার অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে সে পুলিশ পাঠিয়ে হয়রানি করে।এলাকার নিরীহ মানুষরা এবং পরিবারের আত্মীয়-স্বজনরা বশির আহমেদের হাত থেকে মুক্তি পেতে আইনশৃঙ্খলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সচেতন মহলের এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
সিলেট বিভাগের কমলগঞ্জ উপজেলার মূর্তিমান আতঙ্ক দুদকের উপ সহকারী পরিদর্শক মো.বশির আহমেদের দুর্নীতির শেষ নেই
0
Share.